সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে নতুন প্রজন্মদেরকে এগিয়ে আসতে হবে
উখিয়া প্রতিনিধি:
গণ-সচেতনতা সৃষ্টি করে মানবপাচারের মত মরণ নাশক ইয়াবা ও মাদকদ্রব্য বন্ধ করা সম্ভব। সারা দেশে এখন কক্সবাজার নিয়ে একটি কলঙ্ক রয়েছে। তা হল ইয়াবা। ইয়াবা বন্ধে সরকারি বিভিন্ন সংস্থার পাশাপাশি সাধরণ জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে। অন্যতায় ইয়াবা বন্ধ করা যাবেনা।
ইয়াবার মত হারাম ব্যবসার টাকা দিয়ে উচু উচু দালান কোঠা নির্মাণ না করে নিজেদের সন্তানদের মাদক থেকে রক্ষা করে নৈতিকতার শিক্ষায় শিক্ষিত করে বাংলাদেশকে একটি সুখী ও সমৃদ্ধশালী দেশ হিসাবে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রীপরিষদ সচিব মোহম্মদ শফিউল আলম।
যেখানে মাদকের খবর পাবেন সেখানেই পুলিশ, বিজিবি ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে খবর দিয়ে মাদক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ধরে দেওয়া পরার্মশ দিয়েছেন তিনি। তার এলাকার সাধরণ মানুষকে।
শনিবার সকাল ১১টায় কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলার প্রাচীনতম বিদ্যাপীঠ পালং আর্দশ উচ্চ বিদ্যালয়ে উখিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের উদ্যোগে ও সেকেন্ডারি এডুকেশন কোয়ালিটি অ্যান্ড অ্যাকসেস এনহান্সমেন্ট প্রজেক্ট (সেকায়েপ) এর উখিয়া উপজেলার শ্রেষ্ঠ উদ্দীপনা পুরষ্কার ও কক্সবাজার জেলার সেরা সংগঠক পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রীপরিষদ সচিব মো. শফিউল আলম এর শৈশবের স্মৃতি বিজড়িত বিদ্যালয় পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন গর্বিত ছাত্র হিসাবে দাবি করে তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্যেশে বলেন, লেখা পড়ার গুনগত মান উন্নয়নের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চো অধিষ্ঠ হতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস বিরোধী গণ সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দেশের কল্যাণে কাজ করা, কারিগরি ও বিজ্ঞান শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সরকারের দেওয়া ২০৪১ সালের সমৃদ্ধ ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গিকার ব্যক্ত করেন। ১৮ বছরের নিচে কোন কণ্যা সন্তান ও ২১ বছরের নিচে পুরুষ সন্তানদের বাল্য বিবাহ না দেওয়ার কাথাও বলেন।
অতিরিক্ত সচিব ও সেকায়েপ প্রকল্প পরিচালক ড. মো. মাহমুদ-উল- হক এর সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার সংকর রনজন শাহ।
তিনি তার বক্তব্যে বলেন, কক্সবাজারের মত পিছিয়ে থাকা জেলাকে শিক্ষায় উন্নত করতে হলে বিশ্বের সাথে তালমিলিয়ে শিক্ষার মানকে আরও উন্নত ও গুনগত করে গড়ে তোলতে হবে। তার জন্য শিক্ষক ও অভিভাবকদের আরও আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হেসেন। তিনি বলেন, শিক্ষামন্ত্রনালয়ের একটি শিক্ষামূলক প্রজেক্ট হিসাবে সেকায়েপ জেলায় পিছিয়ে পড়া ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে যা শিক্ষার্থী ও কমল মতি ছেলে মেয়েদের পড়ালেখায় আরও মনোযোগী করে তুলতে সাহয়ক ভূমিকা রাখছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান শিক্ষাবান্ধব সরকার প্রতি উপজেলায় একটি করে রিসোর্স সেন্টার নির্মাণ করেছে যাতে শিক্ষকগণ সহজে রিসোর্স সেন্টার থেকে শিক্ষা বিষয়ক যাবতীয় প্রশিক্ষণ নিতে পারে। তাছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞান ল্যাব গুলোকে আরও কার্যকর করে গড়ে তুলার জন্য শিক্ষকদের প্রতি পরামর্শ দেন।
সেকায়েপ এর টিম লিডার মিছবাহ উদ্দিন আহমদ সুমন এর পরিচারনায় অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, ব্যারিস্টার জি আর মাহমুদ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের যুগ্ম সচিব সাইফুল্লাহ মকবুল মোরশেদ দুলাল, যুগ্ম সচিব ও বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র এবং পাঠাভ্যস উন্নয়ন কেন্দ্রের পরিচালক শরিফ মো. মসুদ।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, উখিয়া উপজেলা নিবার্হী অফিসার মো. মাঈন উদ্দিন, উখিয়া বঙ্গমাতা মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হামিদুল হক চৌধুরী, উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছেনুয়ারা বেগম, রত্নাপালং ইউপি চেয়ারম্যান খাইরুল আলম চৌধুরী, পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এহেসানুল হক মানিক। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রায়হানুর ইসলাম মিয়া।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে শিক্ষক, ইমাম, অভিভাবক, রাজনৈতিক, সাংবাদিক, উপজেলার সকল মাধ্যমিক ও মাদ্রাসার পুরষ্কার প্রাপ্ত শিক্ষার্থী এবং জেলার সংগঠক সহ সর্বস্তরের মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
উপস্থিত ছিলেন, কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইসিটি সাইফুল ইসলাম মজুমদার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাইলাউ মারমা, উপজেলা ভূমি কমিশনার নুরউদ্দিন মো. নোমান শিবলি, উখিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবুল খায়ের, দৈনিক কালের কন্ঠের কক্সবাজারস্থ সিনিয়র স্টাফ রির্পোটার বিশিষ্ট সাংবাদিক তোফায়েল আহমদ, হলদিয়াপালং ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ শাহ আলম প্রমুখ।পুরা অনুষ্ঠানে মন্ত্রীপরিষদ সচিবের সহধর্মীনি সহ পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত করেন, ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী তাহেরা বেগম, গীতা পাঠ করেন, রানী শর্মা ও থ্রীপিটক পাঠ করেন স্বপ্তষী বড়ুয়া। অনুষ্ঠানের শেষে ২১জন সেরা সংগঠক ও ৩৭৯জন শিক্ষার্থীর হাতে পুরষ্কার ও সনদ পত্র তুলে দেন মন্ত্রীপরিষদ সচিব মোহম্মদ শফিউল আলম।