যক্ষ্মা রোগ নিয়ন্ত্রণে শিক্ষক সমাজের ভূমিকা অনস্বীকার্য
নিজস্ব প্রতিবেদক, খাগড়াছড়ি:
যক্ষ্মা রোগের লক্ষণ ও এর চিকিৎসা সম্পর্কে শিক্ষক সমাজ অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারে। শিক্ষকরা যে কোন পরিবেশনায় যক্ষ্মারোগ প্রতিরোধ সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করে বক্তব্য উপস্থাপন করলে মানুষের মধ্যে দ্রুত সচেতনতা ছড়িয়ে পড়ার মধ্যে দিয়ে যক্ষ্মা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ জাতীয় যক্ষা নিরোধ সমিতি (নাটাব) খাগড়াছড়ি জেলা শাখার উদ্যোগে প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে “যক্ষ্মা রোগ নিয়ন্ত্রণে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের ভূমিকা র্শীষক” আয়োজিত এডভোকেসী সভায় আলোচকরা এসব কথা বলেন।
সভার প্রধান আলোচক খাগড়াছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লিটন চাকমা বলেন, শিক্ষকরা আমাদের সমাজের একটি বৃহৎ অংশ। যক্ষ্মা ছোঁয়াচে হলেও সচেতনতার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে আনতে শিক্ষকজ সমাজের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
তিনি যক্ষ্মারোগ বিষয়ে আলোকপাত করে বলেন, সাধারণত বদ্ধ, স্যাঁত স্যাঁতে, ঘনবসতিপূর্ণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝেই যক্ষ্মা বা টিবি রোগের প্রকোপ বেশি দেখা যায়। যক্ষ্মা বা টিবির জীবাণুর সংক্রামণ বৈশিষ্ট্যের কারণেই এমনটি হয়। এ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে স্বাস্থ্য সচেতনতার মাত্রা কম থাকায় এ রোগের বিভিন্ন লক্ষণ বা উপসর্গ সর্ম্পকে আক্রান্ত জনগোষ্ঠীর সিংহভাগেরই তেমন ভালো কোনো ধারণা নেই। মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবার কিউলোসিস নামের এক ধরনের জীবাণু থেকে এ রোগ ছড়ায়। আক্রান্ত রোগীর কফ থেকে এ রোগের জীবাণু একজনের দেহ থেকে অন্যজনের শরীরে প্রবেশ করে। এ রোগের কোন নির্দিষ্ট সুপ্ত কাল নেই। যেসব রোগী ৩ সপ্তাহের বেশি জ্বরে ভোগে তাদের ৩৩ শতাংশ যক্ষ্মায় আক্রান্ত হওয়ায় আশঙ্কা থাকে। যাদের কাছ থেকে যক্ষ্মা রোগ ছড়াতে পারে তাদের বলা হয় ‘ওপেন কেস’। এদের কফ থেকে সব সময় জীবাণু বাসাতে ছড়িয়ে পড়ে। তাই এদের সাথে চলাফেরা করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। রোগীর হাঁচি কাশির সাথে সাধারণত রোগ জীবাণু বাইরে আসে। রোগীর ব্যবহার করা কোনো জিনিস যেমন থালা বাটি গ্লাস ও পরিধেয় বস্ত্রাদির মধ্যে দিয়ে এ রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা নেই বললেই চলে। বুকের মধ্যে রক্তের ইএসআর, কফ পরীক্ষা এবং টিউবার কিউলিন বা মনটেঙ্ টেস্ট করে যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত করা হয়। বিসিজি ভ্যাকসিন ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে যক্ষ্মা প্রতিরোধ করতে পারে। তিনি শিক্ষক সমাজকে লেখা পড়ার ফাঁকে ফাঁকে যক্ষ্মা বিষয়ে জনগণকে সচেতন করার জন্য আহবান জানান।
জাতীয় যক্ষা নিরোধ সমিতি (নাটাব) খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জীতেন বড়ুয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ এ্যাডভোকেসী সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিসেস শ্রীলা তালুকদার।এসময় বক্তব্য রাখেন নাটাব এর সোশ্যাল মোবাইলাইজার মো. হেলাল, শিক্ষক শম্বু মিত্র বড়ুয়া, কাঞ্চন চৌধুরী, রতন দে, সুকুমার চাকমা প্রমুখ। কর্মশালায় জেলার ৩০ জন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক অংশ গ্রহণ করে।