রামগড়ে যুবলীগের উপজেলা ও পৌর কমিটি স্থগিত

রামগড় প্রতিনিধি:

খাগড়াছড়ির রামগড়ে যুবলীগের  উপজেলা ও  পৌর কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।

উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল কাদেরের সাথে পৌর যুবলীগের সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেন ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামিম মাহমুদের দীর্ঘদিনের চলা  দ্বন্দ্ব ও বিরোধে সাংগঠনিক কার্যক্রমে স্থবিরতার কারণে জেলা যুবলীগ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কে এম ইসমাইল হোসেনের স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত এক চিঠিতে  উল্লেখ করা হয়, রামগড় উপজেলা যুবলীগের সভাপতির সাথে পৌর যুবলীগের সভাপতি ও সাংগঠনিক সম্পাদকের দীর্ঘদিন ধরে সাংগঠনিক বিরোধ চলে আসছে। এমন কি বহিষ্কার, কমিটি বাতিল, আহ্বায়ক কমিটি গঠন, পরষ্পর বিরোধী মিছিল মিটিং ইত্যাদি অসাংগঠনিক কার্যক্রম অব্যাহত থাকায় সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গসহ দলীয় কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, এ ব্যাপারে জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মৌখিক নির্দেশনা দিলেও  রামগড় উপজেলা যুবলীগের সভাপতি তা উপেক্ষা করে নৈতিকতা বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে বহিষ্কৃতদের দিয়ে পৌর শাখার আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেন। যা সাংগঠনিক শৃঙ্খলা পরিপন্থি।

জানা যায়, সাংগঠনিক বিরোধের জের ধরে  উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল কাদের গত ২৬ অক্টোবর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ, অশালীন, অসৌজন্যমূলক, উশৃঙ্খল আচারণের অভিযোগ এনে পৌর যুবলীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মো. শামিমকে সাময়িক বহিষ্কার করে তাদের চিঠি দেন। এর প্রেক্ষিতে বিক্ষুব্দ  পৌর যুবলীগ ওই দিনই সন্ধ্যায় এক বিশেষ সভা আয়োজন করে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল কাদেরকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হয়।

এ নিয়ে শহরে শো ডাউনসহ পরষ্পর বিরোধী বিভিন্ন তৎপরতা চালানো হয়। পৌর যুবলীগের সভাপতি ও পৌরসভার কাউন্সিলর মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল কাদের সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে মনগড়াভাবে  গত জানুয়ারি মাসে গোপনে  পৌর যুবলীগের একটি  আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেন। ওই কমিটিতে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব করা হয় গুরুতর অপরাধের দায়ে দল থেকে বহিষ্কৃত দু’জনকে। এ বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে জেলা কমিটিকে জানানো হয়।

উপজেলা ও পৌর কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করার সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তিনি বলেন, যেখানে সাংগঠনিক কার্যক্রম অচল, সেখানে কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করার সিদ্ধান্ত সঠিকই হয়েছে। উপজেলা যুবলীগের সভাপতির অসাংগঠনিক, অগণতান্ত্রিক ও গঠনতন্ত্র পরিপন্থি মনোভাবের কারণেই তাঁর সাথে বিরোধের সূত্রপাত বলে তিনি জানান।

পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার কাউন্সিলর শামিম মাহমুদ অভিযোগ করে বলেছেন, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল কাদেরের গঠনতন্ত্র পরিপন্থি কার্যক্রমের কারণেই আজ উপজেলা ও পৌর কমিটি স্থগিত করেছে জেলা যুবলীগ।

অপরদিকে, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের পৌর যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পদকের অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বলেন, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও  একজন যুগ্ম সম্পাদকসহ কমিটির কয়েকজন সদস্য ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগে চলে যাওয়ায় কমিটির কার্যক্রমে অচলাবস্থা দেখা দেয়। এ কারণে জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক তার সাথে পরামর্শ করেই উপজেলা ও পৌর কমিটি স্থগিত করেছেন বলে তিনি জানান। নির্বাচনকে সামনে রেখে সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদার করতে অবিলম্বে উপজেলা, পৌর, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটিগুলো পুর্নগঠন করা দরকার বলে তিনি মনে করেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন