২৯ এপ্রিল পার্বত্য বাঙ্গালী গণহত্যা দিবসের জাতীয় স্বীকৃতির দাবিতে ঢাকায় র‌্যালি ও সমাবেশ

IMAG7850

প্রেস বিজ্ঞপ্তি : ২৯ এপ্রিল ২০১৭ শনিবার। পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতীয় সন্ত্রাসী দ্বারা বিভিন্ন সময় সংগঠিত প্রায় ৪০ হাজার নিরীহ বাঙ্গালী হত্যাকে “২৯শে এপ্রিল পার্বত্য বাঙ্গালী গণহত্যা দিবসে হিসেবে স্বীকৃতি’র” দাবিতে ঢাকায় শোক র‌্যালি ও সমাবেশ করেছে পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ ঢাকা মহানগর শাখা।

শনিবার সকাল ১০ ঘটিকায় ঢাকা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সম্মুখে সংগঠনটির উদ্যোগে ও ঢাকা মহানগর সভাপতি মো. শাহাদাৎ ফরাজি সাকিব এর সভাপতিত্বে ঘন্টাব্যাপী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এসময় ছাত্র-সহ বিভিন্ন শ্রেনীপেশার মানুষ কালো ব্যাচ পরিধান পূর্বক সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন।

সমাবেশে প্রধান অথিতির বক্তব্য রাখেন, পার্বত্যনাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আলকাছ আল মামুন ভূঁইয়া। বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য নাগরিক পরিষদের সহ-সভাপতি ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ,ন্যাপ ভাসানী এর সভাপতি খন্দকার মোস্তাক হোসেন ভাসানী, পার্বত্য নাগরিক পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদের উপদেষ্টা মণ্ডলীর অন্যতম সদস্য,শেখ আহাম্মদ (রাজু)। পিবিসিপি’র সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ইব্রাহিম মনির, সেক্রেটারি সারোয়ার জাহান খান। পার্বত্য নাগরিক পরিষদের নেতা সিরাজ ও এনামুল হক কাদের প্রমুখ।
IMAG7897
প্রধান অথিতি বলেন,১৯৮৬ সালের ২৯শে এপ্রিল দিবাগত রাত আনুমানিক ৯টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত ৪ ঘন্টা সময়ে খাগড়াছড়ি‘র পানছড়ি উপজেলা‘র ১নং লোগাং ইউপি, ৩নং পানছড়ি সদর ইউপি‘র ও ৪নং লতিবান ইউপি (বর্তমানে ৫নং উল্টাছড়ি ইউপি)‘র বাঙ্গালি গ্রামে অগ্নি সংযোগসহ নির্বিচারে বাঙ্গালী শিশু, কিশোর, নারী, পুরুষ, আবাল, বৃদ্ধ, বনিতা যাকে যেখানে পেয়েছে তাকে সেখানেই হত্যা করেছে তৎকালীন শান্তিবাহিনী সশস্ত্র গ্রুপ  বর্তমানে  পার্বত্য চট্রগ্রাম জন সংহতি সমিতি (জেএসএস)‘র নামে পরিচিত ।

তৎ সময়ে বে-সরকারী হিসাবে মাত্র ৪ ঘন্টা সময়ে নিরস্ত্র ও নিরীহ ৮শত ৫৩ জন বাঙ্গালীকে হত্যা করা হয়েছে, আহত করা হয়েছে প্রায় ৫শত জনকে, অপহরণ ও গুম করা হয়েছে আরো কয়েক হাজার বাঙ্গালীকে। ৬ হাজার ২শত ৪০টি বাড়ি সম্পূর্ন ভাবে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এতে গৃহহীন হয়ে পড়ে হাজার হাজার পরিবার।

শান্তি বাহিনী‘র গেরিলা যোদ্ধারা সাধারণ বাঙ্গালীদের হাত-পা বেঁধে গুলী করে, লাঠি দিয়ে পিটিয়ে, দা দিয়ে নির্মমভাবে কুপিয়ে, জবাই করে, আগুনে পুড়িয়ে, শিশুদেরকে পায়ে ধরে গাছের সাথে বাড়ি দিয়ে, বেনেট ও অন্যান্য দেশি অস্ত্র দিয়ে খোঁচিয়ে খোঁচিয়ে হত্যা করেছিল।

