সন্ত্রাসীদের কোন জাত নেই, ধর্ম নেই, দেশত্ববোধ নেই: বাইশারীতে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর

Mp-14-8-16 copy

নাইক্ষ্যংছড়ি প্রতিনিধি:

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি বলেছেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আজ জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। ধর্মীয় দৃষ্টি, কোরআন-হাদিস এবং হিন্দু-বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ধর্মের দৃষ্টি কোণ থেকে মানুষকে খারাপ পথে না যাওয়ার নিষেধ রয়েছে। তবে সন্ত্রাসীদের কোন জাত নেই, ধর্ম নেই, দেশত্ববোধ নেই। জনগণ বড় শক্তি, জনগণ যেখানে ঐক্যবদ্ধ থাকবে সেখানে সন্ত্রাসের কোন অস্বিত্ব থাকবেনা। সরকার এসব সন্ত্রাস, নাশকতা ও জঙ্গিবাদ দমনে সোচ্চার রয়েছে। তাই জনগণকে সরকারের পাশে থাকার আহ্বান জানান।

পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি রবিবার সকাল ১১টায় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বিরোধী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। বীর বাহাদুর আরো বলেন- প্রত্যেক বাবা-মাকে সন্তানের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে। জনগণকে যার যার অবস্থান থেকে পুলিশ-বিজিবির ভূমিকা নিয়ে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ প্রতিরোধের আহ্বান জানান তিনি।

বাইশারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আলম কোম্পানীর সভাপতিত্বে জনসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বান্দরবান জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক বলেছেন, সমাজের সকল জাতি গোষ্ঠী মিলেমিশে পারষ্পরিক ভাব, ভালবাসা বিনিময়ের মাধ্যমে অবস্থান করবে সরকার সেটা প্রত্যাশা করে। ভৌগোলিক দিক থেকে বাইশারী স্পর্শকাতর একটি এলাকা। তাই পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর বাইশারীতে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সব সময় প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করেন।

তিনি আরো বলেন, সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণ আজ সরকারী কর্মকতা, প্রশাসনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। তৃণমূল পর্যায়ে সকল রাজনৈতিক দল, জনপ্রতিনিধি শিক্ষক সবাইকে নিয়ে সন্ত্রাস প্রতিরোধে মাঠে নেমেছে সরকার।

বান্দরবান জেলা পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার বণিক বলেছেন, বর্তমান প্রেক্ষাপনে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশ অগ্রণী ভূমিকা রাখছে। পুলিশের প্রত্যেক সদস্য জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জীবন দেওয়ার জন্য অঙ্গিকারবদ্ধ হয়ে আছেন। শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও জঙ্গি মুক্ত বাংলাদেশ করবে পুলিশ। তবে এ জন্য জনগণের সহযোগিতা অব্যশই প্রয়োজন। বাইশারীতে মাত্র ৩৭জন পুলিশ দিয়ে ৩০ হাজার জনগণকে নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব নয়, সেটা আপনারা জনগণই ভাল করে জানেন।

৩১ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্ণেল আনোয়ারুল আযীম বলেছেন, বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড সীমান্তে চোরাচালান, মাদকদ্রব্য, অবৈধ কাঠ পাচার, নারী পাচার, মানব পাচারসহ যেকোন অপরাধ দমনে বদ্ধপরিকর। একই সাথে পার্বত্য চট্টগ্রামের অংশ হিসেবে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার শান্তি-শৃংখলা রক্ষা, সরকারী উন্নয়ন কাজ ত্বরান্বিত করতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও বিজিবির দায়িত্ব রয়েছে। প্রায় ৫৭০ বর্গকিলোমিটারের এলাকায় বিজিবি এবং পুলিশের ১হাজার সৈন্য দ্বারা পুরো নাইক্ষ্যংছড়ির ৭০ হাজার জনগণকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব না। তবে ৭০ হাজার জনগণ যদি আইন শৃংখলা বাহিনীকে স্বতস্ফূর্ত ভাবে সহযোগিতা করেন তাহলে নাইক্ষ্যংছড়ির মাটিতে কেউ সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করতে পারবে না।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক তসলিম ইকবাল চৌধুরীর পরিচালনায় শুরু হওয়া জনসভায় আরো বক্তব্য রাখেন, বান্দরবান জেলা পরিষদ সদস্য লক্ষীপদ দাশ, বান্দরবান প্রেসক্লাব সভাপতি আমিনুল ইসলাম বাচ্চু, জেলা আওয়ামীগ উপদেষ্টা কাজল কান্তি দাশ, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাম্মেল হক বাহাদুর, জেলা পরিষদ সদস্য ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগের আহবায়ক ক্যউচিং চাক, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাফায়েত মো. শাহে দুল ইসলাম, বাইশারী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আলম কোম্পানী, শাহ্ নুরুদ্দীন মাদ্রাসা শিক্ষক আবদুল গফুর।

এছাড়াও জনসভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. কামাল উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক আবু তাহের কোম্পানী, জঙ্গি ও সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মো. শফি উল্লাহ, সদস্য সচিব জসিম উদ্দিন, বাইশারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ আহবায়ক জাহাঙ্গীর আলম বাহাদুর, বাইশারী তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. আবু মুসা, ছাত্রলীগ সভাপতি চোচুমং মার্মা, কৃষকলীগ সভাপতি সাইফুদ্দিন শিমুল, আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক চেয়ারম্যান জালাল আহমদ, শাহাব উদ্দিন, সাবেক সাধারন সম্পাদক উছাহ্লা চাক, বাইশারী উচ্চ বিদ্যালয় সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল হাকিম।

সমাবেশ শেষে বাইশারী ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত পরিষদ বর্গের দায়িত্বভার গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয় এবং নবনির্মিত ইউনিয়ন পরিষদের ফলক উম্মোচন করেন পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন