রবিবার রাঙ্গামাটিতে একযোগে দুই লক্ষ তাল বীজ রোপন
রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি:
সারা দেশের ন্যায় রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাঙ্গামাটির ১০উপজেলায় একযোগে প্রায় দুই লক্ষ তাল বীজ রোপন করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান।
শনিবার সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত তাল বীজ সরবরাহ সংক্রান্ত সভায় সাংবাদিকদের তিনি এসব তথ্য জানান। এসময় সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক প্রকাশ কান্তি চৌধুরী, মোহাম্মদ সাহেদ চৌধুরী, রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান অরুন কান্তি চাকমাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্বেচ্ছাসেবী প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, ভবিষ্যতে বজ্রপাতের আঘাত প্রতিরোধের লক্ষ্যে এসব তাল বীজ রোপন করা হচ্ছে। ইতিমেধ্যে রাঙ্গামাটির সকল উপজেলার ইউনিয়নে পর্যাপ্ত তাল বীজ সরবরাহ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন,রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের দুইপাশে ও বিভিন্ন উপজেলার সড়ক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং বসত ঘরের প্রাঙ্গণে সারিবদ্ধ ভাবে তাল বীজ রোপন করা হবে। তাল বীজ রোপনের জন্য বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ছাত্র-ছাত্রী, স্বেচ্ছাসেবকসহ ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভা কাউন্সিলদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
সভায় তাল গাছের বিভিন্ন উপকারিতা ও রোপনের পদ্ধতি বিষয়ে জানানো হয়েছে, তাল বীজ রোপনের বেলায় একটি গাছ থেকে আরেকটি গাছের দুরত্ব প্রায় ১০ ফুট থেকে ১২ ফুটের মধ্যে লাগাতে হবে। প্রতিটি বীজ বা গাছ রোপনের জন্য ২ ফুট মাপের গর্ত তৈরী করতে হবে এবং প্রতিটি গত ১০ থেকে ১৫ কেজি গোবর এবং ২৫০ গ্রাম করে টিএসপি ও পটাস সার মিলে মোট ৫শ গ্রাম মাটির সাথে মিশিয়ে ভরাট করে দিতে হবে। বিশেষ করে শরৎ কালে তাল বীজ রোপন করা গেলে গাছ ভালভাবে বড় হতে পারে।
তালগাছের সুচালো অগ্রভাগ বজ্রপাত নিরোধক, টিনের বা সেমিপাকা বাড়ি তৈরীতে তালগাছের কান্ডের ব্যবহার করা হয়। বয়স্ক তালগাছের কান্ডের টিম্বারভ্যালু খুব বেশী, কাঁচা ঘর তৈরীতে খড়ের বিকল্প হিসেবে তালপাতার ছাউনী ব্যবহার করা হয়। তালগাছের কান্ড দিয়ে ডিঙ্গী নৌকা তৈরী করা হয়, তালের রস থেকে গুড় ও তালমিশ্রী তৈরী, কচি তাল সুস্বাধু ও ঔষধীগুন সম্পন্ন সৌসুমী ফল এই তাল। পাকা তাল থেকে বিভিন্ন ধরনের পিঠা পায়েস ও ঐতিহ্যবাহী খাবার তৈরী করা যেতে পারে।
তালের বীজের আঁটির ভিতরে নরম শাঁস জনপ্রিয় ও পুষ্টিকর খাবার, তালপাতা ও তালের আঁশ ব্যবহার করে ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্প ও কুটির শিল্পের বিকাশের মাধ্যমে ব্যাপক কর্মসংস্থান তৈরীর মাধ্যমে এলাকার কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা যেতে পারে এবং তালগাছের মুল মাটির ক্ষয়রোধক ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় তাল গাছ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।