সাব্রুমের সীমান্ত এলাকায় বিএসএফের গুলিতে ভারতীয় ৩ উপজাতি নিহত, আহত ২

রামগড়-ফটিকছড়ি সীমান্তে বিজিবির সতর্কতাজারি

Ramgarh 17.3 copy
রামগড় প্রতিনিধি :
ফটিকছড়ি সীমান্তের ওপারে ভারতের দক্ষিণ ত্রিপুরার সাব্রুম মহকুমার সীমান্তবর্তী এক গ্রামে সেদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে এক মহিলাসহ তিনজন ভারতীয় ত্রিপুরা উপজাতি নিহত হয়েছে। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছে আরও দুজন। ১৭ মার্চ শুক্রবার বিকালে এ ঘটনা ঘটে। সীমান্তের বিভিন্ন সূত্র থেকে এ খবর পাওয়া গেছে। এদিকে বিএসএফের গুলিতে হতাহতের ঘটনায় রামগড় ও ফটিকছড়ি সীমান্তে বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি।

সীমান্তের ওপার থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, রামগড়স্থ বিজিবির ৪৩ ব্যাটালিয়নের আওতাধীন ফটিকছড়ির পানুয়াছড়া বিওপির বিপরীতে ভারতের সাব্রুমের সীমান্তবর্তী হারবাতলীর উপজাতীয় স্বশাসিত(এডিসি) চিতাবাড়ি এলাকায় শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে গ্রামবাসির উপর বিএসএফ গুলি চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই একজন মহিলাসহ তিনজন ভারতীয় ত্রিপুরা উপজাতি মারা যায়। নিহতরা হচ্ছে, মনো কুমার ত্রিপুরা(৩০), পর কুমার ত্রিপুরা(৪০) ও গৃহবধূ স্বর লক্ষ্মী ত্রিপুরা(৩২)।

এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত তিনজন হচ্ছেন, শ্যাম কুমার ত্রিপুরা(১৭) ও জীবন কুমার ত্রিপুরা(৪০)। আহতদের সাব্রুম মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সাব্রুমের এক সাংবাদিক জানান, উপজাতি জুমচাষীরা গরু নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় সাব্রুমের ৫১ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের হারবাতলী ক্যাম্পের বিএসএফ গরু পাচারকারি সন্দেহে তাদের উপর গুলি বর্ষণ করে। এতে তিনজন নিহত ও দুজন আহত হন। এ ঘটনায় সেখানে উপজাতীয়দের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিএসএফের গুলিতে হতাহতের ঘটনার প্রতিবাদে সিপিএম শনিবার সাব্রুমে হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বলে জানাগেছে।

রামগড়ের ৪৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল এম. জাহিদুর রশীদ জানান, বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে হারবাতলী এলাকায় স্থনীয় গ্রামবাসিদের সাথে সংর্ঘষের এক পর্যায়ে বিএসএফ গুলি চালায়। এতে একজন ত্রিপুরা মহিলাসহ দুইজন নিহত ও তিনজন আহত গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে তিনি খবর পেয়েছেন। সেখানে একটি রাস্তা নির্মাণ কাজে গ্রামবাসীরা বাধা দেয়ায় বিএসএফের সাথে তাদের সংঘর্ষ হয় বলে তিনি জানান।

এদিকে, বিএসএফের গুলিতে হতাহতের ঘটনার পর রামগড় ও ফটিকছড়ি সীমান্তে কড়া সর্তকতাজারি করেছে বিজিবি। ৪৩ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল এম. জাহিদুর রশীদ সর্তকতাজারির কথা স্বীকার করে বলেন, এ ঘটনায় ত্রিপুরার ঐ এলাকায় উত্তেজনা পরিস্থিতি বিরাজ করছে। কেউ যাতে সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেজন্যই টহলবৃদ্ধিসহ সীমান্তজুড়ে নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন