Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

রাঙ্গামাটিতে রাজাকারের নামে থাকা এলাকার নামটি এবার বদলাবে কি?

পাঠকের অভিমত

ইউসুফ হায়দার:

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট ও স্থাপনায় থাকা স্বাধীনতাবিরোধীদের নাম মুছে ফেলতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করে ৬০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে শিক্ষাসচিব ও স্থানীয় সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

৬ ডিসেম্বর বুধবার বিচারপতি কাজী রেজাউল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

রাঙ্গামাটির যারা বাসিন্দা তারা তো এমনিতেই জানেন, তাছাড়া, যারা সেখানে কিছুদিন থেকেছেন কিংবা সেখানকার বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখেন তারাও বলতে পারবেন যে, রাঙ্গামাটি শহরে একটি এলাকার নাম ত্রিদিব নগর, সংশ্লিষ্ট রাস্তাটির নামও ত্রিদিব রায় সড়ক!

অনেক দিন ধরে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের সাইটে এই নিয়ে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছেন যে একজন রাজাকারের নামে এলাকার নাম, সড়কের নাম কেন থাকবে?

এতদিন তাতে কেউ সাড়া দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেনি। কিন্তু উচ্চ আদালতের রায়ের পর রাজাকারের নামে রাঙ্গামাটির ওই এলাকা এবং রাস্তার নাম বদলাতে সংশ্লিষ্টরা উদ্যোগ নেবেন কি? নাকি সেখানে রাজাকারের নামই ঝুলতে থাকবে?

সাবেক চাকমা রাজা ত্রিদিব রায় একজন রাজাকার ছিলেন। তবে শুধু রাজাকার ছিলেন এটা বললেই ত্রিদিব রায়ের পরিচয় শেষ হয় না। কারণ অন্যান্য রাজাকারদের চেয়ে তিনি বেশ কিছুটা ব্যতিক্রম ছিলেন। সে কারণেই তিনি এখানে আলোচ্য।

১৯৭১ সালের শেষ দিকে যখন মুক্তিযুদ্ধে আমাদের বিজয় চিহ্নগুলো স্পষ্ট হচ্ছিল তখন অনেক কিছুই ঘটেছে। কেউ রাজাকার থেকে খোলস বদলে মুক্তিযোদ্ধা সেজেছেন, কেউ বা মুক্তিযোদ্ধাদের ভয়ে পালিয়ে বেড়িয়েছেন।

তবে চাকমা রাজা ত্রিদিব রায় দেশ ছেড়ে প্রথমে রেঙ্গুন পরে সোজা পাকিস্তানে পাড়ি জমিয়েছেন। কারণ তিনি কোনোভাবেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং বিজয়কে মেনে নিতে পারেন নি। শুধু তাই নয়, সেখানে গিয়ে তিনি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নতুন নতুন ষড়যন্ত্র শুরু করেন।

বাংলাদেশকে যাতে জাতিসংঘ স্বীকৃতি না দেয় সে জন্য পাকিস্তান সরকার ত্রিদিব রায়ের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দলকে জাতিসংঘে পাঠায়। বঙ্গবন্ধু বিষয়টি আঁচ করতে পেরে ত্রিদিব রায়কে জাতিসংঘ থেকে ফিরিয়ে আনতে তার মা বিনীতা রায়কে বাংলাদেশ থেকে জাতিসংঘে পাঠিয়েছিলেন।

কিন্তু ত্রিদিব রায় এতটাই কট্টরপন্থী পাকিস্তানী ছিলেন যে নিজের মায়ের অনুরোধ উপেক্ষা করে সেখানে বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারণা অব্যাহত রাখেন। ধারণা করা হয় সে সময় তার প্রচারণার প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে চীন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভেটো দিয়েছিল বলেই প্রথমবার বাংলাদেশের সদস্যপদ পাওয়া আটকে গিয়েছিল।

শুধু কি তাই? এরপরও ত্রিদিব রায় পাকিস্তানে আমৃত্যু ছিলেন, সেখানে পাকিস্তানীরা তার আনুগত্যে মুগ্ধ হয়ে তাকে বিভিন্ন সময় রাষ্ট্রদূত করে বিভিন্ন দেশে পাঠিয়েছে। মন্ত্রিত্ব দিয়েছে, পাকিস্তানীদের দেওয়া সেই মর্যাদা তিনি আজীবন ভোগ করেছেন। কয়েক বছর আগে পাকিস্তানেই তার মৃত্যু হয়েছে।

ত্রিদিব রায় সম্পর্কে উপরে যা বলা হলো, তা খুবই সামান্য। আর যেটুকু বলা হয়েছে, তাতের পাকিস্তানের প্রতি তার দরদ-ভালোবাসার কিছুটা ধারণা দেওয়ারই চেষ্টা করা হলো মাত্র।


♦ মুক্তমত কলামে প্রকাশিত লেখা লেখকের নিজস্ব মন্তব্য। এ বিভাগটি পার্বত্যনিউজের সম্পাদকীয় নীতিমালার অন্তর্ভূক্ত নয়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন