রামুর কচ্ছপিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র স্থাপনে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ, জনমনে ক্ষোভ

অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে জনগনের দাবির প্রেক্ষিতে বহুল প্রতীক্ষিত এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র অনুমোদন চূড়ান্ত হতে চলেছে। এমন মূহুর্তে একটি চক্র তা বাতিলের জন্য ষড়যন্ত্র শুরু করায় এলাকায় জনমনে চরম ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে বলে জানা যায়।

কচ্ছপিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনিল কান্তি শর্মা বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এ বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র করা এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। সম্প্রতি রামু-কক্সবাজার আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসক আলী হোসেন যোগাযোগ ব্যবস্থা, একাডেমিক ভবন, সীমানা প্রাচীর সহ বিভিন্ন সুবিধাদি বিবেচনা করে কচ্ছপিয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র করার জন্য চট্টগ্রাম মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের কাছে লিখিত সুপারিশ করেন।

এরই প্রেক্ষিতে কচ্ছপিয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র করার জন্য প্রশাসনিক সকল প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এমন সময়ে গত ২০ অক্টোবর রামুর গর্জনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এইচএম মনিরুল ইসলাম বাদি হয়ে এ পরীক্ষা কেন্দ্র বাতিলের দাবিতে চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে জনমনে চরম ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।

কচ্ছপিয়া উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন কোম্পানী জানিয়েছেন, কেন অভিযোগ করা হয়েছে তা জানিনা। অভিযোগ করার মতো কোন বিষয় এখানে নেই। এটা পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই নয়। তিনি আরো জানান, গর্জনিয়া উচ্চ বিদ্যালয় কর্তপক্ষ চাচ্ছে, তারা কচ্ছপিয়া আসবে না। এটা অসম্ভব। কারন কচ্ছপিয়া না এসে গর্জনিয়ার মানুষ কোথাও যেতে পারবে না।

নুরুল আমিন কোম্পানী আরো জানিয়েছেন, ইতিপূর্বে গর্জনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এইচএম মনিরুল ইসলাম কচ্ছপিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর ও প্যাড জাল করে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কাছে একটি ভুয়া অভিযোগ দিয়েছিলেন। ওই অভিযোগে গর্জনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে কেন্দ্র স্থাপনে কচ্ছপিয়া উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষকের আপত্তি ছিলো না মর্মে উল্লেখ করা হয়েছিলো। পরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (শিক্ষা) তদন্তে ওই অভিযোগও মিথ্যা প্রমানিত হয়েছিল।

কচ্ছপিয়া উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির শিক্ষানুরাগী সদস্য সোহেল সিকদার ও শিক্ষক প্রতিনিধি আবছার উদ্দিন জানিয়েছেন, উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, একাডেমীক ভবন সহ নানা কারনে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র করার জন্য এ বিদ্যালয়টি সবচেয়ে উপযোগি। সকলের প্রচেষ্টায় এটি এখন অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এমন সময়ে প্রতিহিংসার আশ্রয় নিয়ে পরিকল্পিতভাবে অভিযোগ দিয়ে তা বাতিলের ষড়যন্ত্র চলছে। এলাকার সর্বস্তুরের মানুষ  এ ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে স্বোচ্ছার ভূমিকা পালন করবে।

রামু উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার মো. তৈয়ব জানিয়েছেন, কচ্ছপিয়া উচ্চ বিদ্যালয়কে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র করার জন্য রামু-কক্সবাজার আসনের সংসদ সদস্য ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসক সম্মতি দিয়েছেন। কিন্তু গর্জনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তার কেন্দ্রে পরীক্ষা কেন্দ্র করার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন। এমনকি তিনি কচ্ছপিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সম্মতি/অনাপত্তি দিয়েছেন উল্লেখ করেও অভিযোগ করেছেন।

তবে কচ্ছপিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনিল কান্তি শর্মা বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এ ধরনের কোন সম্মতি বা অনাপত্তি তিনি দেননি।

এ দিকে এ ব্যাপারে বক্তব্য জানার জন্য মঙ্গলবার রাতে গর্জনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এইচএম মনিরুল ইসলামের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ফলে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন