হতদরিদ্রের চাল স্বচ্ছলদের পাতিলে: প্রসঙ্গ কক্সবাজার সদর উপজেলা
নিজস্ব প্রতিবেদক:
কক্সবাজার সদর উপজেলার ভারুয়াখালী ইউনিয়ন। সারা দেশের ন্যায় এখানেও চলছে হতদরিদ্রের জন্য ১০ টাকা কেজি চাল বিতরণ। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি যে, হতদরিদ্রের এসব চাল যাচ্ছে স্বচ্ছলদের রান্না ঘরে। এনিয়ে হতদরিদ্র মানুষদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্থানীয়দের অভিযোগে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সারাদেশের ন্যায় কক্সবাজারেও চলছে হতদরিদ্রের জন্য ১০ টাকা কেজির চাল। এক্ষেত্রে কক্সবাজার সদর উপজেলার ভারুয়াখালী ইউনিয়নে চিত্র ভিন্ন। এখানে হতদরিদ্রের অধিকাংশ চাল যাচ্ছে ‘স্বচ্ছল’ ব্যক্তিদের ঘরে। প্রকৃতভাবে যারা এটির যোগ্য অর্থাৎ হতদরিদ্র বঞ্চিত হচ্ছেন ‘সরকারী’ এ সুযোগ থেকে।
হতদরিদ্রের চাল নেয়া স্বচ্ছল ব্যক্তিদের তালিকায় রয়েছেন সাবেক চেয়ারম্যান আবু শামার পুত্র নুরুল হুদার স্ত্রী রাইস মিলের মালিক আলতাজ বেগম, সাবেক সভাপতি ও মাষ্টার মোজাফফর আহমদ, কোটিপতি হামিদুল হক, চা দোকানদার শাহ আলম, মুদি দোকানদার জাফর আলম, চা দোকানদারের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম, মুদি দোকানদার হুমায়ুন কবির, ঔষধের দোকানদার সাহেদ উদ্দিন, স্থানীয় মেম্বারের মামা ছৈয়দুর রহমান, স্বচ্ছল ব্যক্তি ওসমান গণি ও টেইলার্সের মালিক ছৈয়দ হোসাইন সহ আরও অনেকে। চাল প্রাপ্তির তালিকায় সকালের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর সহ রয়েছে।
চাল গ্রহণকারী আলতাজ বেগম বলেন, আমার স্বামী মারা গেছেন ৯ বছর আগে। রাইচ মিলটিও ভাঙ্গা। কোন আয় নেই। সন্তানদের নিয়ে অনেক কষ্টে জীবন চালাচ্ছি। তাই চাল নিয়েছি।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, স্থানীয় ইউপি সদস্যরা স্বজন প্রীতি ও অবৈধ লেনদের মাধ্যমে স্বচ্ছল ব্যক্তিদের চাল প্রাপ্তির তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করেছেন। এনিয়ে কয়েকজন ইউপি মেম্বারের সাথে চেয়ারম্যানের বাকবিতণ্ডাও হয়েছে। বিশেষ করে ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার মুসলিম উদ্দিন প্রভাব খাটিয়ে বহু স্বচ্ছল ব্যক্তিদের তালিকাভূক্ত করেছেন। যা সম্পূর্ণ বেআইনি।
এ ব্যাপারে ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার মুসলিম উদ্দিন জানিয়েছেন, আমি ইচ্ছে করে কোন স্বচ্ছল ব্যক্তিকে তালিকাভুক্ত করিনি। তারপরও দুয়েকজন হয়ে গেছে। চেয়ারম্যান সাহেব চিঠি দিয়েছেন, আমি তাদের বাদ দিয়ে দিব। তবে প্রভাব খাটানোর অভিযোগটি মিথ্যে, অবান্তর বলে দাবী করেন তিনি।
বিষয়টি নিয়ে ভারুয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান সিকদার জানিয়েছেন, প্রাথমিক পর্যায়ে তাড়াহুড়ার মধ্যে তালিকায় কিছু স্বচ্ছল মানুষ ঢুকে পড়েছে। আমরা এটি সংশোধন করার জন্য ইউপি সদস্যদের বলেছি। সোমবার লিখিতভাবে চিঠি ইস্যু করা হয়েছে। দুয়েকদিনের মধ্যে তা সংশোধন করা হবে।