এটাই ছিল আমার জীবনের শেষ নির্বাচন- মেয়র মো. শামছুল হক
গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত মাটিরাঙ্গা পৌরসভার তৃতীয় নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীকে পরাজিত করে বিএনপির দুর্গ হিসেবে পরিচিত মাটিরাঙ্গা পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন মো. শামসুল হক। তিনি ১৯৫৯ সালের ১২ ডিসেম্বর কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন। জাসদ ছাত্রলীগের মাধ্যমে রাজনীতির হাতে খড়ি। এরপর জাতীয় পার্টি ঘুরে ২০০১ সালে আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে নাম লেখান। দুইবার ইউনিয়ন পরিষদ ও দুইবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এর মধ্যেই জয় লাভ করেছেন। তবে পরাজয়ের স্বাদও পেয়েছেন। ২০০৩ সাল থেকেই মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। মাটিরাঙ্গা পৌরসভাকে নিয়ে নিজস্ব ভাবনার কথা পার্বত্যনিউজ‘র সিনিয়র প্রতিবেদক মুজিবুর রহমান ভুইয়া‘র কাছে জানান নবনির্বাচিত পৌর মেয়র শামসুল হক।
সদ্য সমাপ্ত নির্বাচন ও জয় পাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার এ বিজয় মাটিরাঙ্গার পৌর নাগরিকদের প্রত্যাশার ফল। আমাকে তারা যে মর্যাদা দিয়েছে আমি তা যেকোন মুল্যে রক্ষা করবো। আমাকে প্রত্যাশার চেয়েও অনেক বেশী দিয়েছে বঞ্চিত আর অবহেলিত মাটিরাঙ্গাবাসী। আর এ জন্য আমার দায়ও বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। সাধারন মানুষের প্রত্যাশা পূরণের অঙ্গীকারের কথা জানিয়ে বললেন, মাটিরাঙ্গা পৌরসভাকে আধুনিক শহর হিসেবে গড়তে চাই। যেন মাটিরাঙ্গা পৌরবাসী এ শহরকে নিয়ে গর্ব করতে পারে।
তিনি বলেন, মাটিরাঙ্গা পৌরসভার উন্নয়ন বঞ্চিত মানুষ আমাকে তাদের মূল্যবান ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন এ পৌরসভার উন্নয়নের জন্য। আমি সাধারন মানুষের স্বপ্ন পুরণে আন্তরিকতার সাথেই কাজ করবো। আমি রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচিত হলেও সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে মাটিরাঙ্গা পৌরভবন।
মাটিরাঙ্গা পৌরসভার তৃতীয় নির্বাচনে জনরায়ে পৌর পিতার আসন পাওয়া মো: শামছুল হক বলেন, ১৩ বছর আগে ২০০২ সালে মাটিরাঙ্গা পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হলেও কাঙ্খিত উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এ শহরে। নাগরিকদের পৌরসভা থেকে যে সুযোগ সুবিধা পাওয়ার কথা, তার সবকিছু থেকেই তারা বঞ্চিত।
উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে তিনি বলেন, সব মহলের মতামত নিয়ে মাষ্টার প্ল্যান তৈরী করেই মাটিরাঙ্গা শহরকে আধুনিক শহরে রূপান্তরের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এখানে বাস্তবভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। তবেই কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন সম্ভব।
দলীয় প্রতীকে প্রথম নির্বাচনে অংশ নেয়া তার রাজনৈতিক জীবনে অনেক বড় পাওয়া উল্লেখ করে তিনি বলেন, এতোদিন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্যরা দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। আর এখন তৃনমুলের প্রার্থীরা সেই প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। এটি সত্যিই আমার জন্য গর্ব করার মতো।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি আর সংসদ সদস্যদের মধ্যে দায়বদ্ধতা সম্পর্কে তিনি বলেন, নি:সন্দেহে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দায়বদ্ধতা আর কাজ করার সুযোগ দুটোই বেশী। সংসদ সদস্যরা চাইলেও তৃনমুল জনগনের কাছাকাছি গিয়ে কাজ করতে পারেন না। যা স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধিরা খুব সহজেই করতে পারেন।
ভবিষ্যত নির্বাচন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হতে পারে এটাই আমার শেষ নির্বাচন। আর তাই আমি পুরো সময়টা আমাকে যারা সম্মানিত করেছে তাদের কল্যাণে উৎসর্গ করতে চাই। যেন আমাকে সারাজীবন এখনকার বঞ্চিত, অবহেলিত মানুষগুলো স্মরণে রাখে।