লামায় মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠায় নেই অগ্রগতি

লামা প্রতিনিধি:

আলীকদম উপজেলায় নারী শিক্ষার উন্নয়নে গত ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে লামা মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। কিন্তু বর্তমানে থেমে আছে মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠা ও বাস্তবায়নের সকল কার্যক্রম। সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামসুন নাহার সুমির সভাপতিত্বে মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠার প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হবার আড়াই বছর অতিবাহিত হলেও দ্বিতীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়নি। সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামসুন নাহার সুমির বদলি জনিত কারণে লামা হতে চলে গেলে থেমে যায় মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠার সকল উদ্যোগ। বর্তমানে থেমে আছে শিক্ষক/কর্মচারী নিয়োগ, শিক্ষার্থী ভর্তিসহ অন্যান্য কার্যক্রম।

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, লামা ও আলীকদম উপজেলার নারী শিক্ষার উন্নয়নে মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠার বিকল্প নাই।লামার নেতৃবৃন্দ ও মানুষ আমার কথা রাখল না। বার বার বলার পরেও মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছেনা। মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হলে সরকারি ভাবে সব ধরণের সহযোগিতা প্রদান করা হবে।

লামা ও আলীকদম উপজেলার নারী শিক্ষার উন্নয়নে স্বতন্ত্র উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান “লামা মহিলা কলেজ” প্রতিষ্ঠার জন্য ২০১৫ সালের ২১ জানুয়ারি ১ম সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য পার্বত্য চট্ট্রগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, জেলাপ্রশাসক, পুলিশসুপার, অলীকদম জোনকমান্ডার, লামা ও অলীকদম উপজেলা চেয়ারম্যান এবং বিভাগীয় বনকর্মকর্তাকে নিয়ে ৮ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্ঠা কমিটি গঠন করা হয়।

একই সভায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে আহ্বায়ক, সাবেক উপজেলা চেয়্যারম্যান আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইসমাইলকে যুগ্ম আহ্বায়ক ও লামা আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ এমই মতিয়াজকে সদস্য সচিব করে সাত সদস্য বিশিষ্ট পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। লামা উপজেলার সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামসুর নাহার সুমিকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ কমিটি গঠন করা হয়। কলেজের অর্থনৈতিক কার্যক্রম যোগান দেয়ার জন্য লামা উপজেলা সাবেক চেয়্যারম্যান আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইসমাইলকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট অর্থ যোগান কমিটি গঠন করা হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামসুন নাহার সুমি লামা হতে বদলি হয়ে যাওয়ার পর মধ্যখানে সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার লামায় যোগদান করেন। তিনি কলেজ প্রতিষ্ঠার পরবর্তি কোন কার্যক্রম গ্রহণ করেননি। বর্তমান উপজেলা নির্বাহী অফিসার খিংওয়ান নু লামায় যোগদান করার পর তিনিও কলেজ প্রতিষ্ঠার কোন উদ্যোগ নেন নি।

লামা পৌরসভার মেয়র মো. জহিরুল ইসলাম বলেছেন, লামার জন্য মহিলা কলেজ প্রয়োজন। নারীদের জন্য আলাদা উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় অনেক শিক্ষার্থী মাধ্যমিক পর্যায় থেকে ঝরে যায়।

লামা সদর ইউপি চেয়্যারম্যান মিন্টু কুমার সেন জানিয়েছেন, পিছিয়ে পড়া লামার নারী শিক্ষার উন্নয়নে মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠার বিকল্প নাই।

কলেজ প্রতিষ্ঠা কমিটির সদস্য সচিব এ এম ইমতিয়াজ বলেছেন, বর্তমান উপজেলা নির্বাহী অফিসার খিনওয়ান নু কলেজ প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সভা আহ্বান করার জন্য বলেছেন।

লামা উপজেলার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইসমাইল বলেছেন, লামায় মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠার বিষয়ে পার্বত্য চট্ট্রগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি আন্তরিক। কিন্তু কিছু নেতৃবৃন্দ প্রতিমন্ত্রীর সামনে মহিলা কলেজের পক্ষে কথা বলে আবার পিছনে বিপক্ষে কথা বলে।

বর্তমান উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠা পরিচালনা কমির্টি সভাপতি খিনওয়ান নু বলেছেন, আমি লামায় যোগদান করার পর মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠার ফাইল এখনও দেখিনি। যে কারণে মহিলা কলেজের বিষয়টি আমি ক্লিয়ার না। সামনে মিটিংয়ে বসে এ ব্যপারে খোঁজ খবর নিব।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন