রাঙ্গামাটিতে বাধাহীনভাবে চলছে হাইড্রোলিক হর্ণের ব্যবহার

 

রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি::

রাঙ্গামাটিতে কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে বাধাহীনভাবে চলছে হাইড্রোলিক হর্ণের ব্যবহার। হাইড্রোলিক হর্ণের ব্যবহার বাংলাদেশ হাইকোর্ট কর্তৃক নিষিদ্ধ হলেও মানছেনা কোন আদেশ বাস, ট্রাক মালিক। হাইকোর্টের রায়কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তারা সদর্পে হাইড্রোলিক হর্ণ বাজিয়ে ক্ষতি করে চলছে মানুষ ও পরিবেশের।

রাঙ্গামাটির পুরাতন বাস স্ট্যান্ড, রিজার্ভ বাজার,বনরূপা বাস স্ট্যান্ড ও বিভিন্ন রাস্তায় বিকট শব্দে বাস ট্রাকগুলো হর্ণ বাজিয়ে চলতে দেখা যায়। শুধু বাস ট্রাক নয় মাইক্রো ও কার এই প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে নেই।

এছাড়া মসজিদ, হাসপাতাল, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, কোর্ট এলাকা ইত্যাদি স্থানগুলোতে উচ্চ শব্দে হর্ণ বাজানো নিষিদ্ধ থাকেলও সেইসব স্থানে তারা আরও জোরে হর্ণ বাজিয়ে চলছে। এছাড়া শহর এলাকায় কিছু উশৃঙ্ক্ষল যুবক কোন ধরনের পূর্বানুমতি ছাড়াই বড় বড় সাউন্ড বক্স ট্রাকে তুলে নিয়ে ইচ্ছেমত গান বাজনা চালালেও যেন দেখার কেউ নেই।

রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ থাকলেও এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নিতে তাদের দেখা যাচ্ছেনা। রাস্তায় চট্টগ্রামগামী দ্রুতযান, পাহাড়িকা, ঢাকাগামী শ্যামলী পরিবহন, এস আলম, হানিফ, ডলফিন ইউনিকসহ বেশিভাগ বাসে হাইড্রোলিক হর্ণ এখনো ব্যবহার হচ্ছে।

এছাড়া ট্রাকেরতো কোন কথা নেই। তারা একের অধিক হাইডোলিক হর্ণ বাজিয়ে দিন রাত রাস্তায় চলছে। এছাড়াও মোটর সাইকেল, অটোরিকক্সা, ইজিবাইক গুলো এই শব্দ দূষণ থেকে পিছিয়ে নেই। কারণে অকারণে তারা হর্ণ বাজিয়ে চলছে।

এছাড়াও দোকানে এই হাইড্রোলিক হর্ণ বিক্রি নিষিদ্ধ থাকলেও তা প্রশাসন মনিটিরং করছেন না বলে জানা গেছে। প্রতিটি পার্টসের দোকানে সহজেই মিলছে হাইড্রোলিক হর্ণ। বাস যাত্রী ও পথচারী অভিযোগ করেছেন, তাদের এই হাইড্রোলিক হর্ণের কারণে বাসে যাতায়াত করা দুরহ ব্যপার হয়ে পড়েছে। বাস চালকদের বললেও তারা এ বিষয়ে আমলে নেয়না।

তারা বলেন সব থেকে বেশী ক্ষতি করছে শিশুদের। তাদের উচ্চ শব্দ গ্রহন ও সহ্য করার মত বয়স না হওয়ার বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে তারা জানান। এছাড়াও হৃদ রোগীদের অনেক সময় উচ্চ শব্দে তৎক্ষণিক হার্ট এ্যাটাকের ঘটনাও ঘটছে বলে উল্লেখ করেন। তারা সকলেই হাইড্রোলিক হর্ণ বন্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করেন।

বাস ও ট্রাক চালকদের এই হর্ণ ব্যবহার সরকারিভাবে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জানে কিনা জানতে চাইলে নাম প্রকাশ করার না শর্তে তারা বলেন সরকারী নির্দেশনা তারা জানেন। কিন্তু বাস ও ট্রাক মালিকরা হর্ণ পরিবর্তনে কোন পদক্ষেপ না নেওয়ার তাদের কিছু করার নেই বলে জানান।

উচ্চ মাত্রার শব্দের ক্ষতিকারক দিক সম্পর্কে রাঙ্গামাটি জেলার সিভিল সার্জন ডা. শহীদ তালুকদার বলেছেন, শুধু হাইড্রোলিক হর্ণ নয়, যেকোন উচ্চ বা বিকট শব্দ মানব দেহের মারাত্বক ক্ষতি করে। তিনি আরো বলেছেন, উচ্চ ,শব্দে কানের ক্ষতি করে, মানুষ বধির হয়ে যেতে পারে, ব্রেইন খারাপ হতে পারে, শিশুরা প্রতিবন্ধি হতে পারে আবার কেউ স্থায়ীভাবে বধির হয়ে যেতে পারে।

হাইড্রোলিক হর্ণ বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে রাঙ্গামাটি শহরের যানবাহন পুলিশ পরিদর্শক নীতি বিকাশ দত্ত বলেন, হাইড্রোলিক হর্ণ বন্ধে ইতিমধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বেশ কয়েক জনের বিরুদ্ধে মামালাও হয়েছে। তবে এ বিষয়ে আরও গুরুত্ব সহকারে কাজ করার জন্য মাঠ পর্যায়ের ট্রাফিক বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়া আছে এবং জোড়ালোভাবে কার্যকর করার জন্য পূণরায় নির্দেশনা দেওয়া হবে তিনি জানিয়েছেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন