মৎস্য প্রকল্পের লবণ পানিতে তলিয়ে গেছে চাষের জমি

chakaria 2-2-17,,
চকরিয়া প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের চকরিয়ায় ব্যক্তি মালিকানাধীন মৎস্য প্রকল্পের জন্য সামুদ্রিক পানি ঢুকানোর কারণে বর্তমানে কোনাখালী ইউনিয়নের বেশির ভাগ আবাদি জমি লবণ পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে ইউনিয়নের অন্তত আড়াইশত একর জমিতে চলতি মৌসুমে বোরো চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মরংঘোনা এলাকার বাঘগুজারা সেতুর পাশে মর্তুজা মৎস্য খামার নামের একটি পদ্ধতির মৎস্য প্রকল্প রয়েছে। প্রকল্পটির মূল মালিক পেকুয়া উপজেলার রাজানী পাড়া গ্রামের সুলতান মাহমুদ বাচ্ছু। মূলত তাঁর কাছ থেকে ইজারা নিয়ে ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা জালাল উদ্দিন ভেট্টুর ছেলে আজিজুর রহমান কয়েক বছর ধরে মৎস্য চাষ করছেন। প্রথম দিকে তিনি ওই মৎস্য প্রকল্পে সাদা জাতের মৎস্য চাষ করলেও এবছর অধিক মুনাফার আশায় লোনা পানির মৎস্য চাষ করছেন।

কৃষকরা অভিযোগ করেছেন, বাঘগুজারা সেতুর পাশে হারবাইঙ্গাঘোনাস্থ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অরিক্ষত স্লুইচ গেইট খুলে অভিযুক্ত ইজারাদার আজিজুর রহমান তাঁর মৎস্য প্রকল্পে সামুদ্রিক লবণ পানি ঢুকাচ্ছেন। এক মাস ধরে এভাবে লবণ পানি ঢুকানোর কারণে বর্তমানে ইউনিয়নের বেশিরভাগ আবাদি জমি লবণ পানিতে তলিয়ে গেছে। ভুক্তভোগী কৃষকদের অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের গাফলতির সুযোগে তাদের অরক্ষিত স্লুইচ গেইট দিয়ে লবণ পানি ঢুকিয়ে ওই ইজারদার স্থানীয় শত শত কৃষকের সর্বনাশ করছেন।

কোনাখালী ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার ছরওয়ার আলম, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মনির উদ্দিন, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার জহির উদ্দিন, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আবুল কালাম ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী মেম্বার আছিয়া বেগম বলেন, লবণ পানি ঢুকানোর কারণে এলাকার বোরো চাষ হুমকিতে পড়েছে। বর্তমানে ইউনিয়নের বেশির ভাগ এলাকার আবাদি জমি লবণ পানিতে তলিয়ে গেছে। পরিষদের পক্ষ থেকে ইজারাদার আজিজুর রহমানকে এভাবে লবণ পানি না ঢুকানোর জন্য ইতোমধ্যে কয়েকবার বারণ করা হয়েছে। তারপরও অভিযুক্ত ইজারাদার লবণ পানি ঢুকিয়ে স্থানীয় কৃষকদের সর্বনাশ করছেন।

কোনাখালী ইউপি চেয়ারম্যান দিদারুল হক সিকদার বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্লুইচ গেইট খুলে প্রকাশ্যে সামুদ্রিক লবণ পানি ঢুকিয়ে মৎস্য চাষ করার কারণে কৃষকরা বোরা চাষ নিয়ে বিপাকে পড়েছে। ঘটনাটি স্থানীয় কৃষকরা আমাকে অবহিত করেন। এরপর পরিষদের কয়েকজন মেম্বারকে ঘটনাটি দেখে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলি। তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে ইউপি মেম্বাররা আমাকে জানিয়েছেন অভিযুক্ত ইজারাদার তাদের কথা অমান্য করে দিব্যি লবণ পানি ঢুকিয়ে যাচ্ছে।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাহেদুল ইসলাম বলেন, লবণ পানি ঢুকিয়ে একজন মৎস্য চাষ করে সুফল পাবেন। আর তার কারণে এলাকার কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হবেন, তা কোনভাবে মেনে নেয়া যাবে না। ঘটনার বিষয়ে স্থানীয়ভাবে লিখিত অভিযোগ পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন