Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

সীমান্তে রোহিঙ্গাদের ঢল, ৫০ হাজার রোহিঙ্গার প্রবেশ 

ঘুমধুম প্রতিনিধি:

মিয়ানমারে সহিংসতার পর থেকে গতকাল পর্যন্ত উখিয়ার ২টি রোহিঙ্গা শিবিরে ও বস্তিতে প্রায় ৫০ হাজার লোক প্রবেশ করেছে। বাঁধাহীন ভাবে রোহিঙ্গারা রেজু আমতলী, বাইশপারী, আঞ্জুমান পাড়া, কলাবাগান, মাঝের পাড়া, তুমব্রু, ঘুমধুম সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে এসব রোহিঙ্গারা এপারে ঢুকছে। মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী ও রাখাইন সন্ত্রাসীরা থেমে থেমে মুসলমানদের উপর নির্যাতন, জুলুম, নিপীড়ন, ঘর বাড়িতে আগুন, মানুষ হত্যা অব্যাহত রেখেছে। এ মানবতা বিরোধী ধ্বংস লীলার কোন উত্তর খুঁজে পাচ্ছেনা রোহিঙ্গারা।

বৃহস্পতিবার(৩১আগস্ট) তুমব্রু সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করে দেখা যায়, ওপারে হাজার হাজার রোহিঙ্গারা জিরো পয়েন্ট এলাকায় তাবু মেরে দিনযাপন করছেন। এপারের তুমব্রুতে অন্তত ৩ হাজার রোহিঙ্গাকে ঘিরে রেখেছে বিজিবি। ওপার থেকে আসা রোহিঙ্গাদেরকেও বিজিবি চিকিৎসা সেবা দিয়েছে তুমব্রু এলাকায়।

উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা বস্তির সভাপতি আবু ছিদ্দিক জানান, এ পর্যন্ত তাদের ক্যাম্পে ৪০ হাজারের মত রোহিঙ্গা নরনারী ও শিশু ঢুকে পড়েছে। বালুখালী বস্তির লালু মাঝি জানান, এ পর্যন্ত ওই বস্তিতে ১৮ শ পরিবারের প্রায় ১১ হাজার রোহিঙ্গা ঢুকে পড়েছে। রোহিঙ্গারা ঝুপড়ি ঘর নির্মাণ করে বসবাস করছে। আর তাদের নিয়ে আসা গরু, ছাগল, লুটপাট করছে বলে সীমান্তের বিভিন্ন লোকজন জানিয়েছেন।

কুতুপালং ক্যাম্প এলাকা পরিদর্শনকালে রোহিঙ্গাদের তথ্যমতে ২জন রোহিঙ্গা গুলিবিদ্ধ হয়েছে। তারা হলেন ফকিরা বাজার চিকন ছরির ছৈয়দ উল্লার ছেলে মো. ফারুক ও মংডুর হাতিপাড়ার রশিদ উল্লার ছেলে জুনায়েদ ও ছাদেক, মুজিব উল্লাহ। তাদের ৪জনের মধ্যে ২জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে শাহাব বাজার এলাকার আবদুস শুক্কুরের ছেলে মকতুল হোসন জানিয়েছেন।

গত ৩ দিন আগে তারা পায়ে হেটে বাইশপারী পয়েন্ট দিয়ে কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবিরে ঢুকে পড়েছে। মংডু কিয়ারি পাড়া গ্রামের আবদুল জব্বার বলেন, তার ছেলে সাদেক আলী (২০) কে মগ সেনারা এলোপাতাড়ী ছুরিকাঘাত করে। ৬ দিন পায়ে হেটে কোন রকম জীবন বাজী রেখে কুতুপালং বস্তিতে আশ্রয় নিয়েছে। বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের জিরো পয়েন্টে অবস্থানকারী নারী-শিশুর কান্নায় আকাশ ভারী হয়ে উঠেছে। মিয়ানমারের মেদিনি পাড়ার বাসিন্দা দিল মোহাম্মদ বলেন, ১২টি গ্রামের ১০ হাজার রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে সীমান্ত এলাকায়। তারা গত ৬ দিন ধরে অনাহারে অর্ধাহারে জীবন যাপন করছে। ৩৪ বিজিবির পক্ষ থেকে গত ২ দিনে ৪ শতাধিক রোহিঙ্গা নারী পুরুষ, শিশুকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছেন তুমব্রু এলাকায়।

বিজিবি ডাক্তার শহিদুল ইসলাম বলেন, নানা রোগের ৪ শতাধিক রোগীকে চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন। এদিকে রেড ক্রিসেন্টের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি দেখতে গিয়েছেন প্রতিনিধি দল। তুমব্রুতে আটকা পড়া রোহিঙ্গাদের স্থানীয় লোকজন পানি ও শুকনা খাবার দিচ্ছে বলে রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন। বর্তমানে মিয়ানমার আরকান রাজ্যের রাখাইন প্রদেশে সেনাবাহিনীর দেয়া আগুনে বাড়ি ঘর জ্বলছে। কক্সবাজার ৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্ণেল মঞ্জুরুল হাসান খান বলেন, কোন রোহিঙ্গাদের এপারে ঢুকতে দেওয়া হবেনা। সীমান্তের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে মিয়ানমার জিরো পয়েন্টে রোহিঙ্গারা জড়ো হওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।

 

১৬ রোহিঙ্গার লাশ উদ্ধার:

বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে টেকনাফ উপজেলার শাহপরীর দ্বীপে রোহিঙ্গাভর্তি একটি নৌকা ডুবির ঘটনায় আরো ১৬ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ সমুদ্র সৈকত এলাকা থেকে বৃহস্পতিবার সকালে এ লাশগুলো উদ্ধার করেছেন স্থানীয়রা। এর আগে বুধবার সকালে শিশু ও নারীসহ চারজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ নিয়ে নৌকাডুবির ঘটনায় ২০ জনের লাশ উদ্ধার করা হলো। সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য নুরুল আমিন জানান, মঙ্গলবার রাতের যেকোনো সময় নৌকাটি ঢেউয়ের তোড়ে ডুবে যায় বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার সকালে খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন শাহপরীর দ্বীপ দক্ষিণপাড়া ও মাঝেরপাড়া সৈকত থেকে ১৬জনের লাশ উদ্ধার করে। বুধবার সকালে উদ্ধার করা হয়ে দুই নারী ও দুই শিশু কন্যার লাশ। ডুবে যাওয়া নৌকাটির অংশ বিশেষ সৈকতের বালুতে আটকে রয়েছে। লাশ পাওয়ার বিষয়টি স্থানীয় বিজিবি ও পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে। টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল এসএম আরিফুল ইসলাম বলেন, স্থানীয়দের উদ্ধার করা ২০জনের লাশ যেকোনো সময় মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন