রামুতে বৌদ্ধদের প্রবারণা উৎসবে বাঁকখালীতে ভাসানো হলো সম্প্রীতির জাহাজ

002

রামু প্রতিনিধি:

সব ধর্মের মানুষের উপস্থিতিতে রামু উপজেলার বাঁকখালী নদীর মোহনায় ভাসানো হলো সম্প্রীতির জাহাজ। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রবারণা পূর্ণিমার কর্মসূচির অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার ৯ অক্টোবর বিকেল ৪টার দিকে এ জাহাজ ভাসানো হয়।

এ উৎসবে প্রধান অতিথি ছিলেন রামু-কক্সবাজার সদর আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল। এ জাহাজ ভাসানো উৎসবে দু’পাড়ে নেমেছিল হাজার হাজার মানুষের ঢল। তিন মাস বর্ষাবাসের পর প্রবারণা পূর্ণিমায় বৌদ্ধ নর-নারী এ উৎসব পালন করে। রামুতে বৌদ্ধ নর-নারী ছাড়াও মুসলিম ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা এ উৎসবে যোগ দেন।

বাঁকখালী নদীতে ভাসছিল সাতটি দৃষ্টিনন্দন রঙ-বেরঙের জাহাজ। বাঁশ, বেত, রঙিন কাগজ, কাপড় দিয়ে অপূর্ব কারুকাজে তৈরি বিভিন্ন জীবজন্তু আকৃতির সাতটি জাহাজে চলছিল শিশু-কিশোর ও যুবকদের বাঁধভাঙা আনন্দ। নানা বাদ্য বাজিয়ে নাচে-গানে আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে সবাই। দুইশ’ বছর আগে মিয়ানমারে প্রচলিত এ জাহাজ ভাসা উৎসব রাখাইনরা প্রথম রামুতে প্রচলন করে। এরপর থেকে রামুতে বৌদ্ধ, রাখাইনরা প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে এ উৎসবের আয়োজন করে।

0011

এ উৎসবকে ঘিরে রোববার দুপুর থেকে রামুর বাঁকখালী নদীতে চলে এ আয়োজন। বিকেল ৩ টায় রামু ফকিরাবাজারের পূর্বপাশে বাঁকখালী নদীর বালুচরে প্রবারণা ও জাহাজ ভাসা উত্সব উদযাপন পরিষদের সভাপতি প্রবীর বড়ুয়ার সভাপতিত্বে ও প্রধান সমন্বয়কারী দীপকংর বড়ুয়া ধীমান এবং সাধারণ সম্পাদক স্বপন বড়ুয়া মেম্বারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় উদ্বোধক ছিলেন চট্টগ্রাম নন্দন কানন বৌদ্ধ বিহারের আবাসিক প্রধান প্রিয়রত্ন থের। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় উপ কমিটির সহ সম্পাদক, লন্ডন ইউরোপিয়ান কলেজ অফ ল এর পরিচালক প্রশান্ত ভূষন বড়ুয়া, রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাসুদ হোসেন, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাষ্টের ট্রাষ্টি সুপ্ত ভূষন বড়ুয়া, সংবর্ধিত অতিথি ইঞ্জিনিয়ার বিশ্বজিত বড়ুয়া, রামু থানার অফিসার ইনচার্জ সাইকুল আহমদ ভূঁইয়া, রাজারকুলের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জাফর আলম চৌধুরী, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মা, রামু উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মুসরাত জাহান মুন্নি প্রমুখ।

উৎসবে যোগদানকারী ছড়াকার দর্পণ বড়ুয়া জানান, দেশে শুধু রামুতেই এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। জাহাজ ভাসানোকে কেন্দ্র করে দীর্ঘ এক মাস রামুর ২০টি বৌদ্ধ পল্লীতে উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যে এ উৎসব উদযাপিত হয়। হাইটুপী, হাজারীকুল, পূর্ব রাজারকুল দ্বীপশ্রীকুল, পূর্ব মেরংলোয়া গ্রাম এবং আদিবাসী সম্প্রদায় রাখাইন জনগোষ্ঠীসহ মোট সাতটি জাহাজ নদীতে নামানো হয়। রেঙ্গুনী কারুকার্যে চূড়া, ময়ূর, হাঁস, সিংহসহ নানা জীবজন্তুর প্রতিকৃতির রূপ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে জাহাজে।

 

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন