Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

সুস্থ হয়ে ফিরেছে পরি বিক্রম ত্রিপুরা: চোখে-মুখে হাসির ঝিলিক

30.04.2017_Manobik NEWS -Pori Bikram.Pic-02

নিজস্ব প্রদিবেদক, মাটিরাঙ্গা:

মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিএম মশিউর রহমানের আন্তরিকতাপুর্ণ দায়িত্ব গ্রহণের পর সুস্থ জীবনে ফিরে এসেছে মাটিরাঙ্গা উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি জনপদ দলদলি মৌজার হরিপুর্ণ কার্বারী পাড়ার অভিনাথ ত্রিপুরা ও দ্বীনমালা ত্রিপুরা দম্পতির দ্বিতীয় ছেলে পরি বিক্রম ত্রিপুরা। অর্থভাবে যার চিকিৎসা হওয়া নিয়ে অভিভাবক থেকে শুরু করে স্থানীয়দের অনেক সংশয় ছিল তাদের সব সংশয়কে মিথ্যা প্রমান করে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছে সেই ছোট্ট ছেলে পরিবিক্রম ত্রিপুরা।

‘দুই লাখ টাকা বাঁচিয়ে তুলতে পারে পরি বিক্রম ত্রিপুরাকে’ শিরোনামে পার্বত্যনিউজে সংবাদ প্রকাশের পর মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিএম মশিউর রহমান এ প্রতিবেদককে ডেকে নিয়ে তার বিষয়ে খোঁজ-খবর নেন। এক পর্যায়ে ১৪ মার্চ এ প্রতিবেদক, মাটিরাঙ্গা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিরনজয় ত্রিপুরা ও মাটিরাঙ্গা পৌরসভার প্যানেল মেয়র মো. আলাউদ্দিন লিটনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে হৃদরোগে আক্রান্ত মাটিরাঙ্গার দুর্গম পাহাড়ী জনপদের দিনমজুর পিতা-মাতার সন্তান পরি বিক্রম ত্রিপুরা চিকিৎসার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিএম মশিউর রহমান।

হৃদরোগে আক্রান্ত পরি বিক্রম ত্রিপুরার চিকিৎসায় নেপথ্যে ভূমিকা পালন করেন মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিএম মশিউর রহমানের চিকিৎসক সহধর্মীনি ডা. নুসরাত কামাল (যিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজের আইএমও)।

তিনিই তার চিকিৎসক সহকর্মী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিয়াক সার্জারী বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. সুমন নাজমুল হোসেনের মাধ্যমে পরিবিক্রম ত্রিপুরার চিকিৎসার যাবতীয় ব্যবস্থা করেন।

এরপর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. সুমন নাজমুল হোসেন এর মাধ্যমে প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। গত ১৯ এপ্রিল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিয়াক সার্জারী বিভাগে হৃদরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. সুমন নাজমুল হোসেনের নেতৃত্বে তার অপারেশন করা হয়। অপারেশন শেষে গত ২৬ এপ্রিল হাসপাতাল থেকে অবমুক্ত করা হয়।

খাগড়াছড়ির সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরীর সহযোগিতার কথা স্মরণ করে মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিএম মশিউর রহমান বলেন, তাদের সহযোগিতা ছাড়া এমন একটি জটিল ও ব্যয় বহুল রোগের অপারেশন করা আমার পক্ষে সম্ভব হতোনা। তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. সুমন নাজমুল হোসেনসহ অপারেশন টিমের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। আর হৃদরোগে আক্রান্ত পরি বিক্রম ত্রিপুরার বিষয়টি তুলে আনার জন্য এ প্রতিবেদককে এবং পরিবিক্রম ত্রিপুরার চিকিৎসায় সার্বক্ষনিক তদারকির জন্য মাটিরাঙ্গা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিরনজয় ত্রিপুরা ও মাটিরাঙ্গা সদর ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার মলেন্দ্র লাল ত্রিপুরাকে ধন্যবাদ জানান।

এদিকে ছেলের সুস্থ হয়ে ফিরে আসায় দুর্গম পাহাড়ি জনপদ দলদলি মৌজার হরিপুর্ণ কার্বারী পাড়ার অভিনাথ ত্রিপুরা ও দ্বীনমালা ত্রিপুরা দম্পতির যেন আনন্দের শেষ নেই। ছেলের সুস্থ হয়ে ফিরে আসায় পিতা অভিনাথ ত্রিপুরা মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিএম মশিউর রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, আমরা আজীবন তার কাছে ঋণী হয়ে থাকবো। ভগবান যেন সবসময় তার ভালো করেন।

হৃদরোগে আক্রান্ত পরিবিক্রম ত্রিপুরার চিকিৎসায় সার্বক্ষনিক তদারকির দায়িত্বে থাকা মাটিরাঙ্গা সদর ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার মলেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন, যার পাশে কেউ থাকে তার পাশে ভগবান কাউকে না কাউকে পাঠান এটা তারই নজির। তিনি বলেন, পরিবিক্রম ত্রিপুরার চিকিৎসায় মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার যে ভূমিকা রেখেছেন তা কোনদিনই ভুলার মতো নয়।

মাটিরাঙ্গা পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও মাটিরাঙ্গা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আলাউদ্দিন লিটন এ প্রতিবেদককে বলেন, একটি অসহায় পরিবারের জন্য মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিএম মশিউর রহমান যা করেছেন তা স্মরনীয় হয়ে থাকবে। তিনি তার এ মানবতাবাদী উদার মানসিকতা থেকে শিক্ষা নেয়ার আছে বলেও মন্তব্য করেন।

মাটিরাঙ্গা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিরনজয় ত্রিপুরা মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিএম মশিউর রহমানের মানবিক হাত প্রসারিত করার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, তার উদ্যোগের ফলেই একটি অসুস্থ ছেলে সুস্থ জীবনে ফিরে এসেছে। তিনি একটি ঘরের নিভু নিভু আলো জ্বালিয়ে দেয়ার দায়িত্ব নিয়ে উদার মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। তার মতো মানবিকগুন সম্পন্ন অফিসারই দেশকে বদলে দিতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এদিকে অপারেশন শেষে মাটিরাঙ্গায় ফিরে এসে মা-বাবাকে সাথে নিয়ে মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিএম মশিউর রহমানের সাথে দেখা করেন পরিবিক্রম ত্রিপুরা।

এসময় তিনি তার চিকিৎসাসহ বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেন। এসময় তিনি কি খাবে জানতে চাইলে ত্রিপুরা ভাষায় তরমুজ খাবে বললে তিনি তাৎক্ষনিক তাকে তরমুজ খাওয়ান এবং ফল খাওয়ার জন্য টাকা দেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন