রাখাইনে হচ্ছে আরাকান আর্মি’র হেডকোয়াটার্স

নিউজ ডেস্ক:

মিয়ানমারের উত্তর রাখাইনে খুব শিগগিরই অস্থায়ী হেডকোয়াটার্স স্থাপন করতে যাচ্ছে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। সশস্ত্র গ্রুপটির প্রধান মেজর জেনারেল তুন মিয়াত নাইং এক ভিডিওতে এ কথা জানিয়েছেন।

মিয়ানমারের গণমাধ্যম ইরাওয়াদ্দি দাবি করছে, আরাকানের গ্রামবাসীর মধ্যে ভাষণ দেওয়া সংক্রান্ত মিয়াতের ওই ভিডিও তাদের হাতে এসেছে। আরাকানি ভাষায় দেওয়া ওই ভাষণ গত ১০ ফেব্রুয়ারি প্রচার করা হয়।

ভিডিওতে দেখা যায়, এএ প্রধান যেসব আরাকানি বিদেশে অবস্থান করছে তাদের রাখাইনে ফিরে আসার বার বার আহ্বান জানাচ্ছেন এবং তাদেরকে ওই অঞ্চলের ঐতিহাসিক টার্নিং পয়েন্টে, তার ভাষায়, অংশ নেওয়ার কথা বলছেন।

ইরাওয়াদ্দি’র দাবি, বেশ কিছু সূত্র ভিডিও’র সত্যতা নিশ্চিত করেছে। ভিডিওতে এএ প্রধান জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন, রাখাইনে সরকারি সেনাদের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধ শুধু একটি সশস্ত্র সংঘাত নয়, বরং সমস্ত আরাকানি জনগণ ও সেনাবাহিনীর মধ্যে সংগ্রাম।

ভিডিওতে মিয়াত বলেন, ‘আমি পুরোপুরিভাবে বিশ্বাস করি, আরাকানের জনগণ ও এএ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করবে। আমরা বার বার এটাও বলছি যে, মিয়ানমার সেনাবাহিনী সমগ্র আরাকানি জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে।’

পূর্বের সশস্ত্র সংগ্রামের কারণে আরাকানের চলে যাওয়া প্রবাসী বাসিন্দাদের ফেরত এসে সংগ্রামে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মিয়াত বলেন, সে যুগ চলে গেছে। আরাকান আর্মির মাঠ পর্যায়ের কমান্ডার ও সমর্থকরা আগ্রহীদের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করছেন। চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জন না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।

এসময় ভিডিওটিতে দেখা যায়, উপস্থিতদের মধ্যে কারা আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগ দিতে চান? মিয়াতের এমন প্রশ্নে প্রায় একশ’ গ্রামবাসী হাত তুলে তাদের আগ্রহের কথা জানান বলে পত্রিকাটিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে নৃতাত্ত্বিক সশস্ত্র গোষ্ঠীদের নিয়ে গবেষণা করা ইউ মং মং সোয়ে বলেন, আরাকান আর্মির যে ‘২০২০ আরাকান স্বপ্ন’ রয়েছে তার অংশ হিসেবেই উত্তর রাখাইনে এই হেডকোয়ার্টার্স স্থাপন করতে পারে।

তিনি বলেন, ‘প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এএ রাখাইনে একটি শক্ত ঘাঁটি স্থাপনের চেষ্টা করছে এবং সম্ভবত তারা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বেশ কিছু হামলা চালাবে ও ২০২০ সালের দিকে রাজনীতিতে প্রবেশ করবে।’

অপর এক রাজনীতি বিশ্লেষক কো ওয়াং অং বলেছেন, আরাকান আর্মি রাজনৈতিক ও সামরিক উভয় দিক থেকেই মাঠে তাদের স্বপ্ন যৌক্তিক ও ধারাবাহিকভাবে বাস্তবায়ন করছে।

তিনি বলছেন, এএ ও আরাকানিরা যেহেতু পারস্পারিক সহানুভূতি প্রকাশ করছে সেহেতু রাখাইন রাজ্যের সশস্ত্র সংগ্রামের বড় ধরনের রাজনৈতিক মূল্য দিতে হবে ভবিষ্যতে।

প্রসঙ্গত, এ নিয়ে চলতি মাসে এ সংক্রান্ত দুটি ভিডিও প্রচার করলো আরাকান আর্মি। এর আগে গত সপ্তাহে গ্রুপটির উপ-প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নিয়ো তুন অং একটি ভিডিও প্রকাশ করেন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: রাখাইনে হচ্ছে আরাকান আর্মি’র হেডকোয়াটার্স
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন