রামুতে ডাকাতের উপদ্রব বৃদ্ধি, ডাকাত প্রতিরোধে রাত জেগে পাহারা
নিজস্ব প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের রামুতে টানা বর্ষণ ও বন্যায় জনজীবন প্রায় অচল হয়ে গেছে। কিন্তু এমন নিদারুণ কষ্টের মাঝে মরার উপর খাড়ার ঘায়ের মতো শুরু হয়েছে এলাকায় চুরি ডাকাতি ও ছিনতাই । প্রতি রাতেই একের পর এক প্রবাসীসহ ধর্নাঢ্যদের পরিবারে হানা দিচ্ছে সশস্ত্র ডাকাত দল। এতে করে ঘুম হারাম হয়ে গেছে গ্রামের মানুষের। আর তাই শেষ সম্বলটুকু বাঁচাতে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছে এলাকার শত শত মানুষ। এসব উপদ্রব ঠেকাতে বিভিন্ন এলাকায় ডাকাত প্রতিরোধে সভা ও পাহারা বসানো হচ্ছে।
গত বুধবার (২৯ জুলাই) গভীর রাতে রামু রাজারকুল পাহাড়তলি এলাকার বাসিন্দা আবছার মিয়ার বাড়িতে ডাকাতি সংগঠিত করে পালিয়ে যাওয়ার সময় শফি উল্লাহ (২৫) নামে এক ডাকাতকে ধৃত করে স্থানীয় এলাকাবাসী। বৃহস্পতিবার (৩০ জুলাই) ধৃত ডাকাত শফি উল্লাহকে রামু থানায় সোপর্দ করা হয়। পরে পুলিশ উক্ত ডাকাতকে আদালতে প্রেরণ করে।
ধৃত ডাকাত শফি পুলিশের কাছে আবছার মিয়ার বাড়ির দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে নগদ টাকা, স্বর্ণ ও মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করার বিষয় স্বীকার করেন।
বাড়ির মালিক আবছার মিয়া জানান, গত বুধবার রাতে মষুলধারে বৃষ্টি চলাকালে ডাকাত শফিসহ ১০/১২জনের একটি ডাকাত দল তার বাড়িতে হানা দিয়ে নগদ ১৬ হাজার টাকা, ২টি মোবাইল সেট ও ৭ ভরি স্বর্ণ লুট করে। তিনি আরও জানান, ডাকাত শফি স্বীকার করলেও এখনো সে মালামাল গুলো উদ্ধার হয়নি।
রাজারকুল পাহাড়তলি এলাকার সমাজকর্মী নুর মোহাম্মদ জানান, প্রবল বর্ষণ ও টানা বন্যায় মাঝেও রাজারকুল পাহাড়তলি এলাকায় ডাকাতের উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই ডাকাতের কবল থেকে নিজেদের জানমাল রক্ষার জন্য পালাক্রমে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছি।
কাউয়ারখোপ ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল হক জানান, ১ সপ্তাহের মধ্যে তার ইউনিয়নের পূর্ব মনিরঝিল,উখিয়ার ঘোনা ও গাছুয়া পাড়া এলাকায় ৫টি ডাকাতি সংগঠিত হয়েছে।
উখিয়ার ঘোনার হাবিব উল্লাহ মেম্বার জানান, তার এলাকায় একই দিনে ২টি বসতবাড়িতে ডাকাতি সংগঠিত হয়েছে এবং আরও ২টি বাড়িতে ডাকাতরা হানা দিতেই জনসাধারণ প্রতিরোধের মুখে ডাকাত দল পালিয়ে যায়।
চাকমারকুল শ্রীমুরা এলাকার নুরুল আমিন মেম্বার জানান, দ্বিতীয় দফায় গত ৮ দিনের শ্রীমুরা, নাছিরা পাড়া, পূর্ব পাড়া, পশ্চিম ডুবে আছে। এ সুযোগে ডাকাত দল স্পীড বোট নিয়ে প্রতিরাতে হামলা দিচ্ছে। এদিকে রামু-নাইক্ষ্যংছড়ি সড়ক,রামু পুরাতন মরিচ্যা আরাকান সড়ক, কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের দক্ষিণ মিঠাছড়ি ও খুনিয়া পালং এলাকার বিভিন্ন ঢালা, শ্রীমুরা সড়ক, ঈদগড়-ঈদগাঁও সড়কেও ডাকাতি সংগঠিত হচ্ছে।
রামু থানার ওসি আবদুল মজিদ জানান, টানা বর্ষণ ও বন্যায় যোগযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় এ সুযোগে এলাকায় চুরি ডাকাতি ছিনতাই আংশিক বেড়েছে। তিনি ইতিমধ্যে প্রত্যেক এলাকায় ডাকাত প্রতিরোধে সভা করছেন এবং এসব ডাকাতি বন্ধে কঠোর ভাবে ব্যবস্থা নিচেছন বলে জানান। অন্যদিকে শুক্রবার (৩১ জুলাই) রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ উখিয়ার ঘোনা এলাকায় ডাকাত প্রতিরোধে এক সভায় অনুষ্ঠিত হয়।