রাষ্ট্রভাষা হিসাবে আমাদের সকলকে বাংলা ভাষা শিখতে হবে- সন্তু লারমা

1483712020

রাঙামাটি প্রতিনিধি :

পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ শিক্ষা চাই- শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে চাই। আধুনিক বিজ্ঞান সম্মত শিক্ষা পেতে চাই। কিন্ত বাস্তবতা হলো যে, শিক্ষার সাথে জড়িয়ে আছে তাদের অর্থনীতি, যুক্ত আছে যে শাসনতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনা, যক্ত আছে সামাজিক তার বাস্তবতা বলে মন্তব্য করেছেন রাঙ্গামাটি পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা।

শুক্রবার জুরাছড়ি উপজেলায় বনযোগীছড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সুবর্ণ জয়ন্তী ও পূর্নমিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে এখনো বহুমূখী শাসন ব্যবস্থা চলছে। সেই বহু মূখী শাসন ব্যবস্থার মধ্যে শিক্ষা ব্যবস্থা এগিয়ে যেতে পারে না। আজকের পার্বত্য অঞ্চল বুকে সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক শাসনতান্ত্রিক, অর্থনৈতিকসহ তথা গোটা জীবন ধারায় আমরা দেখতে পায় অনেক হতাশা, নিরাশা, ভয়ভীতি সন্ত্রস অনেক অকে কিছু দেখতে পায়। পার্বত্য অঞ্চলের যে শাসন ব্যবস্থায় যথাযথ শিক্ষা পাওয়া যায়না। পার্বত্য অঞ্চলের যে বাস্তবতা পাহাড়ে আমরা যারা বসবাস করি জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে যারা বসবাস করি এই যে বাস্তবতা বিভিন্ন প্রশ্নের মূখোমুখি করে।

তিনি বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের সমস্যা সমাধানের জন্য পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই চুক্তির মধ্যে দিয়ে এই অঞ্চলের চারটি আইন প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। তিনটি পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন এবং একটি পার্বত্য অঞ্চলিক পরিষদ আইন। তার পাশাপাশি মন্ত্রীপরিষদের একটি শাখার বর্ধিত পার্বত্য বিষয়ক মন্ত্রনালয়। পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদ ও তিনটি পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন অধ্যাবধি কার্য্যকর হতে পারে নাই। এ অঞ্চলে বহুবিধ সমস্যা রয়েছে।

সন্তু লারমা বলেন, পার্বত্য জেলা পরিষদে মাধ্যমিক বিদ্যালয় বিভাগ নামে মাত্র হস্তান্তর করা হয়েছে। পার্বত্য চুক্তি অনুযায়ী গুরুত্ব পূর্ন বিষয় গুলো বাস্তবায়িত হতে পারেছেনা। ফলে সাধারণত আইন শৃংখলার মধ্যে নানাবিধ প্রশ্ন জড়িয়ে রয়েছে। আজকে সেব প্রশ্নে মিমাংসা করা সম্ভব নয় তাহলে পার্বত্য অঞ্চলের শিক্ষা অঙ্গন এগিয়ে যেতে পারবে না-শিক্ষা ব্যবস্থাকে এগিয়ে নিতে পারবো না। পার্বত্য অঞ্চলের শিক্ষা ব্যবস্থাকে এগিয়ে নিতে হলে পার্বত্য চুক্তি যথাযথ বাস্তবায়ন হতে হবে। এ অঞ্চলের আইন শৃংখলা, প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিত্বশীল মানুষের হাতে নের্তৃত্বে যেতে হবে।

পার্বত্য চট্টগ্রামে ইউএনডিপির পরিচালিত প্রকল্পর ২২৭টি বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পুণরায় চালু- অনেক দেরীতে হলেও সরকার সে ব্যবস্থা করতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে অনেক যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বাকী যে গুলো রয়েছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সন্তু লারমা বলেন, আমাদের আজকে বাংলা ভাষা শিখতে হবে। বাংলা আমাদের রাষ্ট্র ভাষা কাজেই এ ভাষা আমাদের শিখতে হবে। আন্তর্জাতিক ভাষা হিসাবে ইংলিশ শিখতে হবে। এরপর যদি কেউ অন্য ভাষা শিখতে চাই শিখবে।

জুরাছড়ি উপজেলায় বনযোগীছড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৫০ বছর পূর্তি সুবর্ণ জয়ন্তী ও পূর্নমিলনী উপলক্ষে সকালে র‌্যালী ও জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও উদ্বোধনী সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়। আলোচনা সভায় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি সুরেশ কুমার চাকমার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জোন অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল কে এম ওবায়দুল হক, উপজেলা চেয়ারম্যান উদয় জয় চাকমা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃহারুন রশিদ, শান্তশীল দেওয়ান ট্রেষ্টতের আহ্বায়ক বিকাশ দেওয়ানসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

এ সময় বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেঘবর্ণ চাকমা, প্রাক্তন শিক্ষার্থী কৃষ্ণা চাকমা, প্রিয় কুমার চাকমা, শ্রীলা তালুকদার প্রমূখ।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন