রামুতে ভবন নির্মাণের পরও ঝুলে আছে ফায়ার সার্ভিসের কার্যক্রম

 

ramu pic fire service 15.03

রামু প্রতিনিধি:

রামু, নাইক্ষ্যংছড়ি এবং কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁওসহ ৩উপজেলার লাখ লাখ মানুষের  দীর্ঘদিনে প্রাণের দাবি রামু ফায়ার সার্ভিস স্টেশন। রামুর জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের চা বাগান এলাকায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশে ইতিমধ্যে ফায়ার সার্ভিসটির ভবনও নির্মাণ হয়েছে। কিন্তু জনৈক ব্যক্তির একটি মামলার কারণে ফায়ার সার্ভিসটির কার্যক্রম দীর্ঘদিন বন্ধ রয়েছে। এনিয়ে সংশ্লিষ্ট তিন উপজেলার জনমনে বিরাজ করছে চরম ক্ষোভ।

জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৩১অক্টোবর কক্সবাজার সদর-রামু আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল রামুর জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের চা বাগান এলাকায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের ভবন নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন। স্বল্প সময়ে ভবনটির অধিকাংশ কাজও সম্পন্ন হয়। কিন্তু ফায়ার সার্ভিসের জমিতে স্বত্ত্ব দাবি করে উচ্চ আদালতে দায়ের করা একটি মামলার কারণে পুরো কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

উল্লেখ্য গত ১মাসে রামু উপজেলা, সদর উপজেলার ঈদগাঁও ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, নির্মিত ফায়ার সার্ভিসটি চালু না হওয়ায় তারা বিপুল ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন। তাদের দাবি জনস্বার্থে যেন মামলাটি প্রত্যাহার করা হয়। মাত্র দু’এক শতক জমির জন্য এতবড় একটি জনগুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান এভাবে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকতে পারে না।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ অগ্নিকাণ্ড ঘটানোর পরপরই কক্সবাজার কিংবা চকরিয়ার ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছার পূর্বে সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। কারণ, কক্সবাজার সদরের একমাত্র ফায়ার সার্ভিসটি শহরের ভিতর হওয়ায় বিভিন্ন ঝুঁকি নিয়ে এলাকায় পৌঁছতে না পৌঁছতেই সবকিছু ছাই হয়ে যায়। অন্যদিকে দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে চকরিয়ার ফায়ার সার্ভিসটি এলাকায় আসতে বিলম্ব হচ্ছে। অন্যদিকে কয়েক লাখ মানুষের প্রাণের দাবি, রামু ফায়ার সার্ভিস স্থাপিত হওয়ায় মানুষের স্বপ্ন পূরণের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছেন মামলা দায়েরকারী ব্যক্তি।

অথচ ওই ফায়ার সার্ভিসটি রামু হাসপাতাল সংলগ্ন মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী স্থানে হওয়ায় দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছারও যুক্তিসঙ্গত কারণ এ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের। তাই দ্রুত গতিতে মামলা নিষ্পত্তি করে ফায়ার সার্ভিসটি উদ্বোধন করতে সাংসদ কমলের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন রামু, ঈদগাঁও ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সর্বস্তুরের জনতা। এটি উদ্বোধন করতে বিলম্ব হলে সংশ্লিষ্ট এলাকার জনসাধারণকে আরও কোটি কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

কক্সবাজার-রামু আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল বলেছেন, তিনি এ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের জন্য চলমান মামলা প্রত্যাহারের জন্য সংশ্লিষ্ট বাদীর সাথে বৈঠক করেছিলেন। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হলেও তিনি এখনো মামলা প্রত্যাহার করেননি। তিনি যদি মামলা প্রত্যাহার না করেন, তবে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল দেশ গড়তে ঘনবসতি এলাকায় ইতিপূর্বে ফায়ার সার্ভিস স্থাপনের নির্দেশ দেয়ায় এলাকার জনমনে স্বস্তি ফিরে আসে। কিন্তু একটি মামলার কারণে একটি ফায়ার সার্ভিস অনুমোদনের এক যুগেও বাস্তবে রুপ না দেয়ায় জনমনে উল্টো চরম হতাশা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। তাই বিষয়টি নিরসনে কক্সবাজার-রামু আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমলসহ সকলের আন্তরিক হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী জনতা।

এদিকে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে মামলার বাদী রামুর মেরংলোয়া গ্রামের বাসিন্দা অধ্যাপক আবদুস সাত্তার জানান, বিষয়টি সমাধানে তিনিও আন্তরিক। এব্যাপারে সাংসদ কমলের সাথে যোগাযোগও চলছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন