লক্ষ্মীছড়িতে অপহরণের ৪ দিন পরেও মিলেনি অমল চাকমার সন্ধান

লক্ষ্মীছড়ি:

খাগড়াছড়ি জেলার লক্ষ্মীছড়ি উপজেলায় মামা ভাগিনা অপহরণ ঘটনার এখনো কোনে সুরাহা হয়নি। ঘটনার ৪ দিন পার হলেও অপহৃত অমল চাকমার কোনো খোঁজ নেই। তবে ভাগিনা প্রদীপ চাকমা ফিরে আসার খবর নিশ্চিত করেছে পরিবার ও পুলিশ। ধারনা করা হচ্ছে অমল চাকমাকে সন্ত্রাসীরা অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলেছে। এ খবর কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে নিশ্চিত করা না হলেও অমল চাকমা তাহলে কোথায় এমন প্রশ্ন এলাকাবাসীর।

গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সমুড় পাড়ার বিজয় কুমার চাকমার ছেলে অমল বিকাশ চাকমা (কিনাধন) উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের মূখে অপহরণ হন। যদিও পরিবারের পক্ষ হতে এ ঘটনা অস্বীকার করা হয়েছে। অপহরণ না অন্য কোনো ঘটনা থাকতে পারে তাও নিশ্চিত হওয়া যায় নি কোনো সূত্র থেকে। পুলিশের কাছেও পরিবার কিংবা এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ করা হয়নি।

লক্ষ্মীছড়ি থানার অফিসার্স ইনচার্জ আব্দুর রকিব বলেন, অপহরণের ঘটনা শুনেছি। অমল চাকমা নিখোঁজের বিষয়টি সঠিক কিনা যাচাই বিাছাই করা হচ্ছে। ভাগিনা প্রদীপ চাকমা থানায় উপস্থিত হয়ে অপহরণ হয়নি বলে পুলিশের কাছে বক্তব্য দিয়েছে বলে তিনি জানান।

একটি সূত্রে জানা গেছে, অমল চাকমাকে অপহরণ করে সন্ত্রাসীরা মুক্তিপণ হিসেবে সাড়ে ৫ লাখ টাকা। পরে তা কমিয়ে ৪ লাখ টাকা দাবি করে। এই নিয়ে দেন দরবার চলে ঘটনার পর থেকে রোববার গভীর রাত পর্যন্ত। পরিবারের সদস্যরা অমল চাকমার সাক্ষাত চেয়েও ব্যার্থ হন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। সোমবার দিনভর আলোচনার কেন্দ্র বিন্দু ছিল অমল চাকমা তাহলে নেই? কেনো হত্যা করা হলো? অপরাধ করলে শাস্তি দেয়ার অনেক পথ রয়েছে এভাবে প্রাণ দিতে হবে কেনো এমন প্রশ্নই ছিল সচেতন মহলের।

সূত্রটি জানা যায়, সন্ত্রাসীরা প্রচণ্ড নির্যাতন চালায় অমল চাকমার উপর। নির্যাতনেই তার মৃত্যু হয়। লাশ আনার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি জানালেও সে চেষ্টাও ব্যার্থ হয়। তবে এ সবের কোনো কিছু স্বীকার করেনি অমলের পরিবার। তার স্ত্রী ঝর্ণা চাকমা (মিলাবো) সাংবাদিকদের জানান, গত শুক্রবার চিকিৎসার জন্য ফটিকছড়িতে গেলে আর ফিরে আসেনি। অমলের পিতা বিজয় কুমার চাকমা জানান, আমি নিজেই অসুস্থ্য কার খবর রাখবো এর বেশি আর কিছুই বলেত রাজি হননি তিনি।

জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) লক্ষ্মীছড়ি শাখার আহ্বায়ক যতিশ দেওয়ান এ বিষয়ে মিডিয়া কর্মীর সাথে সরাসরি বক্তব্য দিতে না চাইলেও এ ধরনের ঘটনার তীব্র নিন্দা প্রকাশ করে বলেন, অপহরণ কিংবা হত্যার ঘটনা কখনোই কাম্য নয়, এটা নিন্দনীয়।

অমল চাকমা অপহরণ এবং হত্যা করে লাশ গুম করার ঘটনার অভিযোগের তীর ইউপিডিএফ’র দিকে হলে তা সম্পুর্ণ অস্বীকার করেছেন সংগঠনটির নেতারা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপিডিএফ’র কেন্দ্রীয় মুখপাত্র নিরন চাকমা সাংবাদিকদের বলেন, লক্ষ্মীছড়িতে কোনো ধরনের অপহরণের সাথে ইউপিডিএফ জড়িত নয়। যারা এসব কথা বলেছেন তারা ইউপিডিএফ’র বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এক প্রশ্নের জবাবে নিরন চাকমা বলেন, লক্ষ্মীছড়িতে কি শুধু ইউপিডিএফ আছে? ওখানে জেএসএস আছে এবং তাদের সংস্কার গ্রুপও স্বক্রীয় আছে।