রামগড়ের দুটি ইউনিয়নে লড়াই হবে দ্বিমুখী ॥ সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কা বিএনপি প্রার্থীদের

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন
নিজস্বসংবাদদাতা, রামগড়:
খাগড়াছড়ি জেলার রামগড়ের দুটি ইউনিয়নের নির্বাচনে সদর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থীর সাথে বিদ্রোহী প্রার্থী এবং পাতাছড়ায় আওয়ামীলীগ ও বিএনপির প্রার্থীর মধ্যে দ্বিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। নির্বাচনকে ঘিরে এখানে ২-১টি ছোট খাটো ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় আছে। তবে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটের ব্যাপারে আশংকা প্রকাশ করেছেন বিএনপি’র দলীয় প্রার্থীরা।

উপজেলার দুটি ইউনিয়নের মধ্যে রামগড় সদর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে চারজন, সাধারণ সদস্য পদে ৩১ ও মহিলা সদস্য পদে ৯জন এবং পাতাছড়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে তিনজন এবং সাধারণ সদস্য পদে ২৯ ও মহিলা সদস্য পদে ১০জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

রামগড় ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদ প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মো: শাহ আলম, আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আবুল হাসেম খাঁ, বিএনপির নুর হোসেন নুরু ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হাসান আলমগীর।

এ ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী মো:শাহ আলম ও বিদ্রোহী প্রার্থী আবুল হাসেম খাঁ’র মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস পাওয়া গেছে ভোটারদের সাথে কথা বলে।

অন্যদিকে পাতাছড়া ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী মনিন্দ্র ত্রিপুরার সাথে বিএনপির দলীয় প্রার্থী আবু বক্কর ছিদ্দিকের মূল লড়াই হবে। এ ইউনিয়নের অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন চাইথুই মারমা।

রামগড় ইউনিয়নে বিএনপির দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী নুর হোসেন নুরু বলেন,‘ সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে আমরা শংকিত। কারণ নির্বাচনী প্রচারনাকালে বিএনপির অনেক কর্মী সমর্থককে সরকারদলীয় প্রার্থীর লোকজন মারধর, গাড়ি ভাংচুর করাসহ ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানো হয়।’

আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিন্ন অভিযোগ করেছেন বিদ্রোহী প্রার্থী আবুল হাসেম খাঁ। তিনি বলেন, ‘ আমার কর্মী ও সমর্থক ও ভোটারদের হুমকী ধমকী দিচ্ছেন নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থী নিজে ও তাঁর লোকজন।’

এসব অভিযোগের ব্যাপারে সরকার দলীয় প্রার্থী মো: শাহ আলম বলেন,‘ আমার প্রতি ভোটারদের ব্যাপক সমর্থন দেখে প্রতিপক্ষরা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট কথা বলছেন। আমি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হব।’

এদিকে পাতাছড়া ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী মনিন্দ্র ত্রিপুরা বিপুল ভোটে নির্বাচিত হওয়ার আশা ব্যক্ত করে বলেন,‘ শুধু দলীয় পরিচয়ে নয়, আমি প্রত্যেক মানুষের বিপদ আপদে পাশে দাঁড়িয়েছি, সাহায্য সহযোগিতা করেছি। তাই দলমত নির্বিশেষে সব ভোটারই আমাকে সমর্থন দিয়েছেন।’

বিএনপির দলীয় প্রার্থী আবু বক্কর ছিদ্দিক বলেন,‘ ভোটাররা অবাধে ভোট কেন্দ্রে আসার সুযোগ পেলে তারা আমাকেই ভোট দেবেন। তবে আঞ্চলিক দলের সন্ত্রাসীদের তৎপরতায় ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোট কেন্দ্রে যেতে পারবেন কি না আমি সন্দিহান।’

শুক্রবার সন্ধ্যার আগেই দুই ইউনিয়নের ১৮টি কেন্দ্রে ভোটের ব্যালট পেপার, ব্যালট বক্সসহ প্রয়োজনীয় নির্বাচনী সরঞ্জাম নিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার এবং পুলিশ ও আনসার সদস্যরা স্ব স্ব কেন্দ্রে পোঁছে গেছেন।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রির্টানিং অফিসার মো: রিপন হোসেন বলেন, শনিবার সকাল ৮টা হতে ভোট গ্রহণের জন্য সমস্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।

শুক্রবার বিকালে নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) মো: ইকবাল হোসেন এতে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকের পর পরই পুলিশ প্রহরায় প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের কেন্দ্রগুলোতে পাঠানো হয়েছে।

রামগড় উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা(ইউএনও) মো: ইকবাল হোসেন বলেন, শতভাগ অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে ভোট গ্রহণ হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের কাজে বিজিবি ছাড়াও বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও আনসার সদস্য কেন্দ্রে নিয়োজিত থাকবে। এছাড়া একজন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও চারজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন