Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

রোহিঙ্গা ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদে আবারও আলোচনার উদ্যোগ

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

বিশ্বের প্রভাবশালী রাষ্ট্রসহ সাত দেশ জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টনিও গুয়াতেরেজকে অনুরোধ করেছেন, তিনি যেন মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর চলমান ‘জাতিগত নিধন’ নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করেন। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, আলোচনার দিনক্ষণ ঠিক করতে শলা-পরামর্শ চলছে। এর আগেও দুই দফায় রাখাইনের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে পরিষদে আলোচনা হয়েছে। সবশেষ আলোচনার পর ঐক্যমতের ভিত্তিতে একটি বিবৃতিও দিয়েছে জাতিসংঘের এই নিয়ন্ত্রক সংস্থা। সেই প্রস্তাবে সহিংসতা বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়। সমালোচনা করা হয় অভিযানের ওপর বেসামরিকদের ওপর মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগের।

এএফপির খবর অনুযায়ী, পরিষদের স্থায়ী-অস্থায়ী ৭ সদস্য ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, মিসর, কাজাখস্তান, সেনেগাল এবং সুইডেন জাতিসংঘ মহাসচিবকে এই আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে। আসছে বৈঠকে সভাপতিত্ব করবে ইথিওপিয়া। নিরাপত্তা পরিষদের ইথিওপিয়ান কাউন্সিল-এর বরাত দিয়ে এএফপি জানিয়েছে, ওই আলোচনার জন্য সম্ভাব্য দিনক্ষণ নির্ধারণে শলাপরামর্শ চলছে। আর ব্রিটিশ বার্তা রয়টার্স জানিয়েছে, তারা যেন আগামী সপ্তাহের অধিবেশনে মহাচিবের ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে এমন আহ্বান জানিয়েছে ওই সদস্য দেশগুলো।

রাখাইন পরস্থিতি নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের প্রথম আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় আগস্টের শেষ সপ্তাহে। সেখানকার ‘জাতিগত নিধন’ নিয়ে আলোচনার জন্য যুক্তরাজ্য ২৯ আগস্ট (মঙ্গলবার) আগ্রহ প্রকাশ করে এবং ৩০ আগস্ট (বুধবার) আলোচনার দিন ধার্য হয়। রুদ্ধদ্বার বৈঠকে রাখাইন ও রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। পরিষদের সদস্যরা মিয়ানমারের এই দুইপক্ষের মধ্যে সহিংসতা বন্ধ, মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখা ও রাখাইন পরামর্শক কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব দেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স সে সময় খবর দেয়, পরিস্থিতি খারাপ হলে ভবিষ্যতে আবার আলোচনা হতে পারে।

রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে পরিষদের দ্বিতীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় চলতি বছরে। ১৪ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্ক সময় বুধবার দুপুরে (বাংলাদেশ সময় বুধবার দিবাগত মধ্যরাত) ৯ বছর পর নিরাপত্তা পরিষদের সব সদস্যের ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে এক বিবৃতি দেওয়া হয়। বিবৃতিতে চলমান সহিংসতায় চরম উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে সেখানকার সহিংসতা বন্ধেরও আহ্বান জানানো হয়।

জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত ম্যাথিউ রাইক্রফট সে সময় এক বিবৃতিতে বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগের ঘটনায় পরিষদ উদ্বেগ প্রকাশ করে এর নিন্দা ও তা অবিলম্বে বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। রাখাইন রাজ্য ও রোহিঙ্গাদের ওপর বিপর্যয় নেমে এসেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সহিংসতা বন্ধের পাশাপাশি নিরাপত্তা পরিষদের ওই বৈঠকে রাখাইনের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা, আইনশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা, নাগরিকদের সুরক্ষা, সামজিক ও আর্থিক কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক করা এবং শরণার্থী সমস্যা নিরসনের আহ্বান জানানো হয়েছিল। পরিষদের বিবৃতিতে শরণার্থীদের সহায়তা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানানো হয় এবং জাতিসংঘ ও অন্যান্য সংস্থাগুলোকেও এ বিষয়ে বাংলাদেশকে সহায়তা দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। বৈঠকে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা রাখাইন পরিস্থিতির একটি দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের বিষয়ে একমত হয়। কফি আনান কমিশনের প্রতিবেদন বাস্তবায়নের আহ্বান জানানো হয় সেই বৈঠকে।

গত পর্শু বৃহস্পতিবার জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের দূত নিকি হ্যালি জানান, মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিমরা যে ট্র্যাজেডির শিকার হচ্ছে তাতে উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান বন্ধ করতে মিয়ানমারের নেতা অং সান সু চি ও দেশটির সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের ‘চাপ’ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। সাংবাদিকদের নিকি হ্যালি বলেন, ‘আমরা শুধু তাকে (সু চি) চাপ দিচ্ছি না, আমরা সেনাবাহিনীকেও চাপ দিচ্ছি।’ তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ চেয়ার‍্যামন জোসেফ ডানফর্ড মিয়ানমারের সেনাপ্রধানকে বলেছেন ‘এমনটি চলতে পারে না’।

এর আগে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘের দৃঢ় ও দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে ট্রাম্পের এই বক্তব্য তুলে ধরেন দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। মাইক পেন্স বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও আমি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে এই সংকটের ইতি টানতে দৃঢ় ও দ্রুত পদপেক্ষ নেওয়া এবং রোহিঙ্গা মানুষের প্রয়োজনের সময় তাদের জন্য আশাবাদ নিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।

২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে দেশটির সেনাবাহিনীর তথাকথিত ক্লিয়ারেন্স অপারেশন শুরু হওয়ার পর এ পর্যন্ত ৪ লাখ ২০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। জাতিসংঘ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এই অভিযানকে জাতিগত নিধন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

 

সূত্র্র: বাংলা ট্রিবিউন

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন