লামায় নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছেন ধর্ষিতা

লামা প্রতিনিধি:

বান্দরবানের লামা উপজেলার সীমানা সংলগ্ন কক্সবাজার জেলার চকরিয়ার অর্ন্তগত বমুবিলছড়ি ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড পূর্ব বড়ুয়া পাড়ার কাকলি বড়ুয়া (১৭), (ছদ্মনাম) ধর্ষণের শিকার হয়েছে। চকরিয়া থানা মামলা নিতে অনিহা প্রকাশ করলে কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করে ধর্ষিতার বড় ভাই। এদিকে ধর্ষক নারায়ণ দে (৩৫) ও তার আত্মীয়স্বজন এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় মামলা তুলে নিতে প্রতিনিয়ত প্রাণনাশের হুমকিসহ ডাকাতির মামলা জড়িয়ে আইনী হয়রাণী করার হুমকি দিচ্ছে ধর্ষিতার পরিবারকে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ধর্ষক নারায়ণ দে কাকলির পার্শ্ববর্তী গ্রামে বসবাস করে। দীর্ঘদিন যাবৎ রাস্তাঘাটে চলাফেরার সময় নারায়ণ নমিতাকে যৌন ইঙ্গিতসহ নানান কুপ্রস্তাব দিত। উক্ত বিষয়ে নমিতা মা বাবাকে জানায়। নমিতার বাবা পেশায় একজন দরিদ্র কৃষক। চলতি তামাক মৌসুমে নমিতার বাবা-মা দু’জনেই চাষ করতে পার্শ্ববর্তী লামা উপজেলার দূর্গম লুলাইং এলাকায় যায়। বাড়িতে তিন ভাই নিয়ে থাকত সে।

গত ১৮ এপ্রিল বড় ভাই ঘরে না থাকায় বাড়ি খালি পেয়ে সুযোগ বুঝে রাত ১১টায় কৌশলে দরজা খুলে ঘরে প্রবেশ করে নারায়ণ। কাকলির অমতে জোর পূর্বক সম্ব্রম ছিনিয়ে নেয়। বড় ভাই রাজমিস্ত্রি সজল বড়ুয়া (২৩) বাড়িতে ফিরে বোনের চিৎকার শুনে দৌড়ে এসে উদ্ধার করে।

এ সময় আশপাশের লোকজন হাতেনাতে ধর্ষককে ধরে ফেলে। সে সময় নারায়ণের নিকট আত্মীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দরা মেয়েকে স্ত্রীর মর্যাদা দিবে বলে মুচলেকা দিয়ে ধর্ষককে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ধর্ষক নারায়ন কাকলিকে বিবাহ করতে অস্বীকার করে। এদিকে কাকলি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। নিরুপায় হয়ে মেয়ের পরিবার চকরিয়া থানায় গেলে থানা মামলা নিতে অনীহা প্রকাশ করায় মেয়ের বড় ভাই সজল বাদী হয়ে কক্সবাজার নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালে মামলা করে। মামলা নং ৫২৯/১৬।

আদালত পুলিশকে মামলাটি আমলে নিতে বলে। ১ মে চকরিয়া থানা মামলাটি আমলে নিলেও অদ্যাবধী আসামী গ্রেফতারের কোন তৎপরতা দেখা যায়নি। এদিকে বহাল তবিয়তে ধর্ষক নারায়ণ দে লামা বাজারের আলী মিয়া শপিং মলে ইলেকট্রনিক্স দোকান পরিচালনা করছে। স্থানীয় কিছু নেতার সহায়তায় ও টাকার জোরে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে ধর্ষক। অপরদিকে লোকলজ্জা ও মান সম্মানের ভয়ে অন্ধকার জীবন বেঁচে নিয়েছে কাকলি। মামলার বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত নারায়ণ দে-এর ফোনে একাধিকবার ফোন করলে তার মোবাইল সুইচ অফ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, মামলাটি আদালতে করেছে। আদালত মামলাটি আমলে নিতে বলেছে আমরা মামলা নিয়েছি। ডাক্তারি পরীক্ষা নিরীক্ষা রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত আসামী গ্রেফতার করা যাবে না।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন