লাশ শনাক্ত করতে বান্দরবান থেকে সিলেটের পথে জঙ্গির পরিবার

171259_1

নিজস্ব প্রতিবেদক, বান্দরবান:

সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার জঙ্গি আস্তানায় মনজিয়ারা পারভিন ওরফে মর্জিনা নিহত হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করতে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে সিলেটের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন তার পরিবার। মনজিয়ারা পারভিন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে নিহত জঙ্গি জুবাইরা ইয়াসমিনের ছোট বোন।

সূত্র জানায়, মর্জিনাই বান্দরবানের মনজিয়ারা পারভিন কিনা এটা নিশ্চিত হতে মঙ্গলবার সকালে সিলেট পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে বান্দরবান জেলা পুলিশকে বার্তা পাঠানো হয়। এ বার্তা পেয়ে বান্দরবান জেলা পুলিশ মনজিয়ারা পারভিনের পরিবারের দুই সদস্যকে সিলেট পুলিশের কাছে পাঠানোর উদ্যোগ নেয়। সীতাকুণ্ডে এ পরিবারের আরেক সদস্য জহিরুল হক (জসিম) কেও জঙ্গি আস্তানা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশারী তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক আবু মুসা বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুসারে পুলিশের সহায়তায় তাদের সিলেট পাঠানো হয়েছে।

জানা গেছে, জঙ্গি জুবাইরা ইয়াসমিন ও মনজিয়ারা পারভিনের বাবা নুরুল ইসলাম ও বড় ভাই জিয়াবুল হক মঙ্গলবার দুপুরের দিকে সিলেটের উদ্দেশ্যে বান্দরবান ত্যাগ করেন। তারা সিলেটের আতিয়া মহলে নিহত জঙ্গি মর্জিনা তাদের পরিবারের সদস্য কিনা সেটি নিশ্চিত করবেন।

জাতীয় পরিচয়পত্রের সূত্রে জানতে পারে, মনজিয়ারা বেগমের জন্ম ১৯৯৩ সালের ৩ এপ্রিল। পিতার নাম নুরুল আমিন, মায়ের নাম সাবেকুর নাহার। তিনি দ্বিতীয় শ্রেণী পর্যন্ত পড়ালেখা করেন। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশারী ২৭৮নং মৌজার ৮নং ওয়ার্ডে বাসিন্দা।

স্থানীয় সূত্র জানায়, মনজিয়ারা বেগমের বাবার নাম নুরুল আলম ও মাতার নাম জান্নাত আরা। ২৭৮নং মৌজার ৯ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। পিতা-মাতার নাম ও ওয়ার্ডের গরমিল দেখা গেছে।

বান্দরবানের পুলিশ সুপার সঞ্চিত কুমার রায় বলেন, নিহত মর্জিনা বা মনজিয়ারা কিনা তার লাশ ও পোশাক দেখে নিশ্চিত হতে পরিবারের দুই সদস্যকে সিলেট পাঠানো হয়েছে।

এদিকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির জঙ্গি জুবাইরা ইয়াসমিন ও কামালের পরিবারের ৬ ব্যক্তি নিখোঁজ থাকায় স্থানীয়দের মধ্যে চরম আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এ কারণে উপজেলায় গোয়েন্দা কার্যক্রম বাড়ানোর পাশাপাশি পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে এবং স্থানীয়দের তথ্য সংগ্রহ করছে পুলিশ।

নাইক্ষ্যংছড়ির স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জুবাইরা ইয়াসমিন ও তার ভাই জহিরুল হক (জসিম) এর বাড়ি নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশারী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের যৌথ খামার পাড়ায়। তারা সেখানে বসবাসকারী নুরুল আলম ও জান্নাত আরার সন্তান। জুবাইরা ইয়াসমিনের স্বামী কামাল হোসেনের বাড়িও বাইশারীর যৌথ খামার পাড়ায়।

জুবাইরা ইয়াসমিনের মা জান্নাত আরা জানান, তার আট ছেলে এবং চার মেয়ের মধ্যে তিনজনের কোনও হদিস নেই। স্বামী কামাল হোসেন জুবাইরা ইয়াসমিনকে নিয়ে যায় এবং কিছুদিন পর ছেলে জহিরুল হকও তাদের সঙ্গে চলে যায়। জুবাইরার একটি ছেলে হলে সন্তানের দেখাশুনার কথা বলে তার আরেক মেয়ে মনজিআরা বেগমকে (১৬) চট্টগ্রামে নিয়ে যায়। গত আট মাস ধরে তাদের কোন খবর পাননা বলেও জানান তিনি। কামাল ও জুবাইরা বেশ ধার্মিক ছিল বলেও জানান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন