রামু উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের বিতর্কিত প্রধান শিক্ষক ছৈয়দ করিম সাময়িক বরখাস্ত

 

ramu pic soyad karim 15.01

প্রেস বিজ্ঞপ্তি:

রামু উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের বহু বিতর্কিত প্রধান শিক্ষক ছৈয়দ করিমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। রবিবার সকালে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভা শেষে এ সিদ্ধান্তের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট শিক্ষক, উপজেলা প্রশাসন, ব্যাংকসহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়। সেই সাথে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক এম জয়নাল আবেদিনকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বভার প্রদান করা হয়।

রামু উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোহেল সরওয়ার কাজল প্রধান শিক্ষক ছৈয়দ করিমকে সাময়িক বরখাস্ত করার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

তিনি জানিয়েছেন, নৈতিক স্খলন, বিদ্যালয়ের অফিস সহকারীকে শারীরিক নির্যাতন, শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে দলাদলি সৃস্টি ও শৃংখলা বিরোধি কর্মকাণ্ড এবং আর্থিক অনিয়মের কারণে বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চাকুরি বিধি ১১ এবং ১৩ (১) ও (২) ধারা মোতাবেক সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে প্রধান শিক্ষক ছৈয়দ করিমকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে।

এক লিখিত আদেশে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের কাছে যাবতীয় রেজিস্ট্রার, ক্যাশবই, ব্যাংক হিসাবের কাগজপত্র ও প্রতিষ্ঠানের সকল চাবি হস্তান্তরের জন্য বরখাস্ত হওয়া শিক্ষক ছৈয়দ করিমকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি সোহেল সরওয়ার কাজল জানিয়েছেন, ইতিপূর্বে নারী কেলেংকারী সহ নানা অনিয়মের অভিযোগে রামুর সচেতন জনতা প্রধান শিক্ষক ছৈয়দ করিমের বিরুদ্ধে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহা পরিচালকের কাছে অভিযোগ দেন। এরই প্রেক্ষিতে ১৪ ডিসেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর চট্টগ্রাম’র আঞ্চলিক উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আজিজ উদ্দিন বিদ্যালয়ে এসে এসব অভিযোগ তদন্ত করেন।

মহা পরিচালকের কাছে দেয়া লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০০৬ সালে বিদ্যালয়ের হোস্টেলে থাকা এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন প্রধান শিক্ষক ছৈয়দ করিম। ওই ঘটনায় ধর্ষিতার অভিভাবক বাদি হয়ে রামু থানায় মামলা (জি আর ৫৭/০৬) করেন। ওই সময় পুলিশ প্রধান শিক্ষক ছৈয়দ করিমকে গ্রেফতার করেছিলো এবং তাকে প্রধান শিক্ষকে পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরে নানা কৌশলে ছৈয়দ করিম এ ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে পূনরায় বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। এছাড়া সম্প্রতি ছৈয়দ করিম বিদ্যালয়ের এক হোস্টেল সুপার এবং একাধিক ছাত্রীর সাথে অনৈতিক সর্ম্পকে জড়িয়ে ফের আলোচনায় চলে আসেন।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বিদ্যালয়ের আভ্যন্তরিন পরীক্ষার প্রশ্ন নির্ধারিত সময়ের পূর্বে খুলে তিনি তার সাথে সম্পর্কে জড়ানো শিক্ষার্থীদের সরবরাহ করতেন। ইতিপূর্বে এমন অভিযোগে তাকে কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতিও দেয়া হয়েছিলো।

বিতর্কিত এ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে রামুতে প্রতিবাদ সভা, মানববন্ধন এবং পোস্টার’র মাধ্যমে প্রতিবাদি প্রচারনা চালানো হয়েছে।

রামুর সচেতন মহল কক্সবাজারের ঐতিহ্যবাহি এ নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ এবং ছাত্রীদের সম্ভ্রম রক্ষায় প্রধান শিক্ষক ছৈয়দ করিমকে অব্যাহত/অপসারণ করে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন