সন্তানের পিতৃপরিচয় পেতে স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর মামলা

মামলা

চকরিয়া প্রতিনিধি:

দীর্ঘ ২১ বছর ধরে স্ত্রীর ন্যায্য অধিকার এবং ওই সংসারে জন্ম নেওয়া একমাত্র সন্তানও পায়নি পিতৃপরিচয়। দীর্ঘকাল প্রবাসে থেকে দু’মাসে পূর্বে দেশে ফেরেন। কিন্তু হতভাগা সন্তান ও দূর্ভাগা স্ত্রীর প্রতি কোনরূপ মায়া-মমতা না দেখিয়েই ফের গোপনে বিদেশ পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে পাষাণ্ড পিতা। এনিয়ে কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে স্ত্রী ও সন্তানের অধিকার চেয়ে স্বামী মো: এহেছানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে স্ত্রী মমতাজ বেগম (৩৭)। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে চকরিয়া থানার ওসি (তদন্ত)কে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন।

অভিযোগে জানা গেছে, চকরিয়া পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের খন্দকারপাড়া এলাকার ইদ্রিছ আহমদের পুত্র মো: এহেছানের সাথে ১৯৯৪ সালে ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক বিয়ে হয় একই এলাকার নুরুল কবিরের মেয়ে মমতাজ বেগম এর। সংসারে মনির হান্নান সোহাগ নামে এক পুত্র সন্তান জন্ম নেয়। বর্তমানে তার বয়স ২১বছর। বিয়ের পর স্বামী মো: এহেছান অর্থ উপার্যনের লক্ষ্যে বিদেশ (দুবাই) চলে যায়। এরই মধ্যে দ্বিতীয় আরও একটি বিয়েও করেন স্বামী এহেছান। কিন্তু দীর্ঘ ২১ বছর ধরে ১ম স্ত্রী ও সন্তানের প্রতি কোন খোঁজখবর, ভরণ-পোষণ করে নি। শুধু মোটা অংকের যৌতুকের জন্য টাকা দাবী করতে থাকেন। সম্প্রতি বিদেশ থেকে দেশে ফিরলে স্ত্রী তার সন্তানকে নিয়ে স্বামীর কাছে স্ত্রী ও সন্তানের পিতৃপরিচয় চান। ওই সময় আবারও ২ লাখ টাকা যৌতুক দাবী করে এবং স্ত্রী মমতাজ বেগমকে কিল-ঘুষি, লাথি দিয়ে মারধর করতে থাকে। পরে তাকে পরিবারের সদস্যরা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। এ ঘটনায় স্বামী এহেছানকে আসামী করে আদালতে এ মামলাটি করেন।

গত ৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে মমতাজ বেগম অভিযোগ করেন, তাকে স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রয়োজন নাই। অন্তত ২১ বছর বয়সী একমাত্র সন্তান মনির হান্নান সোহাগকে পিতৃপরিচয় দেওয়া হউক। প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনায় পিতা-পুত্রের ডিএনএ পরীক্ষা করলে বাস্তব পরিচয় মিলবে। বর্তমানে প্রতারক ও পাষাণ্ড স্বামী এহেছান আইনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে ফের বিদেশ পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। স্ত্রী ও সন্তান তাদের পরিচয় ও অধিকারের দাবীতে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

চকরিয়া থানার ওসি (তদন্ত) কামরুল আজম জানিয়েছেন, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। সুষ্ঠু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ নাই। আদালতে দায়ের করা অভিযোগটি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে একই অভিযোগে চকরিয়া পৌরসভার মেয়র এর কাছে কাল ৮ ডিসেম্বর পূর্বনির্ধারিত বৈঠকের কথা রয়েছে। তিনিও বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন বলে জানান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন