রাজস্থলীতে সিসিডিআর এর সঞ্চয়কৃত ১ কোটি টাকা ফেরৎ পাওয়ার আশা হারিয়েছে গ্রাহকেরা

রাজস্থলী প্রতিনিধি:

জেলার রাজস্থলী উপজেলায় সিসিডিআর (সেন্টার ফর কমিউনিটি ডেভেলবম্যান্ট এন্ড রিসার্চ) নামের একটি বেসরকারি এনজিও সংস্থা রাজস্থলীর গ্রাহকদের সঞ্চয়কৃত টাকা আদায় করে বর্তমানে নিরব ভূমিকা পালন করছে। অপর দিকে প্রশাসন সিসিডিআরএর কাউখালী, বান্দরবান ও চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার কার্যালয়গুলো বন্ধ করে দেওয়ার পর রাজস্থলী শাখায় কর্মরত কর্মীরা কার্যক্রম স্থগিত করে রেখেছে। রাজস্থলী গ্রাহকদের অভিযোগ রাজস্থলী বাজার মহব্বত পাড়া নামক স্থানে একজন ব্যবসায়ীর বাসায় ভাড়াকৃত সিসিডিআর এর অফিস। ওই অফিসে কর্মরত আছেন  রুবেল বড়ুয়া তার সহযোগী হিসেবে আছেন মাঠকর্মী লক্ষী চক্রবর্তী ও ঞোলিপ্রু মারমা এরা সবাই একই এলাকার ছেলে মেয়ে।

অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৫ বছর পূর্ব হতে সিসিডিআর এর মাইক্রোক্রেডিট এর কার্যক্রম চালিয়ে আসছে তারা। কিন্তু কর্মী রদবদলের কারণে ওই প্রতিষ্ঠানের কোন হিসাব নিকাশ নেই বলে জানা গেছে। গ্রাহকদের সাথে কর্মীদের মধ্যে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না করায় অনেক সময় বাকবিতণ্ডার ঘটনা রয়েছে। আর এসব ঘটনা নিরসন করতে এলাকার জনপ্রতিনিধিদের দিয়ে সামাল দিতে হয়।

গ্রাহকরা আরো জানান, তাদের সঞ্চয়কৃত টাকা ৫ বছর পর একসাথে উত্তোলন করা যাবে বলে একটি চুক্তিবদ্ধ হয়। সঞ্চয়এর ফাঁকে ফাঁকে গ্রাহকদের বোনাস ও ঋন দেওয়া হবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন। বোনাসতো দুরের কথা কিন্তু বোনাসের কথা বললে উল্টো সাশিয়ে দেন কর্মীরা।

কর্মীরা বলেন, নিয়মনিতির মধ্যে দিয়ে আপনারা সঞ্চয় প্রদান করলে ঋন ও বোনাস পেতে কোন অসুবিধা হবে না। আর ঋন পেতে গ্রাহকদের অপেক্ষারও শেষ ছিল না। নিয়ম অনুসারে জমাকৃত টাকার অনুকুলে সুধের হার ২৫% দেওয়ার কথা ছিল। তবে সেই অর্থও কেউ পায়নি।

সরেজমীনে দেখা গেছে, অনেক অনেক সম্ভ্রান্ত পরিবারের লোকজনও জমাকৃত অর্থ ফেরৎ পাওয়া নিয়ে সংশয়ে রয়েছে।

চন্দ্রঘোনা পত্রিকার এজেন্ট মো. আবু তাহের পার্বত্যনিউজকে জানান, তিনি ৪০ হাজার টাকা সঞ্চয় জমা করেছেন। অপরদিকে রাজস্থলী উপজেলার কয়েকজন গ্রাহক জানান, কেউ ৭০ হাজার আবার কেউ ৯০ হাজার এমনকি ১ লক্ষ টাকার উপরেও সিসিডিআর এ সঞ্চয় জমা করেছেন। এধরনের এ উপজেলায় প্রায় ৪২০জন গ্রাহকের জমা টাকা এ প্রতিষ্ঠানে রয়েছে। বর্তমানে গ্রাহকের এ টাকা ফেরৎ পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন। অপরদিকে সিসিডিআরএর দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক রুবেল বড়ুয়ার সাথে আলাপ করে জানা যায়, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর উপজেলা প্রশাসনের সাথে মিটিং বা আলোচনা সিসিডিআর এর কার্যক্রম নিয়ে কোন কথাবার্তা হয়নি।

এক প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, আদায়কৃত সঞ্চয়গুলো বিকাশের মাধ্যমে সিসিডিআর এর হেড অফিসে পাঠানো হতো। টাকা আদায় এবং পাঠানোর বিল ভাউচার দেখাতে পারেননি। পূর্বের কর্মরত কর্মীদের কার্যক্রম সম্পর্কে সঠিক কোন তথ্য প্রদান করতে পারেননি। এব্যাপারে সিসিডিআর এর পরিচালক রাঙ্গামাটি তবলছরি স্বর্ণটিলা এলাকার অধিবাসী জাহিদুল আলম জাহিদের সাথে মুঠোফোনে সংযোগ নিতে চাইলে মুঠোফোন বন্ধ পাওয়ায় সঠিক বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। সিসিডিআরএর বিভিন্ন অভিযোগ রাজস্থলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যতন মারমাকে অবহিত করেছেন বলে গ্রাহকরা জানান।

এসম্পর্কে নির্বার্হী কর্মকর্তার সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, সিসিডিআর এর বিরুদ্ধে গণমাধ্যমের অনেক পত্র পত্রিকায় শুনেছি । রাজস্থলীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন