Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

রোহিঙ্গাদেরকে ফিরিয়ে নিতে আর্ন্তজাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার

 

উখিয়া প্রতিনিধি:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মিয়ানমারের আরাকান (রাখাইন) রাজ্য থেকে সীমাহীন নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। মানবিক কারণে আমরা তাদেরকে আশ্রয় দিয়েছি। বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া এসব মানুষগুলোর প্রতি মানবিক আচরণের নির্দেশ দিয়ে মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন বন্ধের আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী।

মিয়ানমার সরকার বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের দ্রুত ফিরিয়ে নেবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের সাথে অামরা যুদ্ধ চাইনা। শান্তিপূর্ণভাবে সংকট সমাধান করতে হবে। তিনি আরও বলেন, প্রতিবেশী দেশের সাথে আমরা শান্তিপুর্ণ অবস্থান চাই। কিন্তু মিয়ানমারের কোন অন্যায় আচরণ বরদাস্ত করা হবেনা বলে প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন।

১২ সেপ্টেম্বর দুপুরে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরির্দশন শেষে সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একথা বলেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বজন হারানো বেদনা আমি বুঝি। মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে সীমাহিনভাবে নির্যাতিত হচ্ছে রোহিঙ্গারা। ’৭১ সালে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী বাংলাদেশে বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দিয়ে, মানুষ খুন করে মানবতা বিরোধী অপরাধ করেছিল। এখন পার্শ্ববর্তী মিয়ানমারের (রাখাইন) আরাকান রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। নারী-শিশু নির্বিশেষে নির্বিচারে খুন, গুম ও নির্যাতন করা হচ্ছে।

গোটা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী আজ বিপর্যস্ত। গুলি করে, আগুনে পুড়িয়ে মানুষ মেরে মিয়ানমার সরকার মানবতা বিরোধী কাজ করছে। ৭ লাখ মত রোহিঙ্গা নারী-শিশু-পুরুষ বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। মানবিক কারণে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে।

বিশ্ব সম্প্রদায়ের মাধ্যমে মিয়ানমারের উপর চাপ প্রয়োগ করে যত দ্রুত সম্ভব তাদেরকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠাবার ব্যব্স্থা করা হবে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

গুলিবিদ্ধ, আহত ও নির্যাাতিত এবং স্বজন হারা রোহিঙ্গাদের দেখে শেখ হাসিনা আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেন, স্বজন হারানোর বেদনা আর কেউ না বুঝলেও আমি বুঝি। আমি আপনাদের পাশে আছি। আপনাদের পরিচয় পত্র প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশে অবস্থান সহজ করা হবে। আপনাদের বাসস্থান, খাদ্য ও নিরাপত্তার ব্যাপারে সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে।

মিয়ানমারের নাগরিক হওয়া সত্তেও মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত রেখে, নাগরিক অধিকার না দিয়ে মিয়ানমার সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘন করে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ের পাশাপাশি খাদ্য, চিকিৎসাসহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিয়ে যাবে বাংলাদেশ।

তিনি সুষ্ঠু ত্রাণ বিতরণ ও রোহিঙ্গাদের পুঁজি করে কিউ বা কোন গোষ্ঠী যেন নিজেদের ভাগ্য গড়ার সুযোগ না পায় সেদিকে নজর রাখতে হবে। নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী উখিয়া-টেকনাফ তথা কক্সবাজার এর জনগণকেও ধন্যবাদ জানান।

গত ২৪ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের আরাকান (রাখাইন) রাজ্যে মিয়ানমার সেনা-পুলিশ ও তাদের সহযোগী মগদস্যুদের গণহত্যার শিকার হয়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে ৮ লাখের মত রোহিঙ্গা মুসলিম নারী-শিশু-পুরুষ।

বাংলাদেশ এই বিশাল সংখ্যক রোহিঙ্গা শরনার্থীদের আশ্রয় দিয়ে মানবিকতার পরিচয় দিয়ে বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে।

রোহিঙ্গা বিষয়ে আন্তর্জাতিক বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ ও মিয়ানমারের উপর চাপ বাড়াতে এবং নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের প্রতি সমবেদনা ও সহানুভূতি জানাতে ১২ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মিয়ানমারের সেনা ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের দেখতে গতকাল মঙ্গলবার কক্সবাজারের উখিয়ায় আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সকাল ১০ টায় প্রধানমন্ত্রী ঢাকা থেকে বিশেষ ফ্লাইটে কক্সবাজার বিমান বন্দরে অবতরণ করেন। সেখান থেকে সড়ক পথে গাড়ি বহর নিয়ে মেরিন ড্রাইভ সড়ক দিয়ে সাড়ে এগারটায় উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পরিদর্শনে যান তিনি।

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর আগমনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছি বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কক্সবাজার থেকে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পর্যন্ত সর্বত্র ছিল নিছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভেতরে তৈরী করা হয় বক্তৃতা মঞ্চ। প্রধানমন্ত্রী ক্যাম্পে পৌঁলে কঠোর নিরাপত্তার মাধ্যমে তাঁকে স্বাগত জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামন খান কামাল, সেতু মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, ত্রাণ ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চেীধুরী মায়া, প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহেনাসহ আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

সেখানে পৌঁছেই প্রধানমন্ত্রী ক্যাম্পে স্থাপিত হাসপাতালে বিভিন্নভাবে আহত রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশুদের দেখতে যান। এসময় প্রধানমন্ত্রী তাদের সাথে কথা বলেন, তাদের প্রতি সহানুভুতি ও সমবেদনা জানান। বক্তব্য শেষ  করে প্রধানমন্ত্রী কয়েকজন রোহিঙ্গা শরনার্থীদের হাতে ত্রাণ সামগ্রী তুলে দেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন