সু চির নোবেল পুরস্কার বাতিলের আবেদন খারিজ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির শান্তিতে পাওয়া নোবেল পুরস্কার ফিরিয়ে নেয়ার আবেদনটি প্রত্যাখ্যান করেছে নোবেল কমিটি।

রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর চলমান সহিংসতায় সু চির নির্লিপ্ততা এবং তার সরকারের রোহিঙ্গা বিদ্বেষের প্রেক্ষিতে এই অনলাইন পিটিশনে সই করেছেন প্রায় ৩ লাখ ৭৮ হাজার মানুষ।

শুক্রবার সকাল পৌনে ৯টা পর্যন্ত চেঞ্জ ডট ওআরজি নামে একটি ওয়েবসাইটে এসব মানুষ সই করেছেন।

এ পিটিশনে স্বাক্ষরকারীদের দাবি ছিল, ১৯৯১ সালে অং সান সু চি শান্তিতে যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তা নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান ‘জব্দ’করবেন অথবা ‘ফেরত নেবেন’।

এদিকে, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এই পিটিশন, বিশেষ করে টুইটারে। এছাড়া ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপেও অনেকেই শেয়ার করছেন পিটিশনে সইয়ের লিংক।

পিটিশনে নোবেল শান্তি পুরস্কার কমিটির চেয়ারম্যানের কাছে সু চির নোবেল জব্দ বা ফেরত নেয়ার দাবির পাশাপাশি পুরস্কার বাবদ প্রাপ্ত ৬০ লাখ সুইডিশ ক্রোনাও ফেরত নেয়ার দাবি উঠেছিল। কিন্তু খারিজ করে দিলো নোবেল কমিটি।

এর আগে গেলো ৫ সেপ্টেম্বর সু চির নোবেল পুরস্কার কেড়ে নেয়া হবে কিনা কিংবা তা সম্ভব কিনা এসব নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল মার্কিন গণমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস।

গেলো ২৫ আগস্ট রাখাইনে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার পর দেড় লাখেরও বেশি মুসলিম রোহিঙ্গা এবং কিছু সংখ্যক হিন্দু বাংলাদেশে পালিয়ে আসার ঘটনায় আন্তর্জাতিক চাপের মুখে রয়েছে মিয়ানমার।

যে নোবেল কমিটি এই শান্তি পুরস্কার দেয় তার প্রধান বেরিট রেইস এন্ডারসন বলেছেন, ১৯৯১ সালে দেয়া এই পুরস্কার ফিরিয়ে নেয়া সম্ভব নয়। তিনি বলেন, এই পুরস্কার নরওয়ে দেয়নি। পুরস্কার দিয়েছে নোবেল কমিটি।

তিনি আরও বলেন, কাউকে যখন এই পুরস্কার দেয়া হয়, তাঁকে আগের কাজের মূল্যায়নের ভিত্তিতেই দেয়া হয়।

“১৯৯১ সালে আং সান সূ চি-কে এই পুরস্কার দেয়া হয়েছিল মিয়ানমারে স্বাধীনতার জন্য সামরিক একনায়কত্বের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করার কারণে। কিন্তু একজন নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার পর কি করছেন, তা দেখা আমাদের এখতিয়ারে পড়ে না, একটা আমাদের কাজও নয়।”

তিনি আরও বলেন, “যখন কাউকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়, তখন এক বছর ধরে আমরা অনেক প্রার্থীকে জানার, বোঝার, বিশ্লেষণের চেষ্টা করি।

এখন যারা পুরস্কার পেয়ে গেছেন, তাদেরকে একই রকমভাবে পর্যবেক্ষণ এবং বিশ্লেষণ করা কতটা কঠিন সেটা নিশ্চয়ই আপনার বুঝতে পারেন। সেটা আমাদের এখতিয়ার এবং ক্ষমতার বাইরে।”

তিনি বলেন, নোবেল পুরস্কার দেয়ার সময় একটা নীতিই তারা মেনে চলেন। এবং সেটি হচ্ছে এই পুরস্কারের প্রবর্তক আলফ্রেড নোবেল যে শর্তাবলী বেঁধে দিয়ে গিয়েছিলেন।

আং সান সূ চি-র সমালোচনায় যারা মুখর হয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন অনেক নোবেল পুরস্কার বিজয়ী।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন