৭০বছরের পুরানো সেই বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করলে বহু সম্পদের মালিক হবে সরকার

MOHESHKHALI-8-8-16 (2) copy

মহেশখালী প্রতিনিধি:

ব্রিটিশ আমলে প্রতিষ্টিত কক্সবাজার জেলার প্রাচীনতম ৭০ বছরের পুরানো মহেশখালী হাইস্কুলটি জাতীয়করণ করা হলে বহু সম্পদের মালিক হবেন সরকার। ১৯৪৬ সালে  চট্টগ্রামের আনোয়ারা থানার পূর্বকোড়া গ্রামের জাতে বৈদ্য দীনেশ চন্দ্র রায়ের পুত্র  তৎকালিন জমিদার শ্রী অজিত কুমার রায় বাহাদুর এর দানকৃত ৩৬ একর  জমি নিয়ে মহেশখালী হাইস্কুলটি প্রতিষ্টিত হয়। যে বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে প্রায় আড়াই হাজার এরও অধিক ছাত্রছাত্রী লেখাপড়া  করছেন। ১৫জন এমপিও ভূক্ত ও ৯ জন নন-এমপিও ভুক্ত  শিক্ষক ও ৮ জন কর্মচারী সহ মোট ২৮ জন শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী নিরবিছিন্ন ভাবে ছাত্রছাত্রীদের লেখাপাড়ার কাজে সহযোগিতা করে যাচ্ছে।

১৯৪৭ সালের ১৪ জুলাই কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ এই প্রাচীন স্কুলটিকে  মাধ্যমিক বিদ্যালয় হিসাবে স্বীকৃতি দেয়। সেই থেকে বিদ্যালয়ের বহু ছাত্রছাত্রী উচ্চ শিক্ষা গ্রহন করে বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োজিত রয়েছেন।

বিদ্যালয়টি ১৯৪৮ সালে ৩৩ জন ছাত্র নিয়ে মেন্ট্রোকুলেশন  এসএসসিতে অংশ গ্রহন করে যা বর্তমানে এসএসসিতে ৩৮০ জনে এসে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে অত্র বিদ্যালয় থেকে প্রতি বছর ২৭৬ জন ছাত্র, ৩১৮ জন ছাত্রী শিক্ষা উপবৃত্তি এবং ৯০ জন মেধা বৃত্তি ও ৫ জন প্রতিবন্ধী শিক্ষা ভাতা পেয়ে যাচেছ। বর্তমানে এই প্রাচিন বিদ্যালয়টির অধিনে বহু টাকার সম্পদ রয়েছে তার মধ্যে ৮টি দোকান ঘর আছে। ছোট মহেশখালী মৌজায় ২৬ একর ৬৫ শতক নাল জমি,  বড় মহেশখালী মৌজায় ৫ একর ১৪ শতক ও পুটিবিলা মৌজায় ৫.১২ শতক জমি রয়েছে। যা চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় ৯০ কানি জমি সম্পতির মালিক স্কুলটি।

বিদ্যালয়টি র্বতমানে সরকারী করণ করা হলে বহু টাকার মালিক হবে সরকার।  বিদ্যালয়ে ১টি অডিটিরিয়াম, পাকা দালাল ৩টি,  সেমিপাকা ২টি, প্রধান শিক্ষকের বাস ভবন  ১টি,  ছাত্রবাস ১টি, মসজিদ ১টি, পুকুর ১টি, খেলার মাঠ ১টি ও বিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যান্টিন রয়েছে একটি।

প্রতিষ্টানের হিসাব অনুযায়ী ২০১৫ অত্র বছরে ৯৫ লক্ষ ১৮ হাজার ৯৮৮ টাকা আয় হলেও ব্যায় হয়েছে ৯৪লক্ষ ৭৪ হাজার ৯৮৮ টাকা । স্কুলের নামে রক্ষিত তহবীলে পূর্বের ৩ লক্ষ টাকা থেকে বর্ধিত হয়ে বর্তমানে ৫ লক্ষ টাকা স্থীত রয়েছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহ আলম জানান, হাজারো ছাত্রছাত্রীদের পদচারনায় মুখরিত স্কুলটিতে প্রতি মাসে ২ লক্ষ ২৫ হাজার টাকারও অধিক ব্যায় বহণ করতে হয়। বিদ্যালয়টি সরকারী করণ করা হলে এতদাঞ্চলের ছেলে মেয়েদের পড়ালেখার মান বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডে আমাদের স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা অগ্রনী ভুমিকা পালন করবে ।

জানা গেছে, মহেশখালী দ্বীপ নিয়ে বর্তমান সরকারের মহা উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে যেভাবে প্রকল্প গড়ে তোলা হচ্ছে  তাতে সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কৃষি, চিংড়ি প্রজেক্ট, লবণমাঠ, পানের বরজ, বসতবাড়ী কোন দাবী ছাড়াই হস্তান্তর করছে। সেই ক্ষেত্রে অত্র উপজেলার  এই ৭০ বছরের পূরানো বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা এখন সময়ের দাবী হয়ে উঠেছে।

মহেশখালী উপজেলার শিক্ষার হার বর্তমানে বহুগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। সেক্ষেত্রে উপজেলায় একটি বালিকা বিদ্যালয় সরকারী ছাড়া আর কোন মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান  সরকারী করন করা হয়নি। সরকার শিক্ষা খাতে অধিক বরাদ্ধ দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কাজে অনেক দুর এগিয়ে গেছে। মহেশখালীর এই পুরানো স্কুলটিকে সরকারী করন করা হলে দ্বীপের শিক্ষার মান আরো বেড়ে যাবে বলে সাধারন মানুষের বিশ্বাস।

উপজেলার জনবসতির প্রায়ই জেলে , লবণ মাঠের শ্রমিক, পানের বরজের ও চিংড়ি চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে। যে পরিমান জমি সরকার উন্নয়ন খাতে অধিগ্রহণ করছে তার বদৌলতে হলেও মহেশখালীর এই প্রাচীন স্কুলটি জাতীয়করন করা প্রয়োজন বলে মনে করেন এলাকার শিক্ষানুরাগীরা।

মহেশখালী আর্দশ উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি সাবেক মেয়র সরওয়ার আজম বিএ বলেন, মহেশখালীর অধিকাংশ গরীব অসহায় ও  মেধাবি ছাত্র ছাত্রী এই বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে নিজেদের অবস্থান তৈরী করেছে। এই দ্বীপের মানুষের জনদাবী মহেশখালী আর্দশ উচ্চ বিদ্যালয়কে সরকারী করণ করে শিক্ষা খাতে সরকারের সাফল্যর আরেকটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে সরকার।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন