Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

রাঙামাটির কাউখালীর কলাবাগান ঝর্ণা হয়ে উঠতে পারে পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ

Kawkhali Tourism News pic
কাউখালী (রাঙ্গামাটি) প্রতিনিধি :
পর্যটন নগরী রাঙামাটির প্রবেশ দ্বার কাউখালী উপজেলা। চট্টগ্রামের রাউজান সীমানা পেরুলেই কাউখালীর অবস্থান। ভৌগোলিক দিক থেকে রাউজান ও রাঙ্গুনীয়ার সীমান্ত ঘেঁষা কাউখালী বেশ বৈচিত্র্যময়। এখানে বাঙ্গালী এবং পাহাড়ি মানুষের সম্প্রীতিপূর্ণ সহাবস্থান দীর্ঘদিনের। এ উপজেলার মানুষের উপার্জনের একমাত্র পথ গাছ, বাঁশ ও কৃষি। এছাড়াও রয়েছে সম্ভাবনাময় বিশাল বিশাল পর্যটন স্পট।

বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ অবসরে ছুটে চলেন বিশাল জলপ্রভাত, গিরিঝর্ণা আর সবুজে ঘেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে লীলাভূমি রাঙামাটির রূপ উপভোগ করতে। রাঙামাটির অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে শুভলং ঝর্ণা। এ ঝর্ণায় নিজেদের একটুখানি ভিজিয়ে নিতে কতইনা আয়োজন।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম-রাঙামাটির সড়কে কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া সেনা ক্যাম্প পেরুলেই কলাবাগান। মূল সড়ক থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে অন্তত পাঁচটি মনোরম প্রাকৃতিক ঝর্ণা। এখানকার ঝর্ণাগুলোর মূল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে সমতল থেকে স্তরে স্তরে অন্তত দেড় থেকে দু’শ ফুট উঁচু থেকে পানি ঝড়ে পড়ছে। প্রতিটি ঝর্ণারই রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্য। যা স্বচোক্ষে না দেখলে কারো বিশ্বাস হবে না। এ ঝর্ণাগুলো প্রচার পেলে পর্যটন নগরী রাঙামাটির প্রতি পর্যটকদের আকর্ষণ বহুগুণ বাড়িয়ে দেবে এতে কোন সন্দেহ নেই।

ঘাগড়ার কলাবাগন থেকে বয়ে চলা ছোট্ট একটি ছড়ার উপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অংসখ্য পাথরের উপর দিয়ে পায়ে হেঁটে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে করতে এগোতে হয় মূল ঝর্ণার দিকে। যেতে যেতে অসংখ্য ছোট ছোট ঝর্ণা পর্যটকদের নজর কেড়ে নেয়। দেড় কিলোমিটার হেঁটে গেলেই দৃষ্টিনন্দন প্রথম ঝর্নাটি সমহিমায় আগত ভ্রমণ পিপাশুদের স্বাগত জানাবে। এরপর আরেকটু সামনে গেলে তার থেকে আরো উঁচুতে অপর ঝর্নাটি পর্যটকদের ক্লান্তি দূর করে বিমোহিত করবে। এভাবে একের পর এক যত উঁচুতে উঠবেন ততই মুগ্ধ হতে হবে। সবশেষ আকাশচুম্বী যে ঝর্নাটি রয়েছে তার উচ্চতা এত বেশি যে কোন পর্যটক ভয়ে তার কাছে ঘেঁষতে চায় না।

অপার সম্ভাবনাময় প্রকৃতির নিজ হাতে গড়া অপরূপ দৃশ্য ও সৌন্দর্য্যরে সমারোহ উপভোগ করতে ঝর বৃষ্টি উপেক্ষা করে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দৈনিক অসংখ্য পর্যটকের পদচারণা নির্জন কলাবাগান এলাকার নিরবতাকে জাগিয়ে তোলে। রাঙামাটি পার্বত্য জেলার সবচাইতে বড় দৃষ্টিনন্দন প্রাকৃতিক এ ঝর্নাকে কাজে লাগিয়ে গড়ে উঠতে পারে বিশাল পর্যটন স্পট। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় মাত্র দেড় কিলোমিটার রাস্তার ব্যবস্থা করা গেলে গড়ে উঠতে পারে অর্থনৈতিক জোন হিসেবে, যা বদলে দেবে কাউখালীর চিত্র। পর্যটন শিল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই করতে গত সপ্তাহে রাঙামাটির জেলা প্রশাসক শামছুল আরেফীন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গেছেন।

তবে এটিকে পরিপূর্ণ পর্যটন জোন হিসেবে গড়ে তোলতে প্রধান বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক সংগঠন জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)। এ অঞ্চলটি জেএসএস প্রভাবাধীন হওয়ায় পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি মুখ্য হয়ে দাঁড়াবে এতে কোন সন্দেহ নেই। জেএসএস নেতাদের বক্তব্যে এমন ইঙ্গিতই বহন করে।

পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়ন ও পর্যটন শিল্পের বিকাশে করণীয় সম্পর্কে ২৯ জুলাই কথা হয় জনসংহতি সমিতির সহ-সভাপতি ও রাঙামাটি আসনের সাংসদ ঊষাতন তালুকদারের সাথে। তিনি সাফ জানিয়ে দিলেন, শান্তি চুক্তির পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন ব্যাতিরেকে পার্বত্য অঞ্চলে কোন উন্নয়ন কর্মকান্ড এগুতে দেয়া যায় না। তিনি আরো জানালেন, পার্বত্য অঞ্চল থেকে সেনাবাহিনী প্রত্যাহার ও পুলিশ বাহিনীকে আঞ্চলিক পরিষদে ন্যাস্ত করলে তবেই পর্যটনসহ উন্নয়ন কর্মকান্ড এগিয়ে নেয়া যেতে পারে।

তবে প্রধান বাঁধা যে জেএসএস বিষয়টি তা স্পষ্ট। এলাকাটি জেএসএস অধ্যুষিত হলেও বসে থাকবে না কাউখালীর বিরাট একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করা ইউপিডিএফও। পার্বত্য অঞ্চলে এটি একটি ভিন্ন সংগঠন হিসেবে ইউপিডিএফ’র আত্মপ্রকাশ ঘটলেও অভিন্ন দাবীতে আন্দোলন করে যাচ্ছে তারাও।

চট্টগ্রামের রাউজান থেকে বেড়াতে আসা আবু সাঈদ জানান, অপূর্ব অনেকগুলো ঝর্না উপভোগ করলাম। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় অনেক কষ্টে সেখানে যেতে হয়েছে। রাঙামাটি থেকে আসা কলেজ ছাত্রী উর্মি জানান, জায়গাটি রাঙামাটির শুভলং থেকে অনেক সুন্দর। কিন্তু খুব ভয় ভয় লাগছে, নিরাপত্তার বিষয়টি চিন্তা করলে এখানে আসতে ইচ্ছে হয় না।

হাটহাজারী থেকে বেড়াতে আসা সাহাব উদ্দিন রাজু জানালেন, রাঙামাটির অন্যতম সম্ভাবনাময় এ পর্যটন স্পটকে কাজে লাগাতে হলে সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে। তিনি জানালেন, সমতলে যদি জঙ্গী, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালিত হয় তবে পাহাড় বাদ যাবে কেন? রাষ্ট্রের উন্নয়ন কর্মকান্ড যারা বাধাগ্রস্থ করে তারা জঙ্গীদের চেয়ে কম কিসের?

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন