রাখাইনে যুদ্ধাপরাধ বন্ধ করতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে টিএনএলএ’র হুঁশিয়ারি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মির (এএ) বিরুদ্ধে অভিযান বন্ধ করার জন্য মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে সতর্ক করে দিয়েছে দি তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ)।

অভিযোগে বলা হয়েছে, সরকারি বাহিনী ওই অঞ্চলের আরাকানি বেসামরিক লোকজনকে টার্গেট করছে। এর ফলে তারা এএ’র পক্ষ নিয়ে যুদ্ধ করতে অন্য জাতিগত গ্রুপগুলোকে উৎসাহিত করতে পারে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে।

মিয়ানমার সেনাবাহিনী (তাতামাদাও) সাম্প্রতিক সময়ে রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মির সাথে তীব্র লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। এএ ও টিএনএলএ উভয়ই জাতিগত সশস্ত্র গ্রুপগুলোর জোট নর্দার্ অ্যালায়েন্সের সদস্য।

তাতমাদাওকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে টিএনএলএ জানিয়েছে, তারা যদি এই এলাকায় তাদের সামরিক অভিযানের সমাপ্তি না ঘটায় তবে নর্দার্ন অ্যালায়েন্সভুক্ত গ্রুপগুলো এএ’র পক্ষ নেবে। এর ফলে দেশের পরিণতি ভালো হবে না। টিএনএলএর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তার ফোন কাউ মঙ্গলবার ইরাবতীকে এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমরা আরাকানে যুদ্ধাপরাধ বন্ধ করার জন্য মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা চাই, তারা বেসমারিক নাগরিকদের ওপর গুলিবর্ষণ বন্ধ করুক।

সরকারের ন্যাশনাল রিকনসিলিয়েশন অ্যান্ড পিস সেন্টার (এনআরপিসি) নেপিদো শান্তি আলোচনায় যোগ দিতে ফেডারেল পলিটিক্যাল নেগোশিয়েশন অ্যান্ড কনসালটেটিভ কমিটির (এফপিএনসিসি) সদস্যদের রাজধানী নেপিদোতে আমন্ত্রণ জানিয়েছ। নর্দার্ন অ্যালায়েন্সও এফপিএনসিসির সদস্য। তাদের চার সদস্য এতে যোগ দেবে বলে জানিয়েছে।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তার ফোন বলেন, এটি একটি রাজনৈতিক সঙ্ঘাত। আমাদের রাজনৈতিক সংলাপের মাধ্যমে এর সমাধান করতে হবে। এ কারণে আমরা নেপিদোর সভায় যোগ দেব। আমরা প্রথমে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করব। আমরা দেখতে চাই, তা সফল হয় কিনা। যদি না হয়, তবে যা করার তাই করব।

তিনি বলেন, এএ’র মিত্র হিসেবে টিএনএলএ দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না আর বসে বসে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যাকাণ্ড ও রাখাইনের জনগণের ওপর হামলা প্রত্যক্ষ করতে পারে না।

গত কয়েক দিনে লড়াই উত্তর রাখাইনের মরাক-উ শহরে পৌঁছে গেছে।

স্থানীয় সূত্রগুলোর খবরে বলা হয়, সোমবার রাতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এক আক্রমণে একটি ছেলেসহ বেসামরিক নাগরিকরা আহত হয়েছে। মঙ্গলবার সকালেও ওই শহরে যুদ্ধ চলছিল। শহরের বাইরে এএ’র অবস্থানে হামলা চালাতে মিয়ানমার সামরিক বাহিন জঙ্গিবিমানও ব্যবহার করছে বলে জানা গেছে।

বেসামরিক লোকজন ও ঐতিহাসিক প্যাগোডাগুলোকে টার্গেট করার জন্য এএ, টিএনএলএ ও মিয়ামনার ডেক্রোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি মঙ্গলবার এক যৌথ বিবৃতিতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে অভিযুক্ত করেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, মিয়ানমার সেনাবাহিনী চলমান যুদ্ধে জঙ্গিবিমান ও গোলন্দাজ বাহিনী ব্যবহার করছে। তারা বেসামরিক নাগরিকদের টার্গেট করে রাইফেল ব্যবহার করছে, ঐতিহাসিক, ঐতিহ্যবাহী প্যাগোডাগুলোকে ধ্বংস করছে। তাদের এসব কাজ যুদ্ধাপরাধ।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: রাখাইনে যুদ্ধাপরাধ বন্ধ করতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে টিএনএলএ’র হুঁশিয়ারি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন