রাখাইনের ৭০০০ মানুষকে ভেরিফিকেশন কার্ড দিয়েছে মিয়ানমার

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে গত ১ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া জাতীয় যাচাইকরণ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এ পর্যন্ত ৭ হাজারের বেশি মানুষকে ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন কার্ড (এনভিসি) দেওয়া হয়েছে। রবিবার (২৯ অক্টোবর) মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ খবরটি নিশ্চিত করেছে।

সিনহুয়া নিউজ এজেন্সিকে উদ্ধৃত করে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বাধীন উপদেষ্টা কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী এ যাচাইকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়। রাখাইনের অভিবাসন ও জনসংখ্যাবিষয়ক বিভাগের পরিচালক উ অং মিন জানান, প্রদেশটির যেসব এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে সেখানে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি ব্যবহার করে এ যাচাইকরণের কাজ চলছে।

১৯৮২ সালের বিতর্কিত বর্ণবাদী নাগরিকত্ব আইনে মিয়ানমারের প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গার নাগরিকত্ব অস্বীকার করা হয়। এতে মিয়ানমারে বসবাসকারীদের Citizen, Associate এবং Naturalized পর্যায়ে ভাগ করা হয়েছে। এমনকি দেশটির সরকার তাদের প্রাচীন নৃগোষ্ঠী হিসেবেও স্বীকৃতি দেয়নি। ১৮২৩ সালের পরে আগতদের Associate আর ১৯৮২ সালে নতুনভাবে দরখাস্তকারীদের Naturalized বলে আখ্যা দেওয়া হয়। ওই আইনের ৪ নম্বর প্রভিশনে আরও শর্ত দেওয়া হয়, কোনও জাতিগোষ্ঠী রাষ্ট্রের নাগরিক কি না, তা আইন-আদালত নয়; নির্ধারণ করবে সরকারের নীতি-নির্ধারণী সংস্থা ‘কাউন্সিল অব স্টেট’। এ আইনের কারণে রোহিঙ্গারা ভাসমান জনগোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত হয়।

২০১২ সালে রোহিঙ্গাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হোয়াইট কার্ড দেওয়া হয়েছিল। ২০১৫ সালে গণতান্ত্রিক সংস্কার প্রক্রিয়ার মধ্যেই তা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত জানানো হয়। সে সময় প্রেসিডেন্ট দফতরের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ওই কার্ড মার্চ থেকে আপনা আপনিই বাতিল হয়ে যাবে। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম মিয়ানমার টাইমসের সেই সময়ের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী পাঁচ লাখ রোহিঙ্গার ওই কার্ড ছিল।

সে সময় নাগরিকত্ব না থাকা ব্যক্তিদের এনভিসি (ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন কার্ড) করার প্রস্তাব দেয় প্রেসিডেন্ট থেইন সেইনের দফতর। তবে ফ্রন্টিয়ার মিয়ানমারের সেই সময়ের এক প্রতিবেদন বলছে, কেবল ৩৫ হাজার ৯৪২ জন ওই আবেদন করেন। আর গোটা রাখাইন রাজ্যে নাগরিকত্বহীন ১০ লাখ মানুষের মধ্যে ওই কার্ড দেওয়া হয় সাত হাজার ৫৪৮ জনকে।

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন