রাঙ্গামাটিতে শিলাবৃষ্টির কারণে ফলনের ক্ষতি চাষিদের মাথায় হাত

রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি:

মৌসুমের শুরুতে বড়, মাঝারি বা ছোট, যেকোনো আকারের তরমুজ টসটসে এবং স্বাদে মিষ্টি ও রসালো ফল পাহাড়ি তরমুজ বাজারে ভরপুর থাকলেও তরমুজের দাম বেশ চড়া। কারণ গত বছরের তুলনায় এ বছর শিলাবৃষ্টির কারণে তরমুজের ফলন ভালো না হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তরমুজ চাষিরা। গরীবদের তরমুজ খাওয়া কষ্ট হয়ে যাবে।

বরকল উপজেলার তরমুজ চাষি জুরন ধন চাকমা বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর তরমুজের দাম একটু বেশি। কারণ এ বছর তরমুজ ফলন বৃদ্ধির জন্য যে সার কীটনাশক ব্যবহার করা হয়েছে তা শিলাবৃষ্টির কারণে নষ্ট হয়ে গেছে। যার কারণে ফলন ভালো হয়নি বলে তিনি জানান।

রাঙ্গামাটি শহরের বনরূপা সমতাঘাট বাজারে পাইকারী তরমুজ ব্যবসায়ী রিপন চাকমা এবং মোঃ আলী জানান, এ বছর তরমুজের ফলন ভালো না হওয়ায় আমরা চাষিদের কাছ থেকে বেশি দামে তরমুজ ক্রয় করতে হচ্ছে। ছোট-বড় ও মাঝারি ধরণের তরমুজ পাইকারী দরে ৩০ থেকে ৮০ টাকা দরে ক্রয় করতে হচ্ছে। ফলে এ বছর তরমুজের ব্যবসায় তেমন লাভবান হওয়া যাচ্ছে না বলে তারা জানান।

এদিকে খুচরা ক্রেতা প্রিয়বালা চাকমা ও স্বপ্না চাকমা জানান, আমাদের প্রধান উৎসব বিজুকে কেন্দ্র করে তরমুজের দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে। ফলে বিজু উপলক্ষে ধনীরা তরমুজ ক্রয় করতে পারলেও আমাদের মত গরীদের তরমুজ ক্রয় করতে কষ্ট হবে বলে তারা জানান।

এ বিষয়ে রাঙ্গামাটি জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতরে উপ-পরিচালক পবন কুমার চাকমা, প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুম শুরুতেই জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ১৯০ হেক্টর তরমুজের চাষাবাদ হলেও এ বছর কাপ্তাই হ্রদের পানি ধীর গতিতে কমায় শুরুর দিকে চাষাবাদে সম্যস্যায় পড়েন চাষিরা। তাই এ বছর ১৫০ হেক্টর ভেসে ওঠা জমিতে ব্যাপকহারে তরমুজের চাষাবাদ হয়। তবে সবচেয়ে বেশি তরমুজের আবাদ হয়ে থাকে লংগদু উপজেলায়। এছাড়া বরকল, বাঘাইছড়ি, জুরাছড়ি, নানিয়ারচর ও বিলাইছড়ি উপজেলাতেও চাষাবাদ করা হয়। তিনি আরো জানান, এবছর কাপ্তাই হ্রদের পানি না কমায় এবং শিলাবৃষ্টির কারণে চাষিরা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবেও কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ফলন ভালো হয়েছে।

এদিকে, প্রতি বছর রাঙ্গামাটিতে উৎপাদিত তরমুজ স্থানীয় বাজার ছাড়িয়ে বাজারজাত হয়ে যায় ঢাকা, চট্টগ্রামসহ জেলার বাইরে। তরমুজ চাষে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন বহু চাষি ও কৃষক পরিবার। এতে চাষিদের বিপুল অর্থনৈতিক আয়ের পাশাপাশি বিশেষ মুনাফা লাভের সুবিধা পান কৃষকরা।

 

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন