শান্তি চুক্তির ১৮ বছর পরেও বিবাদ কেন ?

kjag
ডেস্ক নিউজ:
বাংলাদেশের পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় ‘ভূমি রক্ষা কমিটি’ নামের একটি সংগঠনের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সেনা সদস্যদের উপর হামলা ও পরে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটেছে রোববার।

এরপর সোমবার সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে ওই সংগঠনটি। বিজিবির একটি ক্যাম্প স্থাপনকে কেন্দ্র করে এসব ঘটনা চলেছে গত কয়েকদিনে।ঐ ক্যাম্প স্থাপনের কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের দাবিতে গত কয়েকদিন ধরেই সেখানে আন্দোলন চলছিল।

পার্বত্য চট্টগ্রামে বহু বছর ধরে পাহাড়ি-বাঙালিদের বিবাদের মূল কারণ ভূমি বিরোধ। শান্তি চুক্তিতে সেটি নিষ্পত্তির কথা বলা রয়েছে।কিন্তু চুক্তির ১৮ বছর পরও কেন ভূমি নিয়ে বিবাদ রয়েই গেছে? এমন প্রশ্নের জবাবে বেসরকারি সিএইচটি কমিশনের কো-চেয়ার সুলতানা কামাল বলছেন সংকট সমাধানে রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবের কারণেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

বিবিসি বাংলায় আজ সকালের অধিবেশনে প্রচারিত এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, “ পাহাড়িদের মূল আপত্তি হলো ওদের সাথে কোন আলোচনা না করে তাদের বাসস্থানের এতো কাছে ক্যাম্পগুলো তৈরি করা হয় যাতে তারা অনবরত একটা শঙ্কার মধ্যে বাস করে”।

তিনি বলেন, ন্যুনতম কোন কারণ ঘটলেই পাহাড়ে সংঘর্ষ হয় কারণ সেখানে স্থানীয় আদিবাসীদের সাথে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে তাদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠেনি।

ভূমি সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের রাজনৈতিক সদিচ্ছা অনুপস্থিত দাবি করে তিনি বলেন, “১৯৯৭ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীই চুক্তিটি করে দেশে বিদেশে প্রশংসিত হয়েছিলেন। তিনি শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তির সূচনা করেছেন কিন্তু সেটিকে সামনে এগিয়ে নেয়ার কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি”।

সুলতানা কামাল বলেন, ভূমি কমিশনের আইনটা সংশোধন করে স্থানীয়দের দাবীকৃত জমির নিষ্পন্ন করে তারপর যেন বাইরে থেকে যারা গেছে বা অন্যদের জমি দেয়া হয় কিন্তু সেটি তো হচ্ছেনা।

“সংঘর্ষগুলো যেসব কারণে হচ্ছে সেগুলোর উপাদানগুলো নিয়ে কোন কাজ হয়নি। চুক্তিটি বাস্তবায়নে এতো বেশি কালক্ষেপণ করা হয়েছে ততদিন চুক্তিবিরোধী শক্তিগুলো গেড়ে বসেছে। জনগোষ্ঠীর আনুপাতিক সংখ্যাও ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে”।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সভানেত্রী চুক্তি করেছেন কিন্তু দেখা যায় পাহাড়ি বাঙ্গালী সংঘর্ষে সামনে থাকে আওয়ামী লীগেরই লোকজন। সেজন্যই সরকারের উচ্চ পর্যায়ে হয়তো চুক্তি বাস্তবায়নে দ্বিধা তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

ভূমিই তো বড় উপাদান সংঘর্ষের। সে জায়গায় সমাধানের কোন প্রত্যাশা করা যাচ্ছেনা।-বিবিসি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন