রাঙামাটি শহরে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি, ভূক্তভোগী ব্যবসায়ীদের লিখিত অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিনিধি:

এবার খোদ রাঙামাটি শহরের বনরুপা বাজারে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন যাবত এ বাজারে মাত্র একজন ব্যক্তি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিয়মিত মোটা অংকের টাকা চাঁদাবাজি করে আসলেও এতদিন ব্যবসায়ীরা মুখ বুঝে সহ্য করেছে। অবশেষে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মনসা পুজা উপলক্ষ্যে পশু বিক্রি করতে আসা লোকজনের কাছ থেকে উচ্চহারে চাঁদা ধার্য করে তা আদায় করার সময় ব্যবসায়ীরা ক্ষেপে যায়। তবে চাঁদাবাজের পিছনে অন্য শক্তির ইন্ধন থাকতে পারে এমন ভয়ে তারা চাঁদাবাজকে কিছু না বলে ব্যবসায়ী সমিতিতে লিখিত অভিযোগ করে। অভিযোগপত্রে চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে যথাযাথ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে, বনরুপা বাজারে জনৈক প্রতিময় চাকমা (ময়) নামের এ ব্যক্তি গত কয়েক মাস যাবত বিভিন্ন প্রকার ভয়-ভীতি দেখিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিয়মিতভাবে ধার্যকৃত চাঁদার টাকা আদায় করে আসছে। সেই চাঁদার পরিমাণ সহনশীল হওয়ায় তারা এতদিন তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। তবে এ বিষয়ে ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দকে মৌখিকভাবে বিষয়টি অবহিত করা হয়। কিন্তু মনসা পুজা এবং কোরবানী সামনে রেখে বাজারে পশু বিক্রি করতে আসা ব্যবসায়ীদের উপর চাঁদা ধার্য পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়।

গত শনিবার ত্রিদিব নগর (বনরুপা সমতা ঘাট লেইন) হাটবারে ছাগল প্রতি ৫০ -১০০ টাকা, প্রতিটি গরু থেকে ১০০-২০০ টাকা, নির্ধারণ করে দেয় প্রীতিময় চাকমা প্রকাশ ময়। এ ছাড়া সে ভাসমান তরিতরকারী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জন প্রতি ৩০-৫০ টাকা চাঁদা আদায় করে থাকে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ত্রিদিব নগর বাজার ব্যবসায়ী বহুমূখী সমবায় সমিতির সভাপতি স্নেহাশীষ চাকমা (আশীষ) অভিযোগপত্র পাওয়ার কথা স্বীকার করে জানান, আমরা অভিযোগ পাওয়ার পর ওই ব্যক্তিকে মৌখিকভাবে সতর্ক করেছি। এতে কাজ না হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তিনি এও জানান যে, ইতোমধ্যে সমিতির পক্ষ থেকে মাইকিং করে কোন ব্যক্তিকে অবৈধভাবে চাঁদা না দেওয়ার জন্য ব্যবসায়ীদের সচেতন করা হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, বনরুপা ত্রিদিব নগর বাজার এলাকায় বেশ কয়েক মাস ধরে প্রতিময় চাকমা (ময়) নামের ওই ব্যক্তি ভাসমান ব্যবসায়ীদের থেকে অবৈধভাবে চাঁদা তুলে যাচ্ছেন।

সমিতি সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ জুলাই ভাসমান ব্যবসায়ী ও গরু-ছাগল বিক্রেতা মিলে ৩৬জনের গণ স্বাক্ষরে ব্যবসায়ী সমিতির বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হয়। সভাপতি বলেন, এ বিষয়ে আমরা সামাজিকভাবে সমাধানের জন্য চেষ্টা করছি। যদি সামাজিকভাবে কোন প্রকার মীমাংসা না হয় তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নাম  প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জন ভাসমান ব্যবসায়ী ও গরু-ছাগল ব্যবসায়ী জানায়, প্রতি হাট-বাজারে এভাবে অনেকবার আমাদের কাছ থেকে বিনা রশিদে চাঁদার টাকা আদায় করা  হচ্ছে। কিসের টাকা জানতে চাইলে বলে জায়গাটি ব্যবহার করে ব্যবসা করায় তার ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানার জন্য অভিযুক্ত প্রতিময় চাকমার মুঠোফোনে বহুবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও সাড়া মেলেনি।