Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

রাঙামাটি এডিসি’র ওপর পাহাড়িদের অতর্কিত হামলা, দৌড়ে-সাঁতরে প্রাণ রক্ষা

029নিজস্ব প্রতিনিধি:

সরকারি দায়িত্ব পালনের সময় পাহাড়িদের অতর্কিত আক্রমণের শিকার হয়েছেন রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ তানভীর আযম সিদ্দিকী।এসময় তাঁর সাথে ভূমি অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তাও আক্রমণের শিকার হয়। এসময় দৌড়ে-পর্বত ডিঙ্গিয়ে এবং নদী সাঁতরিয়ে কোনো রকমে প্রাণ রক্ষা করেন জেলা প্রশাসনের প্রভাবশালী এই কর্মকর্তা ও তাঁর সহকর্মীরা।

রোববার সকালে সরকারি কাজে রাঙামাটি শহরের উপকণ্ঠ উলুছড়ি এলাকায় গিয়ে কোনো কাজ না করেই কোন রকম প্রাণ নিয়ে বেঁচে ফিরতে হয় তাদের।

প্রত্যক্ষদর্শী ও প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সেনাবাহিনীর রাঙামাটি ক্যান্টমেন্টর জায়গা সম্প্রসারণের জন্য সর্বমোট ৮৬ একর জায়গা অধিগ্রহণের প্রস্তুতি চলছে। তার মধ্যে ৫১ একর সরকারি খাস জমি হিসেবে পাওয়া গেলেও বাকি ৩৫ একর জমি স্থানীয় বাসিন্দাদের।তার মধ্যে জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মনিরুজ্জামান মহসিনের মালিকানাধীন রয়েছে ১২ একর, শিব শংকর আইচ নামীয় একজনের রয়েছে ৯ একর এবং বাকি ১৪ একর জায়গা স্থানীয় কয়েকজন পাহাড়ি বাসিন্দার।

সংশ্লিষ্ট জমির মালিকগণ সরকারি কাজের জন্য তাদের জমি যথাযত প্রক্রিয়ায় দিতে রাজি হওয়ার পর জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে এই জমি পরিমাপ ও অধিগ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ব্যাপারটি সরেজমিনে দেখতে এই জমিগুলোর ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিতে ভূমি অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে যান রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ তানভীর আযম সিদ্দিকী।

কিন্তু ঘটনাস্থলে গিয়ে কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই স্থানীয় শতাধিক পাহাড়ির অতর্কিত আক্রমণের মুখে পড়েন তারা। পরে দৌড়ে-পর্বত ডিঙ্গিয়ে এবং নদী সাঁতরিয়ে কোনো রকমে প্রাণে বেঁচে রাঙামাটি শহরে ফিরে আসেন তারা।

এবিষয়ে তানভীর আযম সিদ্দিকী জানান, গত কয়েকদিন আগে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক সেনাবাহিনীর জন্য জায়গা অধিগ্রহণ করার জন্য আমাকে একটি পত্র দেয়। সরকারি দায়িত্বের অংশ হিসেবে আমি জায়গাটি নিজে তদন্ত করে এসে একটি মতামত পেশ করার সিদ্ধান্ত নেই। সেই লক্ষ্যে রোববার সকালে কানুগো ও সার্ভেয়ারদের নিয়ে ক্যান্টেনমেন্টের পেছনে উলুছড়ি এলাকায় জায়গাটি সরেজমিনে পরিদর্শনে যাই।

শহর থেকে মাত্র ৫ মিনিটের নদী পথে ক্যান্টেনমেন্ট ও কলেজের পেছনের জায়গাটি প্রথমে দেখা শুরু করি আমরা। জায়গাটি ঘুরে ঘুরে দেখতে দেখতে প্রায় ২০ মিনিট অতিবাহিত হয়। এর পর আমরা অপর একটি অংশে ১০ থেকে ১৫ টি ঘর দেখতে পাই। আমরা চিন্তা করেছি সরকারী কাজের জন্য জায়গা তাই এই ঘরগুলো বাদ দিয়ে অন্যান্য খালি জায়গাগুলো সম্পর্কে রিপোর্ট করবো।কিন্তু হঠাৎ দেখতে পাই চারিদিক থেকে পাহাড়ি লোকজন লাঠি, বল্লম, দা নিয়ে আমাদের দিকে তেড়ে আসছে। এক পর্যায়ে আমার সঙ্গে থাকা কানুগো ও সার্ভেয়ার দৌড়ে পালাতে শুরু করে। তাদের অবস্থা দেখে আমিও পালাতে শুরু করি।

আমরা প্রায় আধ ঘণ্টা এই জঙ্গল থেকে ঐ জঙ্গলে দৌড়াতে থাকি। তখন আমি আমার কানুগোকে ডাকা শুরু করলে সে জঙ্গলের ভিতর থেকে আমাকে ডাক দিয়ে ইশারায় কথা বলতে নিষেধ করে। পরে আমিও তাদের সাথে জঙ্গলের ভিতরে ঢুকে পড়ি। এর পর দেখি প্রায় অর্ধ শতাধিকেরও বেশী লোকজন আমাদের দিকে ধেয়ে আসছে।সেখান থেকে আমরা আবার দৌড় দিয়ে পাহাড় থেকে লাফ দিয়ে নদীর কাছাকাছি চলে আসি। এ সময় নদীতে থাকা একটি নৌকায় আমরা উঠে বসি। নৌকায় উঠার পরও দেখতে পাই পাহাড় থেকে লাঠি ও বল্লম ও দা নিয়ে উপজাতীয়রা আমাদের দিকে তেড়ে আসছে।

তখন আমরা প্রাণ বাঁচাতে নদীতে লাফ দিয়ে সাতার কেটে কোন রকমে এখানে চলে আসি। পরে মোবাইলে আমাদের অফিসের সাথে যোগাযোগ করলে অফিসের কর্মকর্তারা আমাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসে। এতে এডিসি রেভিনিউ সামান্য আহতও হয়েছেন।

তিনি বলেন, এই এলাকায় মাত্র ১০ থেকে ১৫ টি ঘর আছে। এই ঘরে থাকলে শুধু মাত্র ২০ থেকে ৩০ জন লোক থাকবে। কিভাবে এখানে এতো লোক জড়ো হয়েছে তা আমার বোধগম্য নয়। তিনি বলেন, আমরা যে তদন্তে যাবো তা ফাঁস হয়েছে তা না হলে তাৎক্ষণিক এতো লোক এখানে জড়ো হওয়ার সম্ভব নয়।

তিনি আরো জানান, আমি অফিস থেকে যাওয়ার সময় আমি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ মোস্তফা জামান স্যারকে বলে গেছি। এছাড়া আজকে যে তদন্তে যাবো এই কথাটি গত বৃহস্পতিবার শুধুমাত্র সিএ প্রণব বাবুকে বলেছি।এছাড়া কানুগো ও সার্ভেয়ারকেও যাওয়ার আগেই বলেছি। কিন্তু কিভাবে তারা এই তথ্য আগেভাগে জানতে পারলো তা আমাদের বোধগম্য হচ্ছে না।

এ বিষয়ে সার্ভেয়ার অনুপমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই বলতে পারবো না। যা বলার স্যার বলবেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন