হালদার উজানে অবাধে তামাক চাষ, মৎস্য প্রজননে পরিবেশ বিপর্যয়

28(5) copy

মানিকছড়ি প্রতিনিধি:

দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম সুপেয় পানির উৎস চট্টগ্রামের হালদা নদী। আর এ নদীর উৎপত্তিস্থল পার্বত্য খাগড়াছড়ির রামগড় ও মানিকছড়ির উপ-নদী ডলু খাল ও সালদা খাল। সম্প্রতি কালে এ নদীর উজানে অবাধে চলছে তামাক চাষ।

ফলে তামাকের বিষাক্ত পানি হালদা খালে  মিশে ধ্বংস হচ্ছে মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্রের পরিবেশ। ফলে মঙ্গলবার সরজমিনে তামাক চাষ প্রত্যক্ষ করলেন জাতীয় নদী কমিশনের চেয়ারম্যান (অবসর প্রাপ্ত সচিব) মো. আতাহারুল ইসলাম, সার্বক্ষণিক সদস্য মো. আলাউদ্দীন (অতিরিক্ত সচিব) ও হাদলা নদী গবেষক মো. মঞ্জুরুল কিবরিয়া।

জাতীয় নদী কমিশনের চেয়ারম্যান ও তার সফর সঙ্গীরা মঙ্গলবার সকালে সাড়ে ১০টায় হালদার উজানে তামাক চাষের বাস্তব চিত্র প্রত্যক্ষ করতে মানিকছড়ি আসেন। তারা প্রথমে উপজেলা নির্বাহী অফিসে আসলে ইউএনও বিনিতা রানী তাদের স্বাগত জানান। পরে তারা হালদার উজানে তামাকের ছোবল দেখতে যান মানিকছড়ির গোরখানা ও তুলাবিল এলাকায়। যেখানে রয়েছে হালদা নদীর শাখা নদী ডলু খাল ও সালদা খালের মিলন স্থল।

সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, নদীর দু’পাড়ে সমতল ভূমিতে তামাক আর তামাক। সাথে রয়েছে অবাধে বালু উত্তোলন প্রক্রিয়া। তামাক চাষে একদিকে হালদা পানি দূষিত হচ্ছে এতে মাছের প্রজননে বিপর্যয় ঘটছে। অন্যদিকে অবাধে বালু উত্তোলনের কারণে উজানে নদীর গভীরতা বাড়ছে। যার ফলে নদীতে স্রোতের গতি দ্রুত কমে যাচ্ছে।

পরে জাতীয় নদী কমিশনের চেয়ারম্যান ও তার সফর সঙ্গী জাতীয় নদী কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য মো. আলাউদ্দীন (অতিরিক্ত সচিব) ও হাদলা নদী গবেষক মো. মঞ্জুরুল কিবরিয়া, ইউএন বিনিতা রানী, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম, ইউপি চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইসলাম মোহন, স্থানীয় তামাক চাষিদের সাথে মতবিনিময় করেন।

স্থানীয় মাদ্রাসায় মতবিনিময়কালে তামাক চাষীরা বলেন, এ অঞ্চলে তামাক ছাড়া বিকল্প সবজি চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে না। ন্যায় বাজারমূল্য থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছে। পেটের দায়ে অনেকটা বাধ্য হয়ে তামাকের ক্ষতিকর দিক জেনেও তারা চাষ করতে বাধ্য হচ্ছে।

এ তামাক চাষের ফলে এলাকা ও হালদার পরিবেশ দূষিত হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে কৃষকরা বলছেন, বিকল্প ফসল চাষ ও তা বাজারজাতকরণে নিশ্চয়তা এবং ন্যায্যমূল্য পেলে তারা তামাক চাষ করবে না। পরে জাতীয় নদী কমিশনের সদস্যবৃন্দ ফটিকছড়ির ভূজপুরস্থ রাবার ড্যাম্প পরিদর্শণে যান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন