রামগড়ে  গৃহবধূর লাশ হাসপাতালে রেখে উধাও তিন যুবক: স্বামীর বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ

ramgarh-07

রামগড় প্রতিনিধি:

খাগড়াছড়ি জেলার রামগড়ে এক গৃহবধূর মৃতদেহ হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যায় তিন যুবক। উপজেলা সদরের মহামুনি গ্রাম থেকে বৃহষ্পতিবার রাতে রহিমা বেগম(৩০) নামে ওই গৃহবধূর লাশটি অটোরিক্সা করে  হাসপাতালে এনে জরুরী বিভাগের কক্ষে রেখে যায় তারা। এদিকে রহিমা বেগমের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে স্বামী আনোয়ার হোসেন তাকে হত্যা করেছে। তবে পুলিশ বলছে, আত্মহত্যা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিনজন যুবক একটি অটো রিক্সায় করে এক মহিলাকে এনে হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কক্ষে ট্রলির উপর রেখে দ্রুত পালিয়ে যায়। এসময় ঐ কক্ষে কেউ ছিল না। পরে কর্তব্যরত ডাক্তার এসে পরীক্ষা করে দেখেন মহিলাটি মৃত। থানাকে খবর দেয়ার পর পুলিশ এসে রাত সাড়ে ১০টার দিকে লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর রহিমার পিতা আবু তাহের ও ভাই রবিউল হক থানায় এসে লাশ সনাক্ত করেন।

রামগড় পৌরসভার বাগনটিলা গ্রামের বাসিন্দা আবু তাহের জানান, মহামুনি এলাকায় স্বামীর ভাড়া বাসায় দুই কন্যাসহ থাকতো রহিমা। স্বামী আনোয়ার পেশায় অটো রিক্সা চালক। তিনি অভিযোগ করে বলেন, স্বামী আনোয়ারই তাকে হত্যা করে পালিয়ে গেছে। সে কখনও টমটম, কখনও অটো রিক্সা কিনতে টাকার জন্য রহিমার উপর নানা নির্যাতন চালাতো। সে নিরাপরাধ হলে ঘরে তালা দিয়ে পালিয়ে যেতো না। তিনি আরও বলেন, থানায় হত্যা মামলার এজাহার দিতে চাইলে পুলিশ নেয়নি। বরং বৃহষ্পতিবার রাতে থানার এক পুলিশ অফিসার রহিমা আত্মহত্যা করেছে মর্মে লেখা একটি দরখাস্তে তাঁর স্বাক্ষর নিতে চান। কিন্তু তিনি এতে অসম্মতি জানান। পরে বিষয়টি রামগড় সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপারকে অবহিত করেছেন বলেও তিনি জানান।

রামগড় থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: মাইন উদ্দিন খান বলেন, হাসপাতাল থেকে খবর পেয়ে মহিলাটির লাশ উদ্ধার করা হয়। সুরতহালে লাশের গলায় রশির দাগ ছাড়া শরীরের কোথাও কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। গতকাল (শুক্রবার) খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর লাশ রহিমার পিতার কাছে হস্তান্তর করা হয়।  রহিমার মৃত্যুর কারণ আত্মহত্যা বলে তার ধারণা। তবে ময়নাতদন্তের রির্পোট পাওয়ার পর নিশ্চিতভাবে বলা যাবে বলে তিনি জানান।

এদিকে হত্যা মামলার এজাহার না নেয়ার ব্যাপারে গৃহবধূ রহিমার পিতা আবু তাহেরের অভিযোগ সম্পর্কে  ওসি মাইন উদ্দিন খান বলেন, এটা সত্য নয়। বরং অভিযোগ থাকলে দায়ের করার জন্য একাধিকবার ফোন করে খবর দিলেও তিনি থানায় আসেননি। ওসি আরও জানান, বৃহষ্পতিবার রাতেই এ ব্যাপারে থানায় একটি অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা রুজু করা হয়েছে, যার নম্বর ৪/১৬।

অপরদিকে রহিমার পরিবারের পক্ষ থেকে  করা হত্যার অভিযোগের ব্যাপারে বক্তব্যের জন্য মোবাইল ফোনে কল দেয়া হলে আনোয়ার হোসেনের মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। ফলে এ বিষয়ে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন