সংগঠন-ব্যক্তি উদ্যোগে রোহিঙ্গাদের ত্রাণ বিতরণ ‘নিষিদ্ধ’

নিজস্ব প্রতিবেদক:

প্রায় প্রতিদিনই ব্যক্তিগতভাবে এবং বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মাঝে আর্থিক সহায়তা-ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। কিন্তু নিয়ম বলছে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান-সংগঠন তাদের নিজস্ব ব্যানারে কোন আর্থিক সাহায্য বা ত্রাণ বিতরন করতে পারবেন না।

গত মাসে অনুষ্ঠিত ন্যাশনাল ট্রাস্কফোর্সের সভায় এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। কক্সবাজার জেলা প্রশাসন এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করছে।

সেই সিদ্ধান্ত অনুসারে আর্থিক সহায়তা দিতে আগ্রহী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান-সংগঠনকে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে খোলা নামের সোনালী ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে সেই অর্থ জমা দিতে হবে। অন্যদিকে জেলা প্রশাসনের দুর্যোগ ও ত্রাণ শাখায় আগ্রহী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ত্রাণসামগ্রী জমা দিতে পারবেন।

এই নিয়মের মূলে রয়েছে-ত্রাণ সহায়তার আড়ালে কেউ যেন কোন রাজনৈতিক বা ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করতে না পারে। পাশাপাশি ত্রাণ ও আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা না হয় এবং সবাই যাতে ত্রাণ পায়-সেটিও রয়েছে এই সিদ্ধান্তের অন্যতম কারণ। তাই এর বদলে সরকার একটি সমন্বিত ও নির্দিষ্ট পদ্ধতির মাধ্যমে ত্রাণ বিতরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এই সিদ্ধান্ত অনুসারে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান-সংগঠনের দেওয়া ত্রাণসামগ্রী ও আর্থিক সহায়তা কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বাধীন জেলা কমিটি এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (উখিয়া ও টেকনাফ) নেতৃত্বাধীন উপজেলা কমিটি রোহিঙ্গাদের মাঝে বিতরণ করবে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের এনডিসি এবং দুর্যোগ ও ত্রাণ শাখার দায়িত্বে থাকা তাহমিলুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলায় আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের সাধারণ জনগন বা প্রতিষ্ঠান-সংগঠন আর্থিক বা ত্রাণ সহায়তা করতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান-সংগঠন তাদের নিজস্ব ব্যানারে কোন ত্রাণ বিতরণ ও আর্থিক সহায়তা দিতে পারবে না।

সরকার একটি সমন্বিত ও নির্দিষ্ট পদ্ধতির মাধ্যমে ত্রাণ বিতরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সিদ্ধান্ত অনুসারে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে খোলা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে আর্থিক সহায়তা এবং দুর্যোগ ও ত্রাণ শাখায় ত্রাণসামগ্রী জমা দেওয়া যাবে।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নেতৃত্বাধীন জেলা কমিটি এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (উখিয়া ও টেকনাফ) নেতৃত্বাধীন উপজেলা কমিটির মাধ্যমে এই ত্রাণ ও আর্থিক সহায়তা রোহিঙ্গাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।বলেন তাহমিলুর রহমান।

তাহমিলুর রহমান আরও বলেন, এ ত্রাণ বিতরণ ও আর্থিক সহায়তাকে কেন্দ্র করে কেউ যাতে রোঙ্গিগাদের রাজনৈতিক বা ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যবহার করতে না পারে সে উদ্দেশ্যে এই সিদ্ধান্ত।

পাশাপাশি বিশৃঙ্খলা এড়ানো এবং সবাই যাতে সহায়তা পায় সেটিও রয়েছে এই সিদ্ধান্তের অন্যতম মূলে। কারণ দেখা যায় এ সহায়তাকে কেন্দ্র করে অনেক সময় ঝামেলা তৈরি হয় আবার একজন বারবার সহায়তা পাচ্ছে কিন্তু অনেকে আছেন একবারও পা্চ্ছেন না।

এদিকে প্রতিদিন বিক্ষিপ্তভাবে প্রায় প্রতিদিনেই বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান-সংগঠন ত্রাণ এবং আর্থিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে তাহমিলুর রহমানের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, দিচ্ছে এটা ঠিক। তবে ঘটনাস্থলে আমাদের উপজেলা কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা রয়েছেন। তারা সার্বক্ষণিক বিষয়গুলো নজরদারী ও তদারকি করছেন।যেখানে আর্থিক সহায়তা ও ত্রাণ সহায়তা দেওয়া যাবে:

অ্যাকাউন্টের নাম: Humanitarian Assistance to the Myanmar Citizen Illegally Migrated (Rohinga)

C/A no : 33024625.
Sonali Bank Limited
Cox Bazar Branch

ত্রাণ সহায়তার জন্য: দুর্যোগ ও ত্রাণ শাখা, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, কক্সবাজার।
ফোন নম্বর: ০৩৪১-৬৩২০০
ফ্যাক্স-অফিস: ০৩৪১-৬৩২৬৩ (অফিস)
ই-মেইল: [email protected]

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন