রামুতে সিএইচসিপি’দের অবস্থান কর্মসূচিতে বন্ধ ২৭ কমিউনিটি ক্লিনিক: রোগীদের চরম দুর্ভোগ

রামু প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের রামুতে চাকুরি জাতীয়করনের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত সিএইচসিপিগণ। সিএইচসিপি’দের এ অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে উপজেলার ২৭টি কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ ছিলো। এ কারণে প্রান্তিক জনপদের হাজার হাজার রোগী কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে এসে উল্টো দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন।

বাংলাদেশ সিএইচসিপি অ্যাসোসিয়েশস রামু উপজেলা শাখার আয়োজনে শনিবার(২০জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে এ অবস্থান কর্মসূচি শুরু করা হয়। অবস্থান কর্মসূচি চলবে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন রামু উপজেলার ২৭টি কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৫জন সিএইচসিপি (কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার)।

“শেখ হাসিনার অবদান, কমিউনিটি ক্লিনিক বাঁচায় প্রাণ” এ শ্লোগানে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ সিএইচসিপি অ্যাসোসিয়েশস রামু উপজেলা শাখার সভাপতি এসএম রেজাউল করিম, সাধারণ সম্পাদক সুদর্শন কান্তি দাশসহ সিএইচসিপি নেতৃবৃন্দ।

সভায় সিএইচসিপি নেতৃবৃন্দ বলেন, এদেশে গ্রামীন স্বাস্থ্য সেবায় সিএইচসিপিদের অবদান সর্বত্র প্রশংসনীয়। ২০১৩ সালে চাকুরি রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্ত করণের উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু এখনো সে উদ্যোগ আলোর মুখ দেখেনি। অবিলম্বে চাকরি জাতীয়করন না করা হলে কঠোর আন্দোলন করবেন সারাদেশের সিএইচসিপিগণ। বক্তারা আরো বলেন, ২০১১ সালে কমিউনিটি ক্লিনিকে দেশের ১৪ হাজার সিএইচসিপি নিয়োগ পায়। এরমধ্যে প্রায় ৪ হাজার ৫০০জন সিএইচসিপি মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান। সিএইচসিপিগণ শুরু থেকে চাকরি স্থায়ীকরণের দাবি জানিয়ে আসছিলো। পরবর্তীতে দাবি পূরণ না হওয়ায় সিএইচসিপিরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। হাইকোর্ট চাকরি স্থায়ীকরণের জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য রায় প্রদান করলেও এখনো সরকার বাস্তবায়ন করছে না। এ অবস্থায় সিএইচসিপিরা অবিলম্বে হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান। দাবি বাস্তবায়ন করা না হলে আগামীতে বৃহত্তর কর্মসূচি পালন করা হবে ঘোষণা দেয়া হয়।

বাংলাদেশ সিএইচসিপি অ্যাসোসিয়েশস রামু উপজেলা শাখার সভাপতি এসএম রেজাউল করিম জানিয়েছেন, রামুতে তাদের অবস্থান কর্মসূচির কারণে শনিবার উপজেলার ২৭টি কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ ছিলো। সরকার তাদের ন্যায্য দাবি সহসা মেনে না নিলে এ কর্মসূচি আরো দু’দিন অব্যাহত থাকবে। এরপরও দাবি না মানলে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির আলোকে পরবর্তীতে আরো ব্যাপক আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আবদুল মন্নান সিএইচসিপি’দের অবস্থান কর্মসূচি পালনের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, কর্মসূচি চললেও বিশেষ ব্যবস্থায় রামুর কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সচল ছিলো।

তবে এ প্রতিবেদক সরেজমিন গিয়ে কয়েকটি কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ দেখতে পান। এসময় এসব ক্লিনিকে আসা রোগীরা সেবা না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

রামু উপজেলা চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে রামুর সিএইচএসসিপি’দের মধ্যে মো. শামীম উল্লাহ, খোকন দাশ, এসএম জাফর আলম, শফিউল আলম, নুরুল আমিন, নাছিমা আকতার, রূপা বড়ুয়া, পিংকী শর্মা, রিদুয়ানুল ইসলাম, খাদিজা বেগম, খুরশিদা বেগম, স্মৃতি কর্ণা আচার্য্য, রিজিয়া বেগম, ইয়াছমিন আকতার, সেলিনা আকতার, গৌরসেবক শর্মা, সুমন মজুমদার, সুলতান আহমদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক এ কর্মসূচি চলবে ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত। যা দেশের সবকটি উপজেলায় পালন করা হচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন