স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা জোরদার

 

উখিয়া প্রতিনিধি:

মিয়ানমার হতে প্রাণের ভয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বাস্তচ্যুত রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে সরকার মেগা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের মাঝে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও স্যানেটিশন ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে এমন তথ্য জানিয়েছেন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সোহারাব হোসেন।

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অত্যচার, নির্যাতন, বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও রাখাইন প্রদেশে জাতিগত হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়ে গত ২৫ আগস্ট থেকে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে। উখিয়ার কুতুপালং, বালুখালী, থাইংখালী, হাকিম পাড়া, তাজুনিমার খোলা, পালংখালী সহ ৭টি অস্থায়ী ক্যাম্পে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা আশ্রয় নেয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিপন্ন রোহিঙ্গাদের সাহায্য সহযোগিতা সহ তাদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানালে বিশ্ব সম্প্রদায় সহ দেশি-বিদেশি এগিয়ে আসে।

বিশেষ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বাস্তচ্যুত রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে বিশেষ প্রদক্ষেপ গ্রহণ করে। প্রথম পর্যায়ে ডায়রিয়া কলেরা রোগ সহ পানিবাহিত রোগ প্রতিরোধে বাস্তচ্যুত রোহিঙ্গাদের মাঝে জরুরী পানি সরবরাহ ব্যবস্থা শুরু করেন। ১৪টি মোবাইল ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের মাধ্যমে পানি সরবরাহ, ৭টি ভ্রাম্যমান ওয়াটার ক্যারিয়ারের মাধ্যমে উখিয়া সহ টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা নিরাপদ খাবার পানি নিশ্চিত করে।

ক্যাম্পে দায়িত্বপ্রাপ্ত বান্দরবান ও খাগড়াছড়ির জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সোহরাব হোসেন জানান, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে জরুরী ভিত্তিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৫ হাজার স্যানিটারি ল্যান্ট্রিন ও ৩ হাজার নলকূপ স্থাপনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও ইতিমধ্যে ১৩টি ক্যাম্পে ২ হাজার ৬৮০টি স্যানেটারি ল্যান্ট্রিন ও ১ হাজার ৯২৯টি নলকূপ স্থাপন সম্পন্ন করা হয়েছে।

এদিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে ও পানিবাহিত রোগ প্রতিরোধে চলমান স্যানেটিশন কার্যক্রম পরিদর্শ করার জন্য ইতি মধ্যে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খোন্দকার মোশারফ হোসেন, মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুল মালেক, জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সুধিল কুমার ঘোষসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে আসেন।

উখিয়া জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী মো. ইকবাল হোসাইন বলেন, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট ও ভ্রাম্যমান ওয়াটার ক্যারিয়ারের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করে বাস্তচ্যুত রোহিঙ্গাদের পানিবাহিত রোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়েছি। এছাড়াও পরিস্থিতি মোকাবেলায় ৬ লক্ষ ওয়াটার ফিউরিন ট্যাবলেট ও ৪৫ ড্রাম ব্লিচিং পাউটার সরবরাহ করা হয়েছে। বর্তমানে কেন্দ্রীয় ভাণ্ডারে ১৬ লক্ষ ওয়াটার ফিউরিন ট্যাবলেট মজুদ রয়েছে।

কক্সবাজার জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মোসলেম উদ্দিন জানান, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ১২০জনের একটি টিম রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্যানেটারিন ল্যান্ট্রিন ও নলকূপ স্থাপনে দায়িত্বপালন করে যাচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন