লামা ও আলীকদমে সোলার হোম সিস্টেম প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীর-গতি


লামা সংবাদদাতা :
বান্দরবান জেলার লামা ও আলীকদম উপজেলায় কাবিটা এবং টিআর বরাদ্দের আওতায় ‌সোলার হোম সিস্টেম’ প্রকল্পের বাস্তবায়ন চলছে অত্যন্ত ধীর-গতিতে।

চলতি অর্থবছর শেষ হতে চললেও কাবিটা এবং টিআর প্রথম পর্যায়ের বরাদ্দের ৩১১টি সোলার হোম সিস্টেম প্রকল্পের কাজ শেষ হয়নি। দ্বিতীয় পর্যায়ের টিআর ও কাবিটা সাধারণ এবং বিশেষ বরাদ্দের সোলার স্থাপন কাজ এখনো শুরু হয়নি।

অথচ আগামী ৩০ জুনের মধ্যে সকল বরাদ্দের কাজ শেষ করে ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে প্রতিবেদন প্রেরণ করার জন্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা রয়েছে।

জানা গেছে, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের মাধ্যমে টিআর ও কাবিটার মোট বরাদ্দের ৫০% অর্থ দিয়ে সোলার হোম সিস্টেম প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করার জন্য সরকারের নীতিমালা রয়েছে। সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণের জন্য আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল জনগণের মাঝে ও প্রতিষ্ঠানে প্রকল্প বাস্তবায়ন করার জন্য নীতিমালায় বলা হয়েছে।

লামা উপজেলায় টিআর ও কাবিটার প্রথম পর্যায়ের সাধারণ এবং বিশেষ বরাদ্দের প্রায় ৬৫ লক্ষ টাকা ব্যায়ে ৩১১টি সোলার হোম সিস্টেম প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি পর্যায়ে বিনামূল্যে সরকারি অর্থায়নে সোলার স্থাপনের জন্য এই সকল প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

প্রথম পর্যায়ের বরাদ্দের আওতায় গজালিয়ায় ৭৭, লামা ৩৮, ফাঁসিয়াখালী ৬০, আজিজনগর ১৭, সরই ২৪, রুপসীপাড়া ২৭ ও ফাইতং ইউনিয়নে ২৬টি সোলার হোম সিস্টেম প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।

উপজেলা বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, আজিজনগর ও সরই ইউনিয়নের প্রথম পর্যায়ের বরাদ্দের সোলার স্থাপন শেষ হয়েছে। লামা, ফাঁসিয়াখালী, ফাইতং, গজালিয়া ও রুপসীপাড়া ইউনিয়নে সোলার হোম সিস্টেম প্রকল্পের বাস্তবায়ন এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত শুরু হয়নি।

কাবিটা ও টিআর সাধারণ এবং বিশেষ বরাদ্দের দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রায় ৬০লক্ষ টাকা ব্যায়ে একইভাবে সোলার স্থাপন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। আলীকদম উপজেলায় প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের বরাদ্দ দ্বারা প্রায় আড়াইশত সোলার হোম সিস্টেম প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।

লামা উপজেলায় সোলার হোম সিস্টেম প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ক্লিন এনার্জি ফাউন্ডেশন (সিইএফ) এর সাথে এবং আলীকদম উপজেলায় রোরাল সোলার ফাউন্ডেশন (আরএসএফ) এর সাথে চুক্তি করা হয়েছে। চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে সোলার স্থাপনে ধীর-গতির অভিযোগ উঠেছে।

ফাইতং ইউনিয়নের পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সিনিয়র পাড়া কর্র্মী জাইতুন নাহার বলেছেন, ফাইতং এর কয়েকটি পাড়া কেন্দ্রে সোলার স্থাপনের জন্য তালিকা ভুক্ত করা হয়, কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হলেও ক্লিন এনার্জি ফাউন্ডেশন সোলার স্থাপনে যথাযথ পদক্ষেপ করেনি।

ফাইতং ইউপি চেয়্যারম্যান জালাল উদ্দিন বলেছেন, কবে নাগাদ ফাইতং এর বরাদ্দকৃত সোলার স্থাপন করা হবে তা তিনি জানেন না। সোলার স্থাপনকারী প্রতিষ্ঠান নিজ ইচ্ছা মত কাজ করে যাচ্ছে।

গজালিয়া ইউনিয়নের সচিব পরিতোষ বিশ্বাস জানিয়েছেন, গজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদে সিইএফ এর লোকজন কিছু সোলার নিয়ে রেখেছে। তবে তালিকা মোতাবেক স্থাপন করে নাই।

লামা ইউনিয়ন পষিদের চেয়্যারম্যান মিন্টু কুমার সেন জানিয়েছেন, গত মঙ্গলবার লামা ইউনিয়নের সোলার স্থাপনের জন্য সিইএফ এর লোকজন আসার কথা ছিল। কিন্তু আসে নাই। রুপসীপাড়া ইউপি চেয়্যারম্যান চাচিংপ্রু বলেছেন, রুপসীপাড়া ইউনিয়নের বরাদ্দকৃত সোলার এখনো স্থাপন করা হয় নি।

আলীকদম উপজেলা চেয়্যারম্যান আবুল কালাম জানিয়েছেন, আলীকদমের বিভিন্ন ইউনিয়নের জন্য বরাদ্দকৃত সোলার এখনো পুরোপুরো স্থাপন করে নাই।

ক্লিন এনার্জি ফাউন্ডেশনের রিজিওনাল ম্যানেজার জালাল উদ্দিন জানিয়েছেন, আমরা সোলার স্থাপনের কাজ করে যাচ্ছি। কাজ শেষ করতে আরও সময় লাগবে।

লামা ও আলীকদমের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তর্পণ দেওয়ান বলেছেন, লামায় সিইএফ এবং আলীকদমে আরএসএফ সোলার হোম সিস্টেম স্থাপনের চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান। এখনও তারা সোলার স্থাপন শতভাগ সম্পন্ন করতে পারে নি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন