লামা ও আলীকদমের ৫টি আশ্রয়াণ প্রকল্পের অবস্থা খুবই জরাজীর্ণ

 Lama Photo-1 copy

লামা প্রতিনিধি:

লামা ও আলীকদম উপজেলার ৫টি আশ্রায়ণ প্রকল্পের অবস্থা খুবই জরাজীর্ণ। আবাসিক শেডগুলো ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। পানীয়জলের জন্য স্থাপিত টিউবওয়েলগুলো ও নির্মিত টয়লেটগুলো দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে অকেজো অবস্থায়। আশ্রায়ণ প্রকল্পে পুনর্বাসিত পরিবারগুলোর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা হয়ে পড়েছে দুর্বিষহ। নির্মিত আশ্রায়ণ প্রকল্পগুলোর নামে ভূমি না থাকায় আশ্রায়ণ প্রকল্পের উপজাতিদের নিয়ে সমিতির গঠন ও রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ হয়ে আছে।

রুপসীপাড়া ইউনিয়নের শিলেরতুয়া আশ্রায়ণ প্রকল্পের নিবাসী জুলেখা বেগম জানিয়েছেন, ৩ ছেলে ও ১ মেয়ে নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছি। সন্তানদের আহার ও কাপড়-চোপড় দিতে পারি না। আশ্রায়ণ প্রকল্পের শেড ও ফ্লোরগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। ৯টি টিউবওলের সবগুলোই ব্যবহার অনুপযোগী ও টয়লেটগুলো নষ্ট। ড্রেন না থাকায় বর্ষাকালে পাহাড়ের পানিতে ফ্লোরগুলো নিমজ্জিত হয়। অপর উপজাতি ফুলবানু আক্তার জানিয়েছেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নে সমবায় বিভাগ ঋণ দেওয়ার কথা থাকলেও আশ্রায়ণ প্রকল্পে এ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়নি।

Lama Photo-2 copy

ইউপি চেয়ারম্যান চাছিংপ্রু জানিয়েছেন, শিলেরতুয়া আশ্রায়ণ প্রকল্পের শেডগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। এখানকার নিবাসী ৫০টি পরিবারের মধ্যে বর্তমানে ২৩ টি পরিবার সেখানে রয়েছে।লামা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিন্টু কুমার সেন জানিয়েছেন, মেরাখোলা আশ্রায়ণ প্রকল্পে ১৩০টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হলেও তাদের আর্থসামাজিক উন্নয়নে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ১৯৯৮ সনে শেডগুলো নির্মাণের পর কোন ধরনের মেরামত করা হয়নি।গজালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বাথোয়াইচিং মার্মা জানিয়েছেন, আশ্রায়ণ প্রকল্পে পুনর্বাসিত লোকজনের কষ্ট আরও বেড়ে গেছে।

আজিজনগর ইউপি চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন জানিয়েছেন, বসবাসের উপযোগীতা না থাকায় আজিজ নগরের আশ্রায়ণ প্রকল্পে বর্তমানে কোন পুনর্বাসিত পরিবার নেই।আলীকদম ইউপি চেয়্যারম্যান মো. জামাল উদ্দিন জানিয়েছেন, আমতলী আশ্রায়ণ প্রকল্পটি জরাজীর্ণ হওয়ায় সেখানে বসবাস অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। পুনর্বাসিত সকল পরিবার বর্তমানে আশ্রায়ণে নেই।লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার খিন ওয়ান নু বলেছেন, আশ্রায়ণ প্রকল্পগুলোর নামে কোন ভূমি নেই।

পার্বত্য চট্ট্রগ্রামে বন্দোবস্তি কার্যক্রম বন্ধ। পার্বত্য চট্ট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় আশ্রায়ণ প্রকল্পের ভূমি বন্দোবস্তির বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করার কথা রয়েছে। ভূমি সমস্যার কারণে আশ্রায়ণে পুনর্বাসিত পরিবারগুলোর আর্থসামাজিক উন্নয়নে সরকারের গৃহীত কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না। তাছাড়া, শেডগুলো টিনদ্বারা নির্মিত হওয়ায় গরমে উপজাতিরা বসবাসের উপযোগীতা হারিয়েছে। অনেক আশ্রায়ণে মদ, গাঁজাসহ অসামাজিক কার্যকলাপ চলছে।বান্দরবান জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক বলেছেন, আশ্রায়ণ প্রকল্পের উন্নয়নে একটি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের চিন্তা ভাবনা চলছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন