লামা ও আলীকদমে জেএসএস’র সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধের দাবিতে ম্রো জনগোষ্ঠীর আহ্বানে অবরোধ কর্মসূচি পালিত
লামা প্রতিনিধি:
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ম্রো সম্প্রদায়ের আহ্বানে শনিবার লামা ও আলীকদমে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। জেএসএস ও ইউপিডিএফ কর্তৃক হত্যা, গুম, চাঁদাবাজিসহ সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধের দাবিতে এ অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়েছে বলে ম্রো কমান্ডার ইয়াংলক ম্রো জানিয়েছেন। অবরোধ চলাকালে ফাঁসিয়াখালী লামা-সড়ক, ফাঁসিয়াখালী-আলীকদম সড়ক, লামা-সুয়ালক সড়কসহ উপজেলা ২টির আন্তঃ সড়কগুলোতে কোন ধরণের যানবাহন চলাচল করেনি। এদিকে শনিবার ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য এর নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের নাগরিক প্রতিনিধি দল স্থানীয় জনগণের প্রতিরোধের মুখে লামা ও বান্দরবানে প্রবেশ করতে পারেনি।
লামা এবং আলীকদম উপজেলায় জেএসএস ও ইউপিডিএফ কর্তৃক হত্যা, অপহরণ চাঁদাবাজি ও সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপের অব্যাহত সন্ত্রাসী কার্যক্রমের কারণে এলাকার শান্তি ও সম্প্রীতি নষ্ট হচ্ছে মর্মে ম্রো নেতাসহ স্থানীয় জনসাধারণ অভিযোগ করেছেন। ম্রো নেতা ইয়াংলক , মেনরং ম্রো ও মাংবুচি ম্রো জানিয়েছেন, সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের আর সহ্য করা হবে না। ম্রো জনগোষ্ঠীর নেতৃত্বে লামা ও আলীকদমের পাহাড় থেকে সন্ত্রাসীদের বিতাড়িত করা হবে। শনিবার ন্যাপ ঐক্যের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি জিয়া উদ্দিন তারিক আলী, আইইডি নির্বাহী পরিচালক নুমান আহম্মদ খান, জীব বৈচিত্র্য বিষয়ক গবেষক পাভেল পার্থ সহ ১৪জনের একটি নাগরিক প্রতিনিধি দল জেএসএস’র সহযোগিতায় লামা উপজেলার কয়েকটি এলাকা সরেজমিন পরিদর্শনে আসেন।
ইউপি মেম্বার শহিদুজ্জামান জানিয়েছেন, জেএসএস’র সহযোগিতায় নাগরিক প্রতিনিধি দলের নামে বহিরাগত কিছু লোক লামার শান্তি ও সম্প্রীতি ধ্বংসের জন্য উস্কানিমূলক কার্যক্রম করতে লামায় আসে। সকালে ইয়াংছায় পৌঁছলে গণ প্রতিরোধের মুখে নাগরিক প্রতিনিধি দলের সদস্যরা লামা ছেড়ে যেতে বাধ্য হন। মুলত নাগরিক প্রতিনিধি দলের লামায় আগমনকে কেন্দ্র করেই অবরোধ কর্মসূচির সূত্রপাত ঘটে।
ন্যাপ ঐক্যের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, আমরা নাগরিক হিসেবে লামায় গিয়েছিলাম কিন্তু অবাঞ্চিত ঘোষণা করে আমাদেরকে লামায় প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। সেখান থেকে বান্দরবানে যেতে চেয়েছিলাম সেখানেও আমাদেরকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। যারা আমাদেরকে প্রবেশ করতে দেয়নি তারা রাষ্ট্রের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত। আলীকদম জোন কমান্ডার লে. কর্ণেল মাহববুর রহমান পিএসসি জানিয়েছেন, নিরাপত্তা বাহিনী বিষয়টি জানে না। সাধারণ মানুষ যারা এখানকার শান্তি চায় তারাই প্রতিরোধ করেছে।
অবরোধে লামা-আলীকদমের সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে অংশগ্রহণ করে। লাইনঝিরি এলাকায় চংবট ম্রো, উভাথোয়াই মার্মা সহ শতাধিক ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পিকেটিং করে। এছাড়া ইয়াংছা ক্যজু পাড়া বাজার, সাপমারা ঝিরি, ডিসি রোডসহ বিভিন্ন পয়েন্টে ম্রো জনগোষ্ঠী জনসাধারণ ১২ জাতির এক দাবি জেএসএস সন্ত্রাসীমুক্ত পার্বত্য ভূমি প্লে-কার্ড ও ফেস্টুন দিয়ে পিকেটিং করে।
লামা থানা অফিসার ইনচার্জ মো. আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, শনিবার সকাল থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।