প্রতিটি লাশকেই বিকৃত করে সে দিন চরম অমানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল শান্তি বাহিনীর সন্ত্রাসীরা। ঘটনাটি যারা স্ব-চুখে দেখাছে বা বেচে যাওয়া কিছু কিছু সাক্ষী আজো আছে, কিন্তু ঘটনার কথা মনে পড়লে আজও তারা শিউরে উঠে।

এই হত্যা কান্ডের মধ্যে দিয়ে নরকীয়তা সৃষ্টি করেছিলো ৩৮ হাজার বাঙ্গালীর হত্যাকারী সশস্ত্র সংগঠন শান্তি বাহিনীর গেরিলারা ও উপজাতি সন্ত্রাসী হায়নারা।তিনি এসব খুনি সশস্ত্র সংগঠন শান্তি বাহিনীর গেরিলারা ও উপজাতি সন্ত্রাসী’র তদন্ত কমিটি গঠন পূর্বক দ্রুত ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচারের দাবী জোড় দাবী জানান।

পানছড়িত গণহত্যা ছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রামের ভিবিন্ন অঞ্চলে উপজাতি এসব সন্ত্রাসীদের দ্বারা ভিবিন্ন গণহত্যা সংঘটিত হয়।এসব গণহত্যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু গণহত্যা যেমনঃ লংগদু গণহত্যা, ১৯৭৯ কাউখালি গণহত্যা,বেতছড়ি গণহত্যা,বানরাইবারী, বেলতলী, বেলছড়ি গণহত্যা,তাইন্দং, আচালং, গৌরাঙ্গ পাড়া, দেওয়ান বাজার, তবলছড়ি, বর্ণাল, রামছিরা, গোমতি গণহত্যা, গোলকপতিমা ছড়া, মাইচ্যেছড়া, তারাবনছড়ি গণহত্যা,ভূষণছড়া গণহত্যা, পানছড়ি গণহত্যা, দিঘীনালা গণহত্যা, ২৯ এপ্রিল ১৯৮৬, মাটিরাংগা গণহত্যা, কুমিল্লাটিলা, শুকনাছড়ি, দেওয়ান বাজার, সিংহপাড়া, তাইন্দং গণহত্যা, দিঘীনালা গণহত্যা, ২ জুলাই ১৯৮৬, ভাইবোন ছাড়া গণহত্যা, হিরাচর, শ্রাবটতলী, খাগড়াছড়ি, পাবলাখালী গনহত্যা, লংগদু গনহত্যা ১৯৮৯, নাইক্ষ্যাছড়ি গণহত্যা, মাল্যে গনহত্যা, লোগাং গনহত্যা, নানিয়ারচর গনহত্যা,পাকুয়াখালী গণহত্যা,জুরাইছড়ি গণহত্যা ইত্যাদি।

অন্যান্য বক্তারা বলেন, যেহেতু গণহত্যা হলো একটি জাতি, একটি জাতি গোষ্ঠী বা একটি সম্প্রদায়কে নির্মূল করণ প্রক্রিয়া ৷সেহেতু উপজাতি এসব সন্ত্রাসী বাঙ্গালী নির্মূল করার লক্ষে এসব সাধারণ বাঙ্গালী জাঁতির মানুষদের হত্যা করেছে৷

সেক্ষেত্রে এটি প্রমাণিত যে, পাহাড়ে ৪০ হাজার নিরীহ বাঙ্গালী হত্যাকে “পার্বত্য বাঙ্গালী গণহত্যা দিবস”র জাতীয় স্বীকৃতির মর্যাদা রাখে।

উল্লেখ্য, এদিকে ৭৫-৯৭ সাল পর্যন্ত তিন পার্বত্য অঞ্চলকে বাংলাদেশ আলাদা করতে জেএসএস এবং ইউপিডিএফ’র জঙ্গি বাহিনী তথা শান্তি বাহিনি নির্মম ভাবে খুন করে ২৫৬ জন বীর সেনা এবং ৩৮ হাজারের অধিক নিরীহ বাঙালিকে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন