সাজেকে খাদ্যসংকট মোকাবেলায় ৯’শ পরিবারের মাঝে নগদ অর্থসহ খাদ্যশস্য বিতরণ

a (3) copy

সাজেক প্রতিনিধি:

রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা সাজেকের দুর্গম গ্রামে খাদ্যসংকট মোকাবেলায় সোমবার নগদ অর্থ ও খাদ্যশস্য বিতরণ করেছে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত নিজে উপস্থিত থেকে বাঘাইহাটে সাজেক ইউপি কার্যালয়ে ও রুইলইু এলাকায় দুর্গতদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান।

এসময় বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম, জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা বিশ্বনাথ মজুমদার, রাঙামাটি প্রেসক্লাব সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন রুবেলসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় বাঘাইহাট সাজেক ইউপি কার্যালয়ে ও রুইলুইতে সাজেক এলাকার দুর্গম গ্রামের ৯শ’ পরিবারকে ১৮মেট্রিক টন চাউল ও প্রতি পরিবারকে ৫’শ টাকা করে সর্বমোট সাড়ে চার লক্ষ টাকা বিতরণ করা হয়। খাদ্যশস্য বিতরণকালে জেলা প্রশাসক বলেন, সরকার দুর্গম এলাকার জনগণের বিপদে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে। এ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। তিনি কৃষি ও ফলদ বাগান সৃষ্টির মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে স্বনির্ভর হওয়ারও আহ্বান জানান।

এসময় তিনি স্থানীয় প্রান্তিক জনসাধারণকে উদ্দেশ্য করে বলেন, বাল্যবিয়ে একটি সামাজিক ব্যাধি। এ ব্যাধি থেকে মুক্তি না পাওয়ার কারণেই সাজেকের মতো দুর্গম একটি ইউনিয়নের অধিকাংশ পরিবারের ৩টি থেকে শুরু করে আটটি পর্যন্ত সন্তান রয়েছে। এতে করে আয়ের চেয়ে ব্যয়ের পরিমাণ অধিকহারে বেড়ে যায় এবং আমি শুনেছি আঞ্চলিক সন্ত্রাসীরা জুমচাষে বাধা দিয়েছে তারপরেও যারা জুমচাষ করেছে তারা জুমচাষ থেকে আশানুরূপ ফলন না পাওয়ায় এ অঞ্চলে সাময়িক খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে।

এছাড়াও এ এলাকার মানুষজনের মধ্যে সচেতনতাবোধ না থাকায় পুরুষদের কাজের প্রতি অনিহার কারণেই এ সংকট তৈরি হয়েছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণে এ এলাকার মানুষজনকেই সর্বাজ্ঞে এগিয়ে আসতে হবে। এতে করে সহযোগিতা প্রদান করবে সরকার। ইতিমধ্যেই দুর্গম সাজেকবাসীর জন্য কৃষি প্রকল্পসহ আত্মকর্মসংস্থানমূলক বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন। সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় যোগাযোগও করা হচ্ছে নিয়মিত।

জেলা প্রশাসক আরও জানান, রাঙামাটির সাজেকের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় অত্যন্ত আন্তরিক। যার ফলশ্রুতিতে সাজেকের ব্যাপারে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন থেকে যোগাযোগ করা হলে মন্ত্রণালয় মাত্র ১ঘন্টা সময়ের মধ্যে তাৎক্ষণিক খাদ্য ও নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করে জেলা প্রশাসনকে।

জেলা প্রশাসক বলেন, সাজেকবাসীর জন্য প্রধানমন্ত্রীর তথা পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আন্তরিকতা আগে যেমন অব্যাহত ছিল ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের ৪০ থেকে ৪৫টি দুর্গম গ্রামে খাদ্যসংকট সৃষ্টি হয়। বিগত বছর জুম ধানের উৎপাদন কম হওয়ায় জুমের ভূমির পরিমাণ কমে আসায় ও সর্বোপরি বাঁশ, কাঠ, বেতসহ বনজ সম্পদের উৎস হ্রাস পাওয়ায় এ ইউনিয়নে খাদ্য সংকটের সৃষ্টি হয়। ইতোমধ্যে প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংস্থা থেকে দুর্গত এলাকায় খাদ্যশস্য বিতরণ করা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন