রামগড়ে প্রেমিকা চিতায়, প্রেমিক হাসপাতালে

রামগড় প্রতিনিধি:

পরিবার থেকে প্রেমের স্বীকৃতি না পেয়ে একসঙ্গে বিষপান করে প্রেমিকা আচু মারমা(১৫) মৃত্যুবরণ করেছে, আর হাসপাতালের বেডে মৃত্যুর প্রহর গুণছে প্রেমিক চাথুপ্রু মারমা(২০)।

রামগড় পৌরসভার ফেনীরকুল এলাকায় সোমবার(১২ফেব্রুয়ারি) রাতে মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটে। পুলিশি ঝামেলার ভয়ে সোমবার গভীর রাতেই চিতায় দাহ করা হয় প্রেমিকা আচু’র মরদেহ।

এলাকার স্থানীয় লোকজন জানায়, রামগড় পৌরসভার ফেনীরকুলের বাসিন্দা চাথুপ্রু মারমার সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল একই এলাকার আচু মারমার। আচু রামগড় বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী। আর চাথুপ্রু বেকার। প্রেমিক প্রেমিকা দুজনে পারিবারিক সম্পর্কে মামা ভাগ্নি। এ কারণে দুই পরিবারের কেউই তাদের প্রেমের সম্পর্ক মেনে নেয়নি। প্রেমের স্বীকৃতি না পেয়ে দুজনই সিদ্ধান্ত নেয় আত্মহত্যার।

সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে বাড়ির অদূরে নির্জন স্থানে দুজনে একসঙ্গে বিষপান করে। বাসায় না দেখে পরিবারের লোকজন আশেপাশে খুঁজতে বের হয় তাদের। অনেক খোঁজাখুঁজির পর বাড়ির অদূরে সীমান্তবর্তী ফেনীনদীর বালুচরে মুমুর্ষ অবস্থায় সন্ধান মেলে তাদের। রাত সাড়ে ১১টায় রামগড় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লক্সে দুজনকে নিয়ে যায় স্বজনরা। দায়িত্বরত চিকিৎসক অবস্থা গুরুতর দেখে দুজনকেই রেফার করেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

সূত্র জানায়, হাসপাতালে নেয়ার সময় কিংবা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের বেডেই মারা যায় আচু মারমা। পরে স্বজনরা দ্রুত তার মরদেহ হাসপাতাল থেকে নিয়ে যায়। পুলিশি ঝামেলার ভয়ে ঐ রাতেই তার মরদেহ দাহ করে ফেলেন স্বজনরা। অন্যদিকে, প্রেমিক চাথুপ্রুর স্বজনদের লিখিত নিয়ে রামগড় হাসপাতালেই চিকিৎসা দিচ্ছেন ডাক্তাররা।

মঙ্গলবার(১৩ফেব্রুয়ারি) দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, বেডের সাথে হাত-পা বাঁধা চাথুপ্রু মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, ৭২ ঘন্টা অতিবাহিত হলে তার অবস্থা নিশ্চিত হওয়া যাবে।

এদিকে হাসপাতাল বেডে শয্যাশায়ী চাথুপ্রু মারমা বলেন, আচু মারমার সাথে তার প্রায় এক বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক। পরিবারের লোকজন কেউই তাদের এ সম্পর্ক মেনে দিতে রাজী না। এনিয়ে তাদের দুজনই উভয় পরিবারের লোকজনের হাতে অপমান অপদস্থ হতে হয়েছে। তাই তারা দুজনই আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয়। আচু মারমা কীটনাশক ওষুধ সংগ্রহ করে বলে সে জানায়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন