রামুতে জমে উঠেছে ঈদ বাজার

ramu news & pic 29 jun (02) copy

নিজস্ব প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের রামুতে ঈদের দিন যতই এগিয়ে আসছে তত জমে উঠেছে ঈদ বাজার। মার্কেটগুলোতে ভিড় বাড়ছে সব শ্রেণি পেশার মানুষের। সাধ আর বাজেটের সঙ্গে মিল রেখে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আপনজনদের জন্য করছেন কেনাকাটা। রাতের বাহারি আলোকসজ্জায় বর্ণিল হয়ে উঠেছে রামু বিভিন্ন স্থানে মার্কেট-শপিংমল। ছোট খাটো বিপণী বিতান আর দোকানপাটগুলোও পিছিয়ে নেই আলোকসজ্জায়।

এদিকে ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন পোশাক তৈরীর কারিগররাও (দর্জি)।দিন-রাত বিরামহীনভাবে কাজ করছেন তারা। সময়ের অভাবে ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে পারছে না।

বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, চৌমুহনীর সরওয়ার প্লাজা, আমিন মার্কেট, হাজী কমপ্লেক্স, চৌধুরী মার্কেট, স্কুল মার্কেট, এনবি প্যারাগন প্লাজা, আওনাত শপিং সেন্টার, মনজুর কমপ্লেক্স, মনিষা গ্রীন টাওয়ার, রাহাত প্লাজা, এস আর সুপার মার্কেট, আলহাজ্ব জাহেদ শপিং কমপ্লেক্স, কে এ নিউ মার্কেট, সিরাজ প্লাজা, তাহের প্লাজা, তানি শপিং কমপ্লেক্স, ভিক্টর প্লাজা, সিকদার প্লাজা, আলহাজ্ব মজিদিয়া কমপ্লেক্স, রামু হকার, রামুর ঐতিহ্যবাহি ফকিরা বাজারের হকার মার্কেট, জে এন প্লাজার বিপণী বিতানগুলোতে কেনাকাটা করতে ভিড় করছেন সাধারণ ক্রেতারা। পরিবারের সকলের জন্য নতুন কাপড় কিনতে বিপণী বিতানগুলিতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ছুটছেন সব শ্রেণিপেশার মানুষ। এছাড়া মাহদিয়া থ্রি পিচ ফ্যাশন, রিহা জরি হাউজ, মুসকান ফ্যাশন কালেকশন, মনিষা ফ্যাশন মল ও নুর জাহান স্টোর, জেন্টস কালেকশনে ক্রেতার উপচে পড়া ভিড় দেখো গেছে।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে আয়ের সঙ্গে মিল রেখে কেনাকাটার কথা ভাবছে কেউ কেউ। তবে প্রতিটি দোকানে পুরুষের চেয়ে মহিলা ক্রেতার সংখ্যা বেশি। দাম বেশি হওয়ায় অনেক শিশু-কিশোর-কিশোরী ও নারী-পুরুষ তাদের চাহিদা অনুযায়ী পোশাক কিনতে না পেরে হতাশ হয়ে ঘরে ফিরে যাচ্ছে।

ঈদ উপলক্ষে এবার নতুনত্বের ছোঁয়া এসেছে বাজারে। নতুন নতুন ডিজাইনের নানা রঙের পোশাক। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে তৈরী পোশাকের বিপনী বিতানে রকমারী পোশাক শোভা পাচ্ছে। এসব পোশাকের পাশাপাশি নিত্যনতুন জুতা-স্যান্ডেলের প্রতি চাহিদা রয়েছে ছেলেমেয়ে উভয়ের। এবারের ঈদে বাজারে নরমাল, নবাব, প্রিন্ট, বুটিক ও হাতে কাজ করাসহ বাহারী ডিজাইনের নানা বৈচিত্র্যের পাঞ্জাবি বেশি বিক্রি হচ্ছে।

ঈদ উৎসবে অন্যান্য পোশাকের সাথে থাকা চাই পাঞ্জাবি। পাঞ্জাবির পাশাপাশি তরুণদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে ফিটিং হাফ শার্ট, ফুল শার্ট, শর্ট পাঞ্জাবি, জিন্স প্যান্ট, চায়না গ্যাবাডিন, ফরমাল প্যান্ট, টি-শার্ট, ফরমাল শার্ট ও শেরোয়ানি।

অন্যদিকে মেয়েদের জন্য নামি-দামি ঈদের পোশাকের ছড়াছড়ি রয়েছে বড় বড় বিপণিগুলোতে। এবারে ভারতীয় পোশাক বাজিরাও মাস্তানি নারী ক্রেতাদের দৃষ্টি কেড়েছে। লং গাউনের মতো ড্রেসটি দেখতে বেশ আকর্ষণীয়। তবে এবার মেয়েদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে লেহেঙ্গা। ভারতীয় পোশাকের মধ্যে ডার্লিং তেরে লিয়ে, তোমাকে চাই, কিরণমালা, কটকটি, বাজিরাও মাস্তানি, অ্যারাবিয়ান হিপ, লেহেঙ্গা-আনটিস দিলু ফোর টাচ ফ্রক বা লং ড্রেস রয়েছে। এ ছাড়াও কামিজসহ বিভিন্ন পোশাক থাকলেও মেয়েদের বাড়তি পছন্দের শীর্ষে রয়েছে লেহেঙ্গা কিরণমালা আর সেই সাথে চাহিদা রয়েছে জামদানি ও টাঙ্গাইল শাড়ির।

এদিকে পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে অনেকে বেল্ট, নানা রঙের জুতা-সেন্ডেল, জুয়েলারি এবং কসমেটিকস কিনছেন। সুতি ও সিল্কের পাঞ্জাবী, থ্রি-পিস, শিশুদের রেডিমেন্ট জামা কাপড় বিক্রি হচ্ছে। আর সাধারণ মানুষের কথা ভেবে বিরতিহীন কাজ করে যাচ্ছেন পোশাক তৈরীর দর্জিরা। দিন রাত কাজ করে যাচ্ছেন তারা। লক্ষ্য একটাই ঈদ আসার আগে ক্রেতাদের হাতে নতুন কাপড় তুলে দেওয়া।

ঈদে নতুন পোশাক কিনতে আসা ক্রেতা মন্ডল পাড়ার সাইফুল জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর পোশাকের দাম একটু বেশী। গত বছর যে থ্রি পিসের দাম ছিল এক হাজার থেকে ১৫শ’ টাকা এ বছর তার দাম ১৭শ’ থেকে দুই হাজার টাকা। একই পোশাক একেক দোকানে একেক দামে বিক্রি হচ্ছে।

মুসকান ফ্যাশন কালেকশনের প্রোপ্রাইটার ইছহাক চৌধুরী পাখী জানান, এবার ঈদের জন্য তরুণরা জিন্স প্যান্ট আর পাঞ্জাবি বেশি কিনছেন। পাশাপাশি ছোট শিশুদের নানা ধরনের বাহারি পোশাক এবার চাহিদা রয়েছে। তিনি আরো জানান, তার দোকানে নামি দামি ব্র্যন্ডের এর কস্মেটিক্সও আকর্ষণীয় মূল্য ছাড়ে বিক্রি করা হচ্ছে।

মনিষা ফ্যাশন মলের স্বত্ত্বাধিকারী সাইফুদ্দীন বাবু জানান, এবছর ভারতীয় ও চাইনা পোশাকের কদর রয়েছে। অন্যান্য বারের তুলনায় বিক্রিও বেশি হচ্ছে। ডিজাইনের কারণে মোকামে এ বছর পণ্যের দাম একটু বেশী। তাই বেশী দামে কেনায় একটু বেশী দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

চৌমুহনীর রাহাত প্লাজার দু’তলায় অবস্থিত রিহা জরি হাউজের স্বত্ত্বাধিকারী রুহুল আমিন জানান, ঈদকে সামনে রেখে রামুর নতুন প্রজম্মের জন্য আধুনিক ফ্যাশনেবল রিহা জরি হাউজের ২য় শাখা সম্প্রীতি উদ্বোধন করা হয়েছে। সেখানে তরুণদের জন্য দৃষ্টিনন্দন শার্ট, টি-শার্ট, প্যান্ট, ফতুয়া, পাঞ্জাবীসহ সবরকম মানানসই ব্র্যান্ডের পোশাক আনা হয়েছে। ঈদ সামনে রেখে তার দোকানে ক্রেতার ভিড়ও বেড়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